পলাশবাড়ী উপজেলা
পলাশবাড়ী উপজেলা (গাইবান্ধা জেলা) আয়তন: ১৯০.৬৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°১১´ থেকে ২৫°১৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°১৬´ থেকে ৮৯°৩২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে পীরগঞ্জ (রংপুর) ও সাদুল্লাপুর উপজেলা, দক্ষিণে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে গাইবান্ধা সদর ও সাঘাটা উপজেলা, পশ্চিমে ঘোড়াঘাট উপজেলা।
জনসংখ্যা ২৩১৭৫৫; পুরুষ ১১৭০৭৫, মহিলা ১১৪৬৮০। মুসলিম ২১৬৮৭৫, হিন্দু ১৪৫৯১ এবং অন্যান্য ৩০৯।
জলাশয় প্রধান নদী: করতোয়া, মরিচা, নলুয়া।
প্রশাসন পলাশবাড়ী থানা গঠিত হয় ১৫ মার্চ ১৯৩৭ এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
- | ৯ | ১৬১ | ১৬০ | ১৯৯১৫ | ২১১৮৪০ | ১২১৫ | ৫৪.৯ | ৩৭.৪ |
উপজেলা শহর | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||||
৬.৬৩ | ৮ | ১৯৯১৫ | ৩০০৪ | ৫৪.৯০ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
কিশোরগাড়ী ৪৭ | ৮৪৪৫ | ১৬৬০৬ | ১৫৭৬০ | ৩৩.৯৫ | ||||
পাবনাপুর ৭৬ | ৪১৪৫ | ১০৩১৪ | ১০২৩৪ | ৩৬.৪০ | ||||
পলাশবাড়ী ৮৫ | ৩৭৩৪ | ১৬৪৫১ | ১৬০১৫ | ৪৮.৯৮ | ||||
বরিশাল ০৯ | ৫২০৬ | ১৩৫০৩ | ১৩২১৫ | ৩৩.১৬ | ||||
বেতকাপা ১৯ | ৫০২৯ | ১৩১৯২ | ১৩০৪৯ | ৪৩.৩২ | ||||
মনোহরপুর ৬৬ | ৫০৪৫ | ১২১১২ | ১১৯৬৭ | ৩৮.৮৬ | ||||
মোহাদিপুর ৫৭ | ৫০৩৪ | ১৫৫৬৩ | ১৫৪২২ | ৪২.৫৭ | ||||
হরিনাথপুর ২৮ | ৪৫৬৭ | ৮৩৭২ | ৮১১১ | ৩২.৩৫ | ||||
হোসেনপুর ৩৮ | ৫৯১১ | ১০৯৬২ | ১০৯০৭ | ৩৪.৫৩ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের রমনা রেসকোর্স ময়দানে ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের পর স্থানীয় জনগণ উপজেলার রংপুর-বগুড়া মহাসড়ক অবরোধ করে। এ কারনে পাকবাহিনী পলাশবাড়ী হাটে গুলিবর্ষণ করলে ১ জন নিহত হয়। পরবর্তী সময়ে পাকবাহিনী স্থানীয় ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পাকবাহিনী উপজেলার সড়ক ও জনপথ বিভাগের অফিসে ক্যাম্প স্থাপন করে এবং বহুসংখ্যক নিরীহ লোককে ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন ও হত্যা করে। ১০ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা পলাশবাড়ী নিয়ন্ত্রণে নেয়।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ২ (কাশিয়াবাড়ি গণকবর, বৈরী হরিণমারী গণকবর); বধ্যভূমি ১ (সড়ক ও জনপথ বিভাগ অফিস সংলগ্ন বধ্যভূমি); শহীদ মিনার ১ (পলাশবাড়ি শহীদ মিনার), স্মৃতিফলক ১ (জাফর-মুংলিশপুরের স্মৃতিফলক)।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২৯৮, মন্দির ১৩। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: পলাশবাড়ী জামে মসজিদ, কালীবাড়ি মন্দির।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৮.৯%; পুরুষ ৪৪%, মহিলা ৩৩.৭%। কলেজ ৯, কারিগরি কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৭৮, কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩৩, মাদ্রাসা ৬৯। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: পলাশবাড়ী সরকারি কলেজ (১৯৬৪), পলাশবাড়ী এস.এম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১১), বাসুদেবপুর চন্দ্রকিশোর স্কুল এন্ড কলেজ (১৯১৭), রওশনবাগ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৬)।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক পলাশ, সাপ্তাহিক অনড় এবং মাসিক অনির্বাণ (অবলুপ্ত)।
বিনোদন কেন্দ্র ড্রিমল্যান্ড পিকনিক স্পট।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৪.৩০%, অকৃষি শ্রমিক ১.৯৫%, শিল্প ১.১৫%, ব্যবসা ১২.৮৭%, পরিবহন ও যোগাযোগ ৬.২৪%, চাকরি ৫.৯৬%, নির্মাণ ১.৩৮%, ধর্মীয় সেবা ০.১৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিট্যান্স ০.১৫% এবং অন্যান্য ৫.৮৩%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৭.৮২%, ভূমিহীন ৪২.১৮%। শহরে ৫২.৩৩% এবং গ্রামে ৫৮.৩০% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল কলা, আলু, ভুট্টা, আখ, তরমুজ, শাকসবজি।
বিলুপ্ত অথবা বিলুপ্তপ্রায় ফসল আউশ ধান, কাউন, মিষ্টিআলু, অড়হর।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, জাম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৫২.২০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৭ কিমি, কাঁচারাস্তা ৫৪০.৭৯ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা বরফকল, ইটের ভাটা, ওয়েল্ডিং কারখানা।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, বিড়িশিল্প, কাঠের কাজ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৪, মেলা ৯। মাঠের হাট, কালীবাড়ি হাট, আমলাগাছী হাট এবং কালীবাড়ি পূজা মেলা, ঋষিঘাট স্নানের মেলা, বাসুদেবপুর মেলা, পলাশবাড়ী চৈত্র সংক্রান্তির মেলা ও সাঁকোয়ার বারুনী মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য কলা, শাকসবজি।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১০.৭২% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৪.৫৪%, ট্যাপ ০.৩১%, পুকুর ০.২৩% এবং অন্যান্য ৪.৯২%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা ১০.৮৮% (শহরে ৩৬.৯০% এবং গ্রামে ৮.৬০%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৮.১৫% (শহরে ৩২.৩৫% এবং গ্রামে ৩৮.৬৬%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৫০.৯৭% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপস্বাস্থ্য-কেন্দ্র ৫, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৯, পশু প্রজনন উপকেন্দ্র ২।
এনজিও ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা, হিড বাংলাদেশ, টিএমএসএস, নিজেরা করি। [আসমা পারভীন]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; পলাশবাড়ী উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।