ছাগল

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২০:৫২, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)

ছাগল  বাংলাদেশের অতি পরিচিত গৃহপালিত পশু। এটি স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বর্গ Ungulata-এর Capra গণের সদস্য। ভারত উপমহাদেশে প্রায় ৩০০ জাতের ছাগল পালন করা হয়। সারা পৃথিবীতে ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হলেও উষ্ণমন্ডলেই অধিকাংশ জাতের ছাগল বাস করে। বাংলাদেশে সর্বমোট ছাগলের সংখ্যা প্রায় ৩০৩.৩ লক্ষ। এর ৯০ শতাংশই বাংলার কালো ছাগল (Black Bengal goat); বাকিগুলি যমুনাপারি ও তাদের সংকর। শতকরা ৯০ ভাগের বেশি ছাগল গ্রামের লোকেরাই পোষে। মাংস, দুধ ও চামড়া উৎপাদনে ছাগলের স্থান দ্বিতীয় এবং বাংলাদেশের পশুসম্পদ খাতে এগুলির অংশভাগ যথাক্রমে ২৮, ২৩ ও ২৯ শতাংশ।

বাংলার কালো ছাগল বাংলাদেশ ও উত্তর-পূর্ব ভারতের (আসাম ও পশ্চিমবঙ্গ) সর্বত্র ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে আছে। কালোই প্রধান রং, তবে বাদামি, ধূসর আর সাদাও আছে। লোম খাটো, নরম ও চকচকে। শিরদাঁড়া ঋজু, পা খাটো, কান মাঝারি লম্বা থেকে ছোট (১১-১৪ সেমি) এবং পেছনের দিকে ক্রমাগত সরু। ছাগ ও ছাগীর শিং (৫.৮-১১.৫ সেমি) আছে আর সেগুলি খাড়া বা কিছুটা পশ্চাৎমুখী। উভয়েরই মাঝে মধ্যে দাড়ি দেখা যায়। প্রাপ্তবয়স্ক ছাগলের ঘাড়ের কাছে উচ্চতা ৪৫-৫০ সেমি। শরীর ছোট হওয়ায় ছাগ ও ছাগীর ওজন যথাক্রমে ১৬-১৮ কেজি ও ১২-১৪ কেজি।

ছাগল

অভিযোজন, প্রজনন ও বংশবৃদ্ধির ক্ষমতা, সুস্বাদু মাংস এবং উৎকৃষ্ট চামড়ার জন্য বাংলার কালো ছাগলের গুরুত্ব রয়েছে। আঠারো ও উনিশ শতকে ছাগলের চামড়া ইউরোপ, আমেরিকায় রপ্তানি হতো। এর চামড়া দিয়ে জামা ও ব্যাগ বানানো হতো। এগুলি তাড়াতাড়ি বাড়ে ও প্রায় ১২ মাস বয়সে প্রথম বাচ্চা প্রসব করে এবং বছরে দুবার বা দুবছরে তিন বার বাচ্চা দেয়।  এদের চামড়ার মান অত্যন্ত উন্নত এবং দেশের ও বিদেশের বাজারে চাহিদা যথেষ্ট। বাংলাদেশে অনিয়মিত খাদ্যযোগান সত্ত্বেও ছাগল ভালই টিকে আছে। পতিত জমি, শস্যক্ষেতের আল, পথপাশ ও বাঁধ এদের চারণক্ষেত্র ও আহার্যের যোগানদার। ঘাস, গুল্ম ও নানা ধরনের পাতা– যেগুলির অন্যতর তেমন কোনো ব্যবহার নেই– ছাগলেরা সদ্ব্যবহার করে। সম্পূরক খাবার না দিয়ে বা সামান্য পরিমাণ খাবার দিয়ে এদের সহজেই পোষা যায়। আমাদের দেশে নারী ও শিশুরাই অধিকাংশ ছাগল পোষে। উৎপাদন খরচও খুব কম।  [কাজী এম এমদাদুল হক]