সোনাতলা উপজেলা
সোনাতলা উপজেলা (বগুড়া জেলা) আয়তন: ১৫৬.৭৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৫৫´ থেকে ২৫°০৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°২৬´ থেকে ৮৯°৪১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সাঘাটা ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে গাবতলী ও সরিয়াকান্দি উপজেলা, পূর্বে সারিয়াকান্দি উপজেলা, পশ্চিমে শিবগঞ্জ (বগুড়া) ও গাবতলী উপজেলা।
জনসংখ্যা ১৬৭৫৪৭; পুরুষ ৮৫২০৬, মহিলা ৮২৩৪১। মুসলিম ১৫৯৪০৫, হিন্দু ৮০৯৩, বৌদ্ধ ৫ এবং অন্যান্য ৪৪।
জলাশয় প্রধান নদী: যমুনা, বাঙ্গালী, ভিমতি, লোহাগড়া। মোহিচরণ বিল, গোবরচাঁপা বিল ও নেয়াগন বিল উলেখযোগ্য।
প্রশাসন সোনাতলা থানা গঠিত হয় ১৯৮১ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
- | ৭ | ১০৩ | ১৩১ | ১১৪০৫ | ১৫৬১৪২ | ১০৬৯ | ৫১.৯ | ৩৬.৮ |
উপজেলা শহর | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||||
৪.৯৪ | ৩ | ১১৪০৫ | ২৩০৯ | ৫১.৯ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
জোড়গাছা ৪২ | ৭৫৮০ | ১৬৩৭৭ | ১৫৯৬০ | ৩৯.৮৮ | ||||
তেকানী চুকাইনগর ৮৪ | ৩৯১৬ | ৬৭১৯ | ৬১৪৯ | ২৯.০৩ | ||||
দিগদাইড় ৩১ | ৬৪৬০ | ১৩৪১৩ | ১২৮৩২ | ৩৬.৪৪ | ||||
পাকুল্লা ৮১ | ৫৯৫৩ | ১০৪৫৭ | ১০২৪৩ | ৩৪.৪০ | ||||
বালুয়া ১০ | ৫৮৭৮ | ১২৭৩৬ | ১২৫৬৩ | ৪২.৯৩ | ||||
মধুপুর ৫২ | ৩৭৯৬ | ৮৭৪০ | ৮৩১৭ | ৩২.০৮ | ||||
সোনাতলা ৭৩ | ৫১৪৯ | ১৬৭৬৪ | ১৬২৭৭ | ৪১.৫২ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ পাকুল্লা আহলে হাদীস জামে মসজিদ (পাকুল্লা ইউনিয়ন), গড়ফতেহপুরের প্রাচীন দুর্গের ধ্বংসাবশেষ।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের ২৮ এপ্রিল পাকবাহিনী সোনাতলা রেলস্টেশন বাজারের দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ করে এবং ৩ জনকে গুলি করে হত্যা করে। ৬ মে বৃহস্পতিবার পাকবাহিনী সোনাতলা বন্দরের নিকটস্থ বাজারে ব্যাপক লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। এছাড়াও পাকসেনাদের গুলিতে ৩ জন লোক নিহত এবং বেশ সংখ্যক আহত হয়। ১৪ মে পাকবাহিনী সোনাতলার বাইগুনি গ্রামের ১ জনকে হত্যা করে।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ১ (হারিয়াকান্দি)।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২৪৯, মন্দির ১১, মাযার ২, তীর্থস্থান ১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: স্টেশন জামে মসজিদ, পাকুল্লা জামে মসজিদ, ঘোড়াপীর মাযার, সোনাতলা দুর্গবিহানী নারায়ণ মন্দির।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৭.৯%; পুরুষ ৪৩.৩%, মহিলা ৩২.৩%। কলেজ ৪, প্রাইমারি ট্রে্নিং ইনস্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৮, মাদ্রাসা ৬০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নাজির আখতার কলেজ (১৯৬৭), সোনাতলা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৮), সুখানপুকুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), আমলিতলা মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯৩৮)।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী বর্তমান: সাপ্তাহিক নতুন, দূর্জয় সাহিত্য; অনিয়মিত: তারুণ্য; অবলুপ্ত: সূর্য সারথী, সোনাতলা বুলেটিন, সোনাতলা বার্তা।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৪, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ১, থিয়েটার গ্রুপ ৩, খেলার মাঠ ৩০, সিনেমা হল ২।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬২.৫৭%, অকৃষি শ্রমিক ২.৫২%, শিল্প ০.৬১%, ব্যবসা ১৫.০১%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৬৬%, চাকরি ৬.২২%, নির্মাণ ১.১৩%, ধর্মীয় সেবা ০.২০%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৪২% এবং অন্যান্য ৭.৬৬%।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, সরিষা, পাট, ভূট্টা, আলু, আদা, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি যব, আখ, খেসারি, তিল, মিষ্টি আলু, কাউন।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, পেঁপে।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ১২৫, গবাদিপশু ১২, হাঁস-মুরগি ১৬।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৬৬ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩১২.০৭ কিমি; নৌপথ ৫ নটিক্যাল মাইল।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, সোয়ারী, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা ম্যাচ ফ্যাক্টরি ১, বিড়ি ফ্যাক্টরি ২, আইস ফ্যাক্টরি ১, অটোরাইস মিল ৫, খাদ্য ও পানীয়জাত ৩৩০, ধাতব শিল্প ৬৭, ওয়েল্ডিং কারখানা ৮।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প ১৫, লৌহশিল্প ২৫, মৃৎশিল্প ১০, তাঁতশিল্প ৬৩, দারুশিল্প ৫৫, বাঁশের কাজ ৭৫, সেলাই কাজ ১২৫, আসবাবপত্র ১১১।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১১, মেলা ৬। সোনাতলা হাট, কাচারী হাট, বালুয়া হাট, সৈয়দ আহম্মদ কলেজ হাট, পাকুল্লা হাট এবং ঘোড়াপীর মেলা, বুড়া মেলা, ঠাকুরগাঁও গোসাইবাড়ী মেলা, লোহাগড়া মেলা, অক্ষয় তয়া মেলা ও মাঘী সপ্তমী স্নান মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য কলা, আলু, দিয়াশলাই, বিড়ি, শাকসবজি।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩৭.৯% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯২.৮০%, ট্যাপ ০.৪৩%, পুকুর ০.১৩% এবং অন্যান্য ৬.৬৪%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ১৩.০৪% (গ্রামে ১১.৭৭% ও শহরে ৩১.৮১%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪২.৪০% (গ্রামে ৪৩.০৯% ও শহরে ৩২.২২%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৪৪.৫৬% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, স্বাস্থ্য-উপকেন্দ্র ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৬, ক্লিনিক ১।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৮৬৪ সালে ঘূর্ণিঝড়ে এ উপজেলার ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। তাছাড়া ১৯৮৭-৮৮ সালের বন্যায় এ উপজেলার ঘরবাড়ি তলিয়ে যায় এবং পশুপাখি, গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
এনজিও প্রশিকা, আশা, ব্র্যাক, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ। [মো. হারুন অর রশীদ]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; সোনাতলা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।