দৌলতখান উপজেলা
দৌলতখান উপজেলা (ভোলা জেলা) আয়তন: ৩১৬.৯৯ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৩২´ থেকে ২২°৪৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৪০´ থেকে ৯০°৫৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভোলা সদর ও লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা, দক্ষিণে বোরহানউদ্দিন ও তজুমদ্দিন উপজেলা, পূর্বে রামগতি উপজেলা, পশ্চিমে ভোলা সদর উপজেলা।
জনসংখ্যা ১৭৩২৫৩; পুরুষ ৯০৬৭০, মহিলা ৮২৫৮৩। মুসলিম ১৬৮৮২৩, হিন্দু ৪৪০১ এবং অন্যান্য ২৯।
জলাশয় প্রধান নদী: মেঘনা।
প্রশাসন থানা গঠিত হয় ১৮৭২ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১ আগস্ট ১৯৮৩ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ৯ | ৪৭ | ২৭ | ৩০৫৪০ | ১৪২৭১৩ | ৫৪৭ | ৪০.৬ | ৩৬.৫ |
পৌরসভা | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |||
২.৬ | ৯ | ৯ | ১৪৪০১ | ৫৫৩৯ | ৪৬.১০ |
উপজেলা শহর | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||||
৭.৪৯ | ১ | ১৬১৩৯ | ২১৫৫ | ৩৫.৫০ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন(একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার(%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
উত্তর জয়নগর ৭৬ | ৭২৫৫ | ১৫২১০ | ১৩৩৪৮ | ৪১.৪০ | ||||
চর খলিফা ১৯ | ৪৩৫৩ | ১৪২৯৭ | ১৪১৬৪ | ৩৩.৪৬ | ||||
চরপাতা ২৮ | ৫৬৪১ | ১১৩১৯ | ১১২৩৪ | ৩৫.২৪ | ||||
দক্ষিণ জয়নগর ৮৫ | ৫০৭৩ | ১০৪৯৫ | ৯৪১২ | ৩৭.৬৭ | ||||
ভবানীপুর ১৬ | ৪৩৩৯ | ৬২৫৩ | ৫৭২৭ | ২৮.৪০ | ||||
মদনপুর ৪৭ | ১৩৩৭১ | ২৩১৮ | ১৬৩৫ | ৩২.২৩ | ||||
মেদুয়া ৫৭ | ১৪৩২৯ | ৫৬৭৩ | ৪৪৫১ | ৩৮.৯৮ | ||||
সৈয়দপুর ৯৫ | ৬৪৬৭ | ১৬২৬৩ | ১৪৬৯৪ | ৩৭.৪০ | ||||
হাজিপুর ৩৮ | ১০৬৫১ | ১২৮১ | ১০৭৮ | ৩৬.৯৭ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ চরপাতা দায়রা জামে মসজিদ (অষ্টাদশ শতাব্দী)।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালে পাকবাহিনী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক লুণ্ঠন, গণহত্যা ও অগ্নিসংযোগ চালায়। পাকবাহিনী তৎকালীন সার্কেল অফিসার আবদুল হামিদ ও তাঁর স্ত্রীকে তাদের সন্তানদের সামনে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩১১, মন্দির ১০।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৭.৩%; পুরুষ ৩৯%, মহিলা ৩৫.৪%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯৯, কিন্ডার গার্টেন ৩, মাদ্রাসা ২৮। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: দৌলতখান আবু আবদুল্লা কলেজ (১৯৮৩), হালিমা খাতুন গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ (১৯৯৩), দৌলতখান সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), দৌলতখান সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৮), হাজিপুর সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯১২)।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী মাসিক: শ্যামলী (অবলুপ্ত)।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১২, ক্লাব ৪১, সিনেমা হল ৪, সাংস্কৃতিক সংগঠন ৪, নাট্যদল ১, খেলার মাঠ ৫০।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৬.৪৩%, অকৃষি শ্রমিক ৪.৯১%, শিল্প ০.৬৭%, ব্যবসা ১৬.৮২%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৩৩%, চাকরি ৬.৫৮%, নির্মাণ ২.৭২%, ধর্মীয় সেবা ০.৩১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৬০% এবং অন্যান্য ৭.৬৩%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৪৪.৭৭%, ভূমিহীন ৫৫.২৩%। শহরে ২১.৩৫% এবং গ্রামে ৪৯.৫৭% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, পান, গম, মিষ্টি আলু, ডাল, সরিষা, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, তিসি।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, তাল, নারিকেল, সুপারি, তরমুজ।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৪৭, গবাদিপশু ৫৫, হাঁস-মুরগি ৭১।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১০৫.১৭ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৪.১৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৫৪.০২ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা বরফকল, ওয়েল্ডিং কারখানা।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, মৃৎশিল্প, লৌহশিল্প, তাঁতশিল্প, কাঠের কাজ, বাঁশের কাজ।
হাটবাজার ও মেলা দৌলতখান হাট, খায়ের হাট, বাংলা বাজার, চালতাতলীর হাট, মিয়ার হাট, হাওলাদারের হাট, কাজীর হাট উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য মাছ, পান, সুপারি, নারিকেল, শাকসবজি।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৬.২৭% (শহরে ১৭.৬০% এবং গ্রামে ১৬%) পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৭২.৮৫%, ট্যাপ ০.১২%, পুকুর ২.০৬% এবং অন্যান্য ২৪.৯৭%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৩৮.৯২% (শহরে ৪২.৭৮% এবং গ্রামে ৩৮.১৩%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৩.৬০% (শহরে ৫১.০৯% এবং গ্রামে ৫৪.১১%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৭.৪৮% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৯, কমিউনিটি ক্লিনিক ১৭।
এনজিও ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা, স্বনির্ভর বাংলাদেশ, হীড বাংলাদেশ। [সৈয়দ মুজতবা আহমদ খান]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; দৌলতখান উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।