বালিয়াকান্দি উপজেলা

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৪:৩৬, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

বালিয়াকান্দি উপজেলা (রাজবাড়ী জেলা)  আয়তন: ২৪২.৫৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৩৩´ থেকে ২৩°৪৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°২৬´ থেকে ৯০°৪০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে পাংশা উপজেলা, দক্ষিণে মধুখালী উপজেলা, পূর্বে রাজবাড়ী সদর উপজেলা, পশ্চিমে পাংশা ও শ্রীপুর উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৮৬৫৬২; পুরুষ ৯৬১২১, মহিলা ৯০৪৪১। মুসলিম ১৪৫৮৬৭, হিন্দু ৪০৬৪০, বৌদ্ধ ৪১ এবং অন্যান্য ১৪।

জলাশয় প্রধান নদী: হারা, চিত্রা, চন্দনা, গড়াই, পুর্সালী। জাসাই বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন বালিয়াকান্দি থানা গঠিত হয় ১৮৮১ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ১৫১ ২৫৮ ৭৮৮০ ১৭৮৬৮২ ৭৬৯ ৫৩.১ ৩৯.৪
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৫.৬৩ ৭৮৮০ ১২৭১ ৫৩.১৩
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
ইসলামপুর ৪৭ ৮২৩২ ১৪৩৪৬ ১৩৮১৩ ৩৮.৪৬
বহরপুর ০৯ ৯৩৪০ ১৫৪৫৭ ১৪৩৯২ ৩৮.৯১
বালিয়াকান্দি ১৯ ৬৩২৩ ১২৫০১ ১১৬৬০ ৪১.০৭
জামালপুর ৫৭ ৯৭৯৯ ১৪০১৮ ১৩৪৪৮ ৪২.৭৪
জংগল ৬৬ ৭২৩৭ ৯৮১৫ ৯২৮৬ ৩৮.০৩
নারুয়া ৮৫ ৮৬৩২ ১২৩৫৫ ১১৭৮০ ৪৪.৫৯
নওয়াবপুর ৯৫ ৯৫৪৯ ১৭৬২৯ ১৬০৬২ ৩৭.৩৫

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ কল্যাণ দীঘি (রাজধরপুর, খননকৃত ১৪৬৫ খ্রিস্টাব্দ), জোড়বাংলা হিন্দু মন্দির (নলিয়া, সতের শতক), সমাধি নগর মঠ (জঙ্গলবাড়ি, উনিশ শতক)।

ঐতিহাসিক ঘটনাবলি  ফকির-সন্ন্যাসী বিদ্রোহের অন্যতম ঘাটি ছিল বালিয়াকান্দি। এ উপজেলার সোনাপুর গ্রামের কৃষকরা নীল আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে বালিয়াকান্দিতে স্থানীয় রাজাকার ও পুলিশবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে রাজাকার ও পুলিশবাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের নিকট পরাজিত হয়ে আত্মসমর্পণ করে এবং মুক্তিযোদ্ধারা বেশকিছু অস্ত্রশস্ত্র হস্তগত করে।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ১ (বহরপুর); বধ্যভূমি ১ (রামদিয়া)।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ১৫২, মন্দির ১১৩, মাযার ১০, তীর্থস্থান ১।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪০.১%; পুরুষ ৪৩.৭% মহিলা ৩৬.২%। কলেজ ৪, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮৮, মাদ্রাসা ৫। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: বাকশাভাঙ্গী সরকারি বিদ্যালয় (১৮৯৪), পটরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯১৯)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৯, ক্লাব ১১, নাট্যমঞ্চ ২, নাট্যদল ৫, মহিলা সংগঠন ২, সিনেমা হল ৪, খেলার মাঠ ৮।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭১.৪%, অকৃষি শ্রমিক ২.২৭%, শিল্প ০.৪৮%, ব্যবসা ১১.৯%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.২%, চাকরি ৪.৬৮%, নির্মাণ ০.৯%, ধর্মীয় সেবা ০.১৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২৭% এবং অন্যান্য ৪.৭৪%।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, আখ, তৈলবীজ, খয়ের।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি কার্পাস, জাফরান।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, নারিকেল, কলা।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ১৯, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি ১১১।

কুটিরশিল্প লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, দারুশিল্প, বাঁশের কাজ, নকশি কাঁথা, নকশি পাখা।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ডুলি, ঘোড়ার গাড়ি।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৬, মেলা ৫। বহরপুর হাট, জামালপুর হাট, সোনাপুর হাট, বালিয়াকান্দি হাট এবং হরি ঠাকুরের মেলা ও বেরুলী মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  পাট, আখ, তৈলবীজ, খয়ের।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিলবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১১.৩১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৬.২৪%, ট্যাপ ০.১৪%, পুকুর ০.৪১% এবং অন্যান্য ৩.২১%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৩৫.৮% (গ্রামে ৩৪.৮৯% এবং শহরে ৪৪.০৭%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫২.৫৬% (গ্রামে ৫৩.২৫% এবং শহরে ৩৬.৮৬%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১১.৬৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, স্যাটেলাইট ক্লিনিক ৬, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৩।

এনজিও ব্র্যাক, আশা।  [বদরুল আলম টিপু]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বালিয়াকান্দি উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।