জুড়ী উপজেলা
জুড়ী উপজেলা (মৌলভীবাজার জেলা) আয়তন: ২৩৮.৪৪ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°২২´ থেকে ২৪°৪১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°০১´ থেকে ৯২°১৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে বড়লেখা উপজেলা, দক্ষিণে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, পূর্বে ত্রিপুরা ও আসাম সীমান্ত, পশ্চিমে কুলাউড়া উপজেলা।
জনসংখ্যা ১৬৮৪২৩; পুরুষ ৮৪৯৪৮, মহিলা ৮৩৪৭৫। মুসলিম ১১৪৭৪৮, হিন্দু ৫২৬৬৭, বৌদ্ধ ৬৩০ এবং অন্যান্য ৩৭৮। এ উপজেলায় খাসিয়া ও মণিপুরী আদিবাসি জনগোষ্ঠী বসবাস করে।
জলাশয় জুড়ী নদী এবং হাকালুকি হাওর উল্লেখযোগ্য। এছাড়া রাগনাছড়া, পুটিছড়া, কাউলীছড়া, কুইয়াছড়া খাল এবং চালতা, তুরল, পিংলা ও গড়কুড়ি বিল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন ২০০৪ সালের ২৬ আগস্ট জুড়ী উপজেলা গঠিত হয়।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
- | ৮ | ৯২ | ১৪৪ | - | ১৬৮৪২৩ | ৭০৬ | - | ৩৯.৭৯% |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন(একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
গোয়ালবাড়ি ২৯ | ৭৮৩৫ | ১০০৭৮ | ১০০৫৯ | ৩৬.০৯ | ||||
জায়ফরনগর ৪৭ | ৯৪৮৩ | ১৫৪৬৮ | ১৪৮৩০ | ৪০.৭২ | ||||
দক্ষিণ দক্ষিণভাগ ৩১ | ৮৩৮৫ | ১৩৪৬৩ | ১৩৩৪৭ | ৪২.৭৮ | ||||
পশ্চিম জুড়ী ৫৫ | ৭৪০৬ | ৯২৪৭ | ৮৮৭৮ | ৪২.৯৪ | ||||
পূর্ব জুড়ী ৬৭ | ৫৬৩৬ | ৭৭১৫ | ৭৭৫০ | ৩৩.৫০ | ||||
ফুলতলা ২৩ | ৭৩৬৪ | ৮৮৮৪ | ৮৩৪৪ | ৩৭.৪৮ | ||||
সাগরনাল ৮৩ | ৮৩১২ | ১১২৪৮ | ১১০১৩ | ৩৮.৪৩ | ||||
সুজানগর ৭৭ | ৫১৯০ | ৮৮৪৫ | ৯২৫৪ | ৪৬.৩৮ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বর্তমান উপজেলার আওতাধীন এলাকায় শহরে মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের নিয়ন্ত্রনাধীন বিভিন্ন চা কারখানায় হামলা চালায় এবং কালভার্ট ও ব্রিজ ধ্বংস করে দেয়। ২ ও ৩ ডিসেম্বর ফুলতলা, সাগরনাল ও কাপনাপাহাড় এলাকায় যৌথবাহিনীর সঙ্গে পাকবাহিনীর প্রচন্ড লড়াই সংঘটিত হয়। ৪ ডিসেম্বর জুড়ী শত্রুমুক্ত হয়।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন বধ্যভূমি ১ (জুড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের পিছনে জাগধারী পুকুর)।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ১৭০, মন্দির ৪০, গির্জা ১।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৯.৭৯%; পুরুষ ৪৪.০৬%, মহিলা ৩৫.৫০%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭০, ব্র্যাক স্কুল ৪০, কেজি স্কুল ১০, মাদ্রাসা ২০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: তৈয়বুন্নেছা খানম একাডেমি ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৪), জুড়ী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৯৪), নয়াবাজার আহমদিয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৫৮)।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৫, অন্যান্য সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ৫।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৩৯.৪৮%, অকৃষি শ্রমিক ১২.৭৭%, ব্যবসা ১১.৮৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৪৮%, চাকরি ৭.৩১%, নির্মাণ ০.৯৪%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৩%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ২.০২% এবং অন্যান্য ১৮.৮০%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৩৭.৩৫% এবং ভূমিহীন ৬২.৬৫%।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, ডাল, চা।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, আনারস, কলা, কমলালেবু।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৫০ কিমি, কাঁচারাস্তা ১০০ কিমি।
শিল্প ও কলকারখানা করাতকল, চালকল, চা কারখানা, এ্যালুমিনিয়াম কারখানা, হার্ডবোর্ড কারখানা, হিমাগার প্রভৃতি।
কুটিরশিল্প মৃৎশিল্প, বেতশিল্প, শীতলপাটি শিল্প।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৫।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, চা।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৫.৩৪% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৬৬.২৫%, পুকুর ৫.৭২%, ট্যাপ ১.৫৪% এবং অন্যান্য ২৬.৪৯%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ২৯.২১% পরিবার স্বাস্থ্যকর, ৫৪.৩৭% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে এবং ১৬.৪২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
খনিজ সম্পদ এ উপজেলায় ইউরেনিয়াম ও চীনা মাটির সন্ধান পাওয়া গেছে।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্র ৬, হাসপাতাল ১, কমিউনিটি ক্লিনিক ২০। এছাড়া উপজেলার প্রতিটি চা বাগানে চা শ্রমিকদের জন্য নিজস্ব হাসপাতাল রয়েছে।
এনজিও ব্র্যাক, আশা। [মোঃ আব্দুল মান্নান]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; জুড়ী উপজলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।