কোরাস
কোরাস বৃন্দগান; অনেক শিল্পী একত্রে যে গান গায় তারই নাম কোরাস বা বৃন্দগান। প্রাচীন গ্রিসে ধর্মীয় উৎসব-অনুষ্ঠানে অনেকে একসঙ্গে নৃত্যগীত পরিবেশন করতো, গ্রিক ভাষায় যাকে বলা হতো ‘খোরস্’; এ থেকেই ‘কোরাস’ শব্দটি এসেছে। পরবর্তীকালে খ্রিস্টান প্রার্থনাসঙ্গীত এবং ক্রমে নানা ধরনের গান, গ্রিক নাটক তথা ইউরোপীয় নাটকে ব্যাপকভাবে কোরাস শব্দটি ব্যবহূত হতে থাকে।
প্রাচীন যুগে ভারতবর্ষেও অনেকটা এ ধরনের গান প্রচলিত ছিল। বৈদিক যুগে মুনি-ঋষিরা একসঙ্গে সামগান করতেন। রাজদরবারে রাজার স্তূতি প্রসঙ্গেও এরূপ গান গাওয়া হতো। আধুনিককালে পাশ্চাত্য কোরাসের অনুকরণে বাংলায় একপ্রকার সম্মেলক গান প্রচলিত হয়, যা বৃন্দগীত বা বৃন্দগান নামে পরিচিত।
নারী-পুরুষভেদে পৃথক পৃথক কোরাসদল গঠিত হতে পারে, আবার সম্মিলিতভাবেও হতে পারে। সম্মিলিতভাবে গঠিত কোরাসদলকে বলে মিশ্রকণ্ঠ কোরাস। দুটি সম্পূর্ণ কোরাস যখন একত্রে প্রযুক্ত হয় তখন তাকে বলা হয় ডাবল কোরাস।
বাংলাদেশে প্রধানত দেশাত্মবোধক গানের ক্ষেত্রেই কোরাস বা বৃন্দগানের বিশেষ প্রয়োগ দেখা যায়। বৃন্দগানকে গায়ক ও সহযোগী যন্ত্রবাদকদের সংখ্যা অনুযায়ী চার শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে, যথা উত্তমবৃন্দ, মধ্যমবৃন্দ, কনিষ্ঠবৃন্দ এবং কোলাহল। বৃন্দগানের আবেদনকে হূদয়গ্রাহী করার জন্য মেলোডির পাশাপাশি হারমনি সুরও ব্যবহূত হয়। [মোবারক হোসেন খান]