শ্বেতপত্র

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২৩:০৫, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

শ্বেতপত্র  শ্বেতপত্রের ধারণাগত ভিত্তি এবং এর ব্যবহার যুক্তরাজ্যের সংসদীয় গণতন্ত্রের সাথে যুক্ত। একই ধরনের প্রথা অপরাপর গণতান্ত্রিক দেশ যথা অস্ট্রেলিয়া ও কানাডায় প্রচলিত রয়েছে। কোনো নীতি চূড়ান্তভাবে গ্রহণের পূর্বে শ্বেতপত্র সরকার কর্তৃক জারী করা হয়ে থাকে অথবা নীতি সংক্রা্ন্ত কোনো কৌশলগত পদক্ষেপ গ্রহণের পূর্বেও শ্বেতপত্র জারী করা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে নতুন আইন অথবা কোনো সংস্কারমূলক পদক্ষেপ চূড়ান্ত করার পূর্বেও শ্বেতপত্র জারী করা হয়ে থাকে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নও একই ধরনের বিষয়ে শ্বেতপত্র জারী করে। এতে কোনো প্রস্তাবের উপর সিদ্ধান্ত গ্রহণ অথবা অন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়ার পূর্বে শ্বেতপত্র জারী করা হয়।

১৯৬৮ সালে জনপ্রশাসন সংস্কার সম্পর্কিত ফুলটন কমিটির প্রতিবেদনে ‘স্বচ্ছ সরকার’ প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্ব আরোপ করার ফলে এ প্রথার অধিকতর প্রচলন দেখা যায়। তবে শ্বেতপত্র জারী করার প্রথা বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধেও দেখা যায়। উদাহরণ স্বরূপ চার্চিল হোয়াইট পেপার (১৯২২) এবং একীভূত প্যালেস্টাইনীয় রাজ্য গঠন সংক্রা্ন্ত শ্বেতপত্র (১৯৩৯) উল্লেখ করা যায়। অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার গুরুত্বপূর্ণ শ্বেতপত্রের মধ্যে যথাক্র্মে রয়েছে পূর্ণ কর্মসংস্থান (১৯৪৫) এবং প্রতিরক্ষা সংক্রা্ন্ত শ্বেতপত্র (১৯৬৪)।

ব্রিটিশ সংসদীয় প্রথায় ’সবুজপত্র’ জারী করার রীতিও বিদ্যমান। সবুজপত্র মূলত বিভিন্ন জনস্বার্থ বিষয়ক সমস্যার জন্য ব্যাপক আলোচনার উদ্দেশ্যে জারী করা হয়। সবুজপত্রে সরকার কোনো নির্দিষ্ট সমস্যা উল্লেখ করে এ সমস্যা সমাধানের পথ সম্পর্কিত দিক নির্দেশনা দেয়। এর উপর জনসাধারণের মতামত আহবান করে। কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া ছাড়াও ইউরোপীয় কমিশনে এ প্রথা অনুসূত হয়।

বাংলাদেশে এ প্রথার প্রচলন সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী। এ প্রথা কোনো প্রস্তাবিত নীতি বা জনস্বার্থ সম্পর্কিত সমস্যার সাথে যুক্ত নয়। বরং কোনো রাজনৈতিক দলের সরকার পরিচালনার পরবর্তী সময়ে অন্যকোনো রাজনৈতিক দল কর্তৃক শাসক দলের কুকীর্তির দলিল হিসাবে শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার এ ধরনের একটি শ্বেতপত্র ২০০১ সালে প্রকাশ করে।

যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশ সবুজপত্র প্রকাশ করার যে প্রথা অনুসরণ করে, সে প্রথা বাংলাদেশে নেই। তবে নীতি সংক্রা্ন্ত বিষয় অথবা অন্য কোন জনগুরুত্বপূর্ণ সরকারি পদক্ষেপ গ্রহণের পূর্বে ওয়ার্কশপ বা সেমিনারের মাধ্যমে এ বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট সবার সাথে আলোচনা করার রেওয়াজ রয়েছে। এ প্রক্রি্য়ায় দাতাগোষ্ঠীদেরও মতামত গ্রহণ করা হয়। উদাহরণ হিসেবে দারিদ্র বিমোচন কৌশলপত্র, স্থানীয় সরকার ও জনপ্রশাসন সংস্কারের বিষয় উল্লেখ করা যায়। এ ছাড়া, চিন্তাবিদদের নিয়ে গঠিত বেসরকারি সংস্থাও সংস্কারমূলক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে সরকারকে পরামর্শ দিয়ে থাকে।  [এ.এম.এম শওকত আলী]

গ্রন্থপঞ্জি  Frank Stacey, British Government 1966-1975, Years of Reform (1975), Macmillan Publishers.