দাগনভূঁইয়া উপজেলা
দাগনভূঁইয়া উপজেলা (ফেনী জেলা) আয়তন: ১৬৫.৮৪ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৫৩´ থেকে ২৩°০৪´ উত্তর অক্ষাংশ ৯°১১৫´ থেকে ৯১°২২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে নাঙ্গলকোট, চৌদ্দগ্রাম ও ফেনী সদর উপজেলা, দক্ষিণে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে ফেনী সদর ও সোনাগাজী উপজেলা, পশ্চিমে সেনবাগ উপজেলা।
জনসংখ্যা ২২৫৪৬৪; পুরুষ ১০৯৯৩১, মহিলা ১১৫৫৩৩। মুসলিম ২১০৬৮০, হিন্দু ১৪৭৩৮, খ্রিস্টান ১৩ এবং অন্যান্য ৩৩।
জলাশয় ছোট ফেনী নদী।
প্রশাসন দাগনভূঁইয়া থানা গঠিত হয় ১৯৮০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৪ সেপ্টেম্বর ১৯৮৩ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ৮ | ১০১ | ১১৫ | ২৭২৬৩ | ১৯৮২০১ | ১৩৬০ | ৫৮.৪ | ৫৫.১ |
পৌরসভা | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |||
১২.৭৫ | ৯ | ২০ | ২৫৯৭৯ | ২০৩৮ | ৫৮.৪২ |
পৌরসভার বাইরে উপজেলা শহর | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||||
১.৬১ | ২ | ১২৮৪ | ৭৯৮ | ৪৮.৭৮ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
ইয়াকুবপুর ৯৪ | ৯৬৬৫ | ১২৪৯৩ | ১৩১৪৫ | ৬৫.০৮ | ||||
জয়লস্কর ৩৮ | ৫৫৮০ | ১৭৬৭০ | ১৮১০৪ | ৫৫.১৩ | ||||
দাগনভূইঁয়া ১২ | ৩৮১৮ | ৭৯৮১ | ৮৬৫৬ | ৫৭.৭৯ | ||||
পূর্বচন্দ্রপুর ৬৯ | ৪৮৪৮ | ১১৬১৮ | ১২৪৮১ | ৫৮.৫২ | ||||
মতুভূইঁয়া ৫৬ | ৩৪৫০ | ৮৩৬৬ | ৮৭০৭ | ৫৭.৮০ | ||||
রাজাপুর ৭৩ | ৪৫৯০ | ১৫২৯১ | ১৭৩৬১ | ৪৬.৭৬ | ||||
রামনগর ৭৭ | ৩২৭১ | ৮৩৭০ | ৮৫৭৬ | ৬৩.৪৩ | ||||
সিন্দুরপুর ৯০ | ৫৭৫৪ | ১৪৫৮০ | ১৬০৮৬ | ৪৪.৪৭ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন স্মৃতিস্তম্ভ ১।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩০৬, মন্দির ৩০, মাযার ৬। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: জয়লস্করে পাঁচ পীরের মাযার, নলদিয়ার দেওয়ান আবদুর রশীদ, মওলানা মোহাম্মদ ইছহাক (রঃ) ও শাহ সুফী ছদরুদ্দীনের (রঃ) মাযার।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৫.৪৮%; পুরুষ ৫৮.২৮%, মহিলা ৫২.৯০%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ইকবাল মেমোরিয়াল কলেজ (১৯৮৫), দাগনভূঁইয়া বালিকা বিদ্যালয়, রামনগর কে.এম.সি হাইস্কুল, জয়লস্কর হাইস্কুল (১৯৪৩)।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী অবলুপ্ত: কালান্তর, শুভেচ্ছা (সাপ্তাহিক); শুচিতা, দিশারী (সাময়িকী)।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, ক্লাব ৪২, সিনেমা হল ১, খেলার মাঠ ২৩।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ২৮.২৫%, অকৃষি শ্রমিক ২.৩৫%, শিল্প ০.৭৭%, ব্যবসা ১৫.১২%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৪.০৭%, চাকরি ২৪.১০%, নির্মাণ ১.৪১%, ধর্মীয় সেবা ০.৫৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৯.৩৩% এবং অন্যান্য ১৪.০৪%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬২.৭১%, ভূমিহীন ৩৭.২৯%। শহরে ৬১.৪৯% এবং গ্রামে ৬২.৮৬% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, আলু, ডাল, শাকসবজি।
বিলুপ্ত অথবা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, তিসি, কাউন, অড়হর।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, নারিকেল, পেঁপে।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে চিংড়ি ও অন্যান্য মাছের চাষ হয় এবং প্রায় শতাধিক গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৯১ কিমি, কাঁচারাস্তা ৫৮১ কিমি; নৌপথ ১৬ নটিক্যাল মাইল।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা রাইস মিল, ফ্লাওয়ার মিল, কটন স্পিনিং মিলস্, ব্রিকফিল্ড ও টুপি তৈরির কারখানা রয়েছে।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, মৃৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, কাঠ, বাঁশ ও বেতের কাজ ইত্যাদি।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৯, মেলা ৩। দাগনভূঁইয়া বাজার, আমু ভূঞার হাট, তুলাতলী বাজার, বেঁকের বাজার, ফাজিলের হাট, কোরাইশ মুন্সী হাট, ছিলোনিয়া হাট, রাজাপুর বাজার এবং নলদিয়া মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানি দ্রব্য চিংড়ি, নারিকেল, শাকসবজি।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪৭.১৪% (শহরে ৭০.৮৭% ও গ্রামে ৪৪.২০%) পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯২.৩৫%, পুকুর ২.৪৮%, ট্যাপ ১.১২% এবং অন্যান্য ৪.০৫%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫৬.৩১% (গ্রামে ৫৩.০৬% ও শহরে ৮২.৬০%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৪.৭১% (গ্রামে ৩৭.৪৩% ও শহরে ১২.৭৭%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৮.৯৮% (গ্রামে ৯.৫২% ও শহরে ৪.৬৩%) পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৮, ক্লিনিক ৬।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ে এ উপজেলার অনেক লোক প্রাণ হারায় এবং ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
এনজিও ব্র্যাক, আশা, সিডা, ডানিডা, কেয়ার। [মহিউদ্দীন হোসেন মহীন]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; দাগনভূঁইয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।