মাধবপুর উপজেলা
মাধবপুর উপজেলা (হবিগঞ্জ জেলা) আয়তন: ২৯৪.২৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৫৮´ থেকে ২৪°১৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°১৬´ থেকে ৯১°২৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে লাখাই ও হবিগঞ্জ সদর উপজেলা, দক্ষিণে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, পূর্বে চুনারুঘাট উপজেলা ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, পশ্চিমে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সদর ও নাসিরনগর উপজেলা।
জনসংখ্যা ২৭২৫৭৮; পুরুষ ১৩৮১৪৩, মহিলা ১৩৪৫৩৫। মুসলিম ২১৬৫১০, হিন্দু ৫৫২৩৫, বৌদ্ধ ৬৫৯, খ্রিস্টান ১৩ এবং অন্যান্য ১৬১।
জলাশয় প্রধান নদী: মাটিয়াইন ও সাস্তি।
প্রশাসন মাধবপুর থানা গঠিত হয় ১৮০৪ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ১১ | ১৮১ | ২৬৮ | ১৮৮০২ | ২৫৩৭৭৬ | ৯২৬ | ৪৭.৯৫ | ৪৪.৯৪ |
পৌরসভা | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |||
৭.০১ | ৯ | ১২ | ১৬৬৪৬ | ২৬৭৬ | ২৩.৭৩ |
উপজেলা শহর | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||||
১.৩১ | ২ | ২১৫৬ | ১৬৪৬ | ৭১.৪১ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
আদৈর ১৬ | ৩৭৭২ | ৮২৩১ | ৮০২৮ | ৩৪.২৪ | ||||
আন্দিউরাউক ৭৭ | ৬০৫৯ | ৮৪০৩ | ৮০৫০ | ৪৯.৪৮ | ||||
চৌমোহনী ৫১ | ৮০২৫ | ১০৫৬১ | ১৪৯৩৩ | ৪১.৬৪ | ||||
ছাতিয়াইন ৪৩ | ৫০৭৮ | ১০৫০৯ | ১০২১৪ | ৪১.৭২ | ||||
জগদীশপুর ৬৯ | ৫৮৭১ | ১১৯৯৮ | ১১৭৫৩ | ৪১.৫০ | ||||
ধর্মঘর ৬০ | ৬৮২২ | ১২০৭৭ | ১২০৮৮ | ৪৪.৯০ | ||||
নোয়াপাড়া ৮৬ | ৭৫৫০ | ১৩৩৬৫ | ১২৭৮০ | ৪১.৪২ | ||||
বাগাসুরা ১৭ | ৫৮২২ | ১২৩৪৪ | ১১৬৬৯ | ৪২.৯৯ | ||||
বাহারা ২৫ | ৭০৫৩ | ১৪৬১৬ | ১৪৪৩৭ | ৩৮.৪৬ | ||||
বুল্লা ৩৪ | ৬২৫৭ | ৭৯৩১ | ৮২৮৬ | ৩৪.৩৩ | ||||
শাহ জাহানপুর ৯৪ | ১০৪০৫ | ১৪৭৮০ | ১৪৩৭৯ | ৪২.৮৫ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল এ জেলার মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ডাকবাংলোতে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক মহম্মদ আতাউল গনি ওসমানী দ্বিতীয় ও চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কতিপয় অফিসারের সঙ্গে মিলিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন বধ্যভূমি ১, স্মৃতিস্তম্ভ ১ (তেলিয়াপাড়া)।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২৫৪, মন্দির ৭, মাযার ৫।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪২.১২%; পুরুষ ৪৭.৬৭%, মহিলা ৩৬.৫২%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৯, কমিউনিটি বিদ্যালয় ২, কিন্ডার গার্টেন ৩, মাদ্রাসা ৮। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: গোবিন্দপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৩২), আদৈর লোকনাথ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১১), ছাতিয়াইন বিশ্বনাথ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১), জগদীশপুর জে. সি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৪), আওলিয়াবাদ আরকে উচ্চ বিদ্যালয়, হরষপুর দারুল উলুম ইসলামিয়া মাদ্রাসা।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩, ক্লাব ৮, সিনেমা হল ২, অডিটোরিয়াম ১, মহিলা সংগঠন ১, খেলার মাঠ ৫।
গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও দর্শনীয় স্থান শাহজীবাজার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র এবং নওয়াপাড়া, জগদীশপুর, তেলিয়াপাড়া ও সুরমা চা বাগান।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬১.৪৩%, অকৃষি শ্রমিক ৪.৩৮%, ব্যবসা ১০.৭৯%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৫১%, চাকরি ৬.৮২%, নির্মাণ ০.৭১%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৫%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১.৪৮% এবং অন্যান্য ১২.৫৩%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৭.৩৭%, ভূমিহীন ৪২.৬৩%। শহরে ৫১.৬২% এবং গ্রামে ৫৭.৭৬% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, আলু, পাট, সরিষা, ডাল, গম।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, মিষ্টি আলু, তিশি, কাউন।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, জাম, পেঁপে, নারিকেল, কাঁঠাল।
মৎস্য,গবাদিপশু ও হাসঁ-মুরগির খামার মৎস্য ১৬, গবাদিপশু ১১।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৩৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ৭৭৮ কিমি; রেলপথ ৪০ কিমি; নৌপথ ১৬০ নটিক্যাল মাইল।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা টেক্সটাইল মিল, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, সাবান কারখানা, মোমবাতি কারখানা।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৮, মেলা ১। মাধবপুর বাজার, নোয়াপাড়া বাজার, তেলিয়াপাড়া বাজার, মনতলা বাজার, জগদীশপুর বাজার ও ধর্মঘর বাজার উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, পাট।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিলবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৬.৬১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
প্রাকৃতিক সম্পদ গ্যাস ও কাঁচবালু।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯০.৪৪%, পুকুর ২.৫৪%, ট্যাপ ১.৩৭% এবং অন্যান্য ৫.৬৫%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ২৮.১৩% (গ্রামে ২৬.৫৯% ও শহরে ৫০.৪৭%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৮.৩২% (গ্রামে ৫৯.১৪% ও শহরে ৪৩.৮৬%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১৩.৫৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৬, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৬, কমিউনিটি ক্লিনিক ২, প্রাইভেট ক্লিনিক ১. মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ২, মাতৃসদন ৬, দাতব্য চিকিৎসালয় ২, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ১, পশু চিকিৎসা কেন্দ্র ১।
এনজিও কেয়ার, ব্র্যাক, ভিশন, আশা। [এ.বি.এম মাসুদ লস্কর]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; মাধবপুর উপজেলা মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০১০।