হামিদ, শাহ আবদুল
হামিদ, শাহ আবদুল (১৯০০-১৯৭২) আইনজীবী, রাজনীতিক। গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানার খলসী গ্রামে ১৯০০ সালে তাঁর জন্ম। পিতা শাহ আবদুল গফুর ছিলেন একজন অবস্থাপন্ন জোতদার। শাহ আবদুল হামিদ ১৯১৬ সালে গোবিন্দগঞ্জ হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন, ১৯১৮ সালে কলকাতা রিপন কলেজ থেকে আই.এ এবং ১৯২০ সালে রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে বি.এ পাশ করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৭ সালে বি.এল ডিগ্রি লাভ করেন এবং ১৯২৮ সালে গাইবান্ধা মহকুমা আদালতে আইনব্যবসা শুরু করেন।
শাহ আবদুল হামিদ ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য হিসেবে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ১৯৩৬ সালে তিনি মুসলিম লীগে যোগ দেন এবং দলের গাইবান্ধা মহকুমা শাখার সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৪১ সালে তিনি রংপুর জেলাবোর্ডের সদস্য এবং ১৯৪২ সালে জেলাবোর্ডের ভাইস-প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯৪৩ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত তিনি রংপুর স্কুলবোর্ডের সভাপতি ছিলেন। ১৯৪৬ সালে মুসলিম লীগ প্রার্থী হিসেবে তিনি ভারতীয় আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৫১ থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত ন্যাশনাল ব্যাংকের কেন্দ্রীয় বোর্ডের ডিরেক্টর ছিলেন। শাহ আবদুল হামিদ ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগে যোগদেন। তিনি ১৯৫৭ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৬৬ সালে ৬-দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন।
শাহ আবদুল হামিদ ১৯৭০ সালে পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ৬নং জোনাল কাউন্সিলের (কোচবিহার) অর্থ সাব-কমিটির সদস্য ছিলেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের এপ্রিল মাসে জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে তিনি সংসদের স্পিকার নির্বাচিত হন।
শাহ আবদুল হামিদ ছিলেন ক্রীড়া সংগঠক, শিক্ষার পৃষ্ঠপোষক ও সংস্কৃতিসেবী। তিনি গাইবান্ধা টাউন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, গাইবান্ধা নাট্য সংস্থার পরিচালনা পর্ষদ ও গাইবান্ধা পাবলিক লাইব্রেরি অ্যান্ড ক্লাবের সহ-সভাপতি ছিলেন। ১৯৭২ সালের ১ মে গাইবান্ধায় তাঁর মৃত্যু হয়। [মুহম্মদ মনিরুজ্জামান]