জগদীশ তর্কালঙ্কার
জগদীশ তর্কালঙ্কার (১৬শ-১৭শ শতক) নৈয়ায়িক, সংস্কৃত পন্ডিত। পশ্চিমবঙ্গের নবদ্বীপে কাশ্যপগোত্রীয় যজুর্বেদীয় ব্রাহ্মণ বংশে তাঁর জন্ম। তাঁদের আদি নিবাস ছিল শ্রীহট্টে। তাঁর পিতা যাদবচন্দ্র বিদ্যাবাগীশ ছিলেন নবদ্বীপের একজন প্রধান নৈয়ায়িক। চৈতন্যদেবের শ্বশুর সনাতন মিশ্র ছিলেন জগদীশের প্রপিতামহ। জগদীশ ভবানন্দ সিদ্ধান্তবাগীশের চতুষ্পাঠীতে ন্যায়শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন এবং তাতে ব্যুৎপন্ন হয়ে ‘তর্কালঙ্কার’ উপাধি প্রাপ্ত হন।
জগদীশের পেশা ছিল অধ্যাপনা। তিনি ময়ূখ নামে রঘুনাথ শিরোমণির তত্ত্বচিন্তামণিদীধিতির টীকা রচনা করে সমগ্র ভারতে খ্যাতি লাভ করেন। এটি চার খন্ডে রচিত প্রত্যক্ষময়ূখ, অনুমানময়ূখ, উপমানময়ূখ ও শব্দময়ূখ।
শিরোমণির দীধিতির ওপরও জগদীশের টীকা আবিষ্কৃত হয়েছে, যেমন অনুমানদীধিতিটীকা, প্রত্যক্ষদীধিতিটীকা ও লীলাবতীদীধিতিটীকা। চৈতন্যদেবের আন্দোলনের ফলে শূদ্ররা শাস্ত্রালোচনার অধিকার পেলে জগদীশ তাদের শাস্ত্রজ্ঞান দান করেন।
জগদীশের মৌলিক গ্রন্থ শব্দশক্তিপ্রকাশিকা এক সময় বাংলার প্রত্যেক চতুষ্পাঠীতে পড়ানো হতো। তাঁর রচিত অন্য দুটি মৌলিক গ্রন্থ হচ্ছে তর্কামৃত ও ন্যায়দর্শন। তিনি পান্ডিত্যের পুরস্কারস্বরূপ তৎকালীন সর্বোচ্চ সম্মান ‘জগদ্গুরু’ উপাধি লাভ করেন। [কানাইলাল রায়]