চৌধুরী, মোহাম্মদ আলী
চৌধুরী, মোহাম্মদ আলী (১৯০৯-১৯৬৩) রাজনীতিক, কূটনীতিক, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। মোহাম্মদ আলী চৌধুরী ১৯০৯ সালে বগুড়ার এক জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত তিনি মুসলিম লীগের বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি ছিলেন।
মোহাম্মদ আলী চৌধুরী বগুড়া জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান, বগুড়া স্কুল বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো ছিলেন। মোহাম্মদ আলী মুসলিম লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ১৯৩৭ সালে বঙ্গীয় আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি খাজা নাজিমুদ্দীনের বঙ্গীয় প্রাদেশিক মন্ত্রিসভায় পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি ছিলেন (১৯৪৪-৪৫)। তিনি ১৯৪৬ সালে মুসলিম লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বঙ্গীয় আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় অর্থ ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী (১৯৪৬-৪৭) ছিলেন। পাকিস্তান আন্দোলনে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
মোহাম্মদ আলী বার্মায় পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত (১৯৪৮), কানাডায় পাকিস্তানের হাইকমিশনার (১৯৪৯-৫২) এবং যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত (১৯৫২-৫৩) ছিলেন। তিনি ১৯৫৩ সালে গভর্নর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ কর্তৃক পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন। তাঁরই সময়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা পূর্ববাংলায় যুক্তফ্রন্টের মন্ত্রিসভা বাতিল ঘোষণা করে (২৯ মে ১৯৫৪) এবং ৯২-ক ধারা জারি করে প্রদেশে গভর্নরের শাসন চালু করা হয়। ১৯৫৪ সালে গঠিত তাঁর নতুন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী আইনমন্ত্রী, আবু হোসেন সরকার স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং জেনারেল আইয়ুব খান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ছিলেন। তাঁরই সময়ে পাক-মার্কিন সামরিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় (১৯৫৪) এবং পাকিস্তান সেন্টো (CENTO) ও সিয়াটোর (SEATO) সদস্যভুক্ত হয়।
মোহাম্মদ আলী ১৯৫৫ থেকে ১৯৫৯ সালে প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রে ও পরে জাপানে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। তিনি ১৯৬২ সালে আইউব খানের মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থায় বগুড়া থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ছিলেন জাতীয় পরিষদে মুসলিম লীগ সংসদীয় দলের নেতা। মোহাম্মদ আলী চৌধুরী আইয়ুব খানের মন্ত্রিসভায় পররাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন। ১৯৬৩ সালের ২৩ জানুয়ারি মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি এ পদে বহাল ছিলেন। [মুয়ায্যম হুসায়ন খান]