ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা (ময়মনসিংহ জেলা) আয়তন: ২৮৬.১৯ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৩৩´ থেকে ২৪°৪৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°২৮´ থেকে ৯০°৪৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে গৌরীপুর উপজেলা, দক্ষিণে নান্দাইল উপজেলা, পূর্বে কেন্দুয়া উপজেলা, পশ্চিমে ময়মনসিংহ সদর ও ত্রিশাল উপজেলা।
জনসংখ্যা ৩৩৮০৮০; পুরুষ ১৭২৯৫২, মহিলা ১৬৫১২৮। মুসলিম ৩২৫৯৮৩, হিন্দু ১১৯১৬, অন্যান্য ১৭৮।
জলাশয় পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ, মঘা ও সোয়াই নদী এবং কাইলা, সিন্নি, ডালিয়া এবং দলিয়ার বিল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন ঈশ্বরগঞ্জ থানা গঠিত হয় ১৯৩৬ সালে। এটি উপজেলায় রূপান্তরিত হয় ১৯৮৩ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ১১ | ২৯৩ | ২৯১ | ৩০৯৪৮ | ৩০৭১৩২ | ১১৮১ | ৫১.০ | ৩৩.৫ |
পৌরসভা | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার(%) | |||
১২.৪৮ | ৯ | ১৩ | ২৪৯৯১ | - | ৫১.৯৫ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
আঠারবাড়ী ১১ | ৫৪৬৩ | ১৫৪৭৫ | ১৪৮৪৭ | ৩৬.২৪ | ||||
ঈশ্বরগঞ্জ ৪০ | ৬৭১৯ | ১০৪৮৪ | ৯৭০০ | ৩৮.৩৫ | ||||
উচাখিলা ৯৪ | ৬৬৫৮ | ১৪০৩৫ | ১৩১১৭ | ২৮.৬০ | ||||
জাটিয়া ৪৫ | ৫৮৪৯ | ১৪৪৩০ | ১৪২৫৬ | ৩৫.৩৪ | ||||
তারুন্দিয়া ৯০ | ৬৭৪৯ | ১৪৪১৬ | ১৪০৭৩ | ৩৩.১৩ | ||||
বড়হিত ১৩ | ৬০৬১ | ১৪৩৮৩ | ১৩৬৬৬ | ৩০.৯৫ | ||||
মগতলা ৬৩ | ৫৯৯০ | ১৫৬৮৭ | ১৫২৩৫ | ৩৪.৬৫ | ||||
মাইজবাগ ৫৪ | ৭৩৪৩ | ১৮৬২০ | ১৭৮৭৪ | ৩৫.৮৭ | ||||
রাজীবপুর ৬৭ | ৮৭৩৮ | ১৬৯৩৩ | ১৬১৭৯ | ৩০.২২ | ||||
সরিষা ৭৬ | ৫৩২১ | ১২৬১৭ | ১২৪০১ | ৩৫.৯১ | ||||
সোহাগী ৮৫ | ৫২৩০ | ১২৫২৫ | ১২১৩৬ | ৩২.৭৯ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ ভুলসোমা জামে মসজিদ (১৬০০), নলুয়াপাড়া জামে মসজিদ (১৬২৫)।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের ১৬ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর এক লড়াই হয়। উক্ত লড়াইয়ে পাকসেনাদের গুলিতে ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ৯ ডিসেম্বর উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৪৩, মন্দির ১৮। উল্লেখযোঘ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: বুশসোমা মসজিদ (১৬০০) ও নলুয়াপাড়া মসজিদ (১৬২৫)।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়হার ৩৫.২%; পুরুষ ৩৮.৭%, মহিলা ৩১.৫%। ডিগ্রি কলেজ ২, কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৬, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৪৫, মাদ্রাসা ১০৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ঈশ্বরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৮), আলীনগর কারিগরি ও বাণিজ্যিক কলেজ (১৯৯৯), ঈশ্বরগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয় ও মহিলা কলেজ (১৯১৯), আঠারবাড়ি মহিমচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১০), বিশ্বেশরী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), চরনিখলা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), বড়হিত উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৯), জাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১০), সোহাগী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৫), মাইজবাগ পাছপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৩), সাখুয়া আদর্শ বিদ্যানিকেতন (১৯৯০), উচাখিলা উচ্চ বিদ্যালয়, মধুপুর উচ্চ বিদ্যালয়।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী অংকুর, উত্তরণ, প্রস্ত্ততি, কলনাদ, বর্ণমালা, ঈশ্বরগঞ্জ বার্তা, কাঁচামাটিয়া, বিকিরণ।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, ক্লাব ২১, সিনেমা হল ২, খেলার মাঠ ১৫।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭০.৫২%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৩৮%, ব্যবসা ১০.২২%, চাকরি ৩.৮৪%, নির্মাণ ০.৮৭%, ধর্মীয় সেবা ০.৩২%, শিল্প ০.৪১%, রেন্ট আন্ড রেমিটেন্স ০.১৮%, পরিবহন ও যোগাযোগ ২.৯০% অন্যান্য ৭.৩৬%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৪.৪২%, ভূমিহীন ৩৫.৫৮%। শহরে ৫৩.৮৭% এবং গ্রামে ৬৫.৪২% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষিফসল ধান, পাট, গম, আলু, করলা, পটল, মরিচ, সরিষা, পান, ইক্ষু।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি বিরই ধান, খেসারি, কলাই।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, কলা, নারিকেল, তাল, জামরুল।
কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, ওয়েল্ডিং কারখানা, বাঁশ ও কাঠের কাজ উল্লেখযোগ্য।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৪১, গবাদিপশু ১৯, হাঁস-মুরগি ৪৩।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৯৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ৫৭৪ কিমি। রেললাইন ১৭ কিমি; রেলস্টেশন ৩।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন ঘোড়া ও গরুর গাড়ি, পালকি, ভুরা (ভেলা)।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৩০; ঈশ্বরগঞ্জ, উচাখিলা, লক্ষ্মীগঞ্জ, সোহাগী, মধুপুর, আঠারবাড়ী, কাটিয়া, কুমারুলী, মাইজবাগ, সুটিয়া ও ঘালবাসা হাটবাজার এবং ঝুলন মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, পাট, গম, আলু, কলা।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক‘টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১১.৫২% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯২.১১%, ট্যাপ ০.৩২%, পুকুর ১.৯০% এবং অন্যান্য ৫.৬৭%। উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ১৪.৯১% (গ্রামে ১২.৯০% এবং শহরে ৩৬.০০%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫২.৩০% (গ্রামে ৫৩.৩৪% এবং শহরে ৪১.৪১%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩২.৭৯% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৬, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৯, কমিউনিটি চিকিৎসাকেন্দ্র ৫২, দাতব্য চিকিৎসা কেন্দ্র ৩।
এনজিও ব্র্যাক, আশা, কারিতাস। [মো. আজিজুর রহমান ভূঁইয়া]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।