জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ময়মনসিংহের ত্রিশালে বটতলা নামক স্থানে ৩৫ একর জমির উপর বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত। এই বটতলায় কবি তাঁর শৈশবের অনেকগুলি দিন কাটিয়েছেন। বৃহৎ ময়মনসিংহের বিদ্বৎসমাজ দীর্ঘদিন যাবৎ একটি সংস্কৃতি কেন্দ্রিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছিল। এরই প্রেক্ষিতে ২০০৪ সালে প্রকল্প হিসেবে সংস্কৃতি কেন্দ্রিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এর যাত্রা শুরু হয়। কিন্তু ২০০৬ সালের জাতীয় সংসদে জারিকৃত ১৮ নং আইনের অধীনে এটি একটি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে এবং ২০০৭ সালের ১ জুন এর শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে শুধু স্নাতক শিক্ষা কার্যক্রম চালু আছে। কলা, সামাজিক বিজ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল এবং ব্যাবসায় প্রশাসন নামে ৪টি অনুষদ রয়েছে। এ ৪টি অনুষদের অধীনে ১২টি বিভাগ রয়েছে। বিভাগগুলি হলো: অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম, ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং, হিউম্যান রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট, কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রনিক অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, অর্থনীতি, লোকপ্রশাসন, সঙ্গীত, চারুকলা, নাট্যকলা, বাংলা এবং ইংরেজি।
নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হন রাষ্ট্রপতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী সংস্থা সিন্ডিকেট। সবধরণের স্ট্যাট্যুট প্রণয়ন ও সংশোধন কাজ হয় সিনেটে। সিনেট বার্ষিক বাজেট অনুমোদন, শিক্ষা কার্যক্রমের সার্বিক পর্যালোচনা এবং উপাচার্য নিয়োগ দানের জন্য প্যানেল নির্বাচন করেন। ভাইস-চ্যান্সেলরসহ মোট সিন্ডিকেট সদস্য ১২ জন। এছাড়া একাডেমিক কমিটি, অর্থ কমিটি এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সাথে যুক্ত। ছাত্রছাত্রীদের সুযোগসুবিধা দেখার জন্য রয়েছে স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার সেন্টার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তত্ত্বাবধায়নে একটি জার্নাল প্রকাশের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ছাত্র ও শিক্ষক যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত হয় বিজনেস এক্সসিলেন্স নামে একটি জার্নাল এবং স্বাধীনতা নামে একটি বার্ষিক পত্রিকা প্রকাশের অপেক্ষায় আছে। সঙ্গীত বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের দ্বারা পরিচালিত হয় নবনন্দন নামে একটি সঙ্গীতগোষ্ঠী। সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে সমাজ উন্নয়নমূলক স্বেচ্ছাধর্মী সংগঠন ‘সাপোর্ট’।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৯৩৩ এবং শিক্ষকশিক্ষিকার সংখ্যা ৫৪। ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটি করে ২টি আবাসিক হল রয়েছে- অগ্নিবীণা হল এবং দোলনচাঁপা হল। শিক্ষক এবং কর্মকর্তাদের থাকার জন্য রয়েছে দুটি আবাসিক ভবন। বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে একটি সমৃদ্ধ কেন্দীয় গ্রন্থাগার, যার বইয়ের সংখ্যা প্রায় ২৮ হাজার। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে ইন্টারনেট সুবিধা রয়েছে। [মো আশিক ইকবাল]