খান, জেনারেল টিক্কা

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২০:০৪, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)

খান, জেনারেল টিক্কা (১৯১৫-২০০২)  পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কম্যান্ডের অধিনায়ক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যে ১৯৭১ সালে ঢাকায় সামরিক অভিযান ও নৃশংস হত্যাযজ্ঞ পরিচালনার জন্য তিনি ‘বাংলাদেশের কসাই’ হিসেবে পরিচিত।

টিক্কা খান ১৯১৫ সালে পাঞ্জাবের কাহুতা তহসিলের অন্তর্গত জোছা মামদোত গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। দেরাদুনের ইন্ডিয়ান মিলিটারি একাডেমী থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর ১৯৩৯ সালে তিনি কমিশন লাভ করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তিনি বার্মা ও সাহারায় যুদ্ধ করেন এবং ১৯৪৬ সালে মিলিটারি একাডেমীতে প্রশিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ভারত বিভাগের (১৯৪৭) পর তিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমীতে প্রশিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৪৯ সালে কোয়েটার কম্যান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর তাঁকে একটি গোলন্দাজ রেজিমেন্টের অধিনায়ক নিয়োগ করা হয়। ১৯৬২ সালে তিনি মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন এবং ১৯৬৯ সালে লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে উন্নীত হন।

বাংলাদেশের  মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে টিক্কা খানকে পূর্বাঞ্চলীয় কম্যান্ড-এর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।


টিক্কা খান


১৯৭১ সালে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো তাঁকে জেনারেল পদে উন্নীত করেন এবং ১৯৭২ সালের ৩ মার্চ তাঁকে সেনাবাহিনী প্রধান নিয়োগ করা হয়। এ নিয়োগকে দেশের অভ্যন্তরে তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সামরিক শক্তি প্রয়োগে ভূট্টোর পরিকল্পনার বহিঃপ্রকাশ বলে ধরে নেওয়া হয়। টিক্কা খানের ওপর অর্পিত প্রথম দায়িত্ব ছিল বেলুচিস্তানের জনগণের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আক্রমণ পরিচালনা এবং এ কারণেই তিনি ‘বেলুচিস্তানের কসাই’ রূপে পরিচিতি লাভ করেন।

১৯৭৪ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণের পর টিক্কা খান ১৯৭৬ সালে পাকিস্তান পিপলস্ পার্টিতে যোগ দেন এবং জুলফিকার আলী ভুট্টোর জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক বিশেষ সহকারি নিযুক্ত হন। পরে তাঁকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী করা হয়। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর প্রথম মেয়াদকালে বেনজীর ভুট্টো ১৯৮৮ সালে টিক্কা খানকে পাঞ্জাব প্রদেশের গভর্নর নিয়োগ করেন। জেনারেল টিক্কা খান ২০০২ সালের ২৮ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন।  [হেলাল উদ্দিন আহমেদ]