পিরোজপুর সদর উপজেলা
পিরোজপুর সদর উপজেলা (পিরোজপুর জেলা) আয়তন: ১৬৪.৬৪ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°২৯´ থেকে ২২°৪১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৫৩´ থেকে ৯০°০২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে নাজিরপুর ও নেছারাবাদ উপজেলা, দক্ষিণে জিয়ানগর ও ভান্ডারিয়া উপজেলা, পূর্বে নেছারাবাদ, কাউখালী (পিরোজপুর) ও ভান্ডারিয়া উপজেলা, পশ্চিমে মোড়েলগঞ্জ ও কচুয়া (বাগেরহাট) উপজেলা।
জনসংখ্যা ১৫৫১৯৪; পুরুষ ৭৮৮৪৭, মহিলা ৭৬৩৪৭। মুসলিম ১২৬৮৫০, হিন্দু ২৮২৯৫, বৌদ্ধ ২৩, খ্রিস্টান ১৬ এবং অন্যান্য ১০।
জলাশয় প্রধান নদী: বলেশ্বরী, কালিগঙ্গা, কচা; জুজখোলা খাল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন থানা গঠিত হয় ১৭৯০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ৭ | ৬৫ | ১১২ | ৫৭৩৯৩ | ১০৩০১৮ | ৯৪২ | ৭৬.৩ | ৬৬.৮২ |
পৌরসভা | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |||
২৯.৪৬ | ৯ | ৩০ | ৫২১৭৬ | ১৭৭১ | ৭৬.৭ |
উপজেলা শহর | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||||
৫.৮৯ | ১ | ৫২১৭ | ৮৮৬ | ৬৫.০৭ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
কদমতলা ২৫ | ৫৭৮৯ | ৬৯৩১ | ৬৮১০ | ৬৫.৩৬ | ||||
কলাখালী ৩৪ | ৪০৫৯ | ৫২৪৫ | ৫৩৫৩ | ৬৯.৫৫ | ||||
টোনা ৯৪ | ৪৬৩১ | ৬৮২৫ | ৬৭৩২ | ৬৬.৫৫ | ||||
দুর্গাপুর ১৭ | ৪৬৬২ | ৬৮৫০ | ৬৯৩৪ | ৬৩.৫৪ | ||||
শঙ্করপাশা ৬৯ | ৬২২৩ | ১০৯৯৪ | ১০৭৩২ | ৬৪.১১ | ||||
সারিকতলা ৭৭ | ৫৮৩৭ | ৬১৯৬ | ৬১৪৩ | ৬৯.৪২ | ||||
সিকদার মল্লিক ৮৬ | ৬২২৫ | ৮৬৬৯ | ৮৬০৪ | ৬৯.২৫ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ রায়েরকাঠি জমিদার বাড়ি ও কালীমন্দির।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালে পাকসেনাদের সম্পর্কে মুক্তিবাহিনীকে তথ্য সরবরাহের অপরাধে ভাগীরথী (বীরাঙ্গনা)-কে পাকসেনারা নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে। তাঁকে জীবন্ত অবস্থায় মোটর সাইকেলের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে টেনে-হিচঁড়ে মৃত্যু ঘটিয়ে তার লাশ বলেশ্বরী নদীতে ফেলে দেয়।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন স্মৃতিস্তম্ভ (বলেশ্বরী খেয়াঘাট)।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৫১, মন্দির ১৪৫, মাযার ১, তীর্থস্থান ১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: পিরোজপুর জামে মসজিদ, পিরোজপুর কালীবাড়ি, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৭১.৫৬%; পুরুষ ৬৯.৬৮%, মহিলা ৬৬.৪০%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: পিরোজপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী সরকারি কলেজ, পিরোজপুর সরকারি বালক বিদ্যালয় (১৯০৯), পাড়েরহাট রাজলক্ষ্মী মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৫), পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৯), কদমতলা জর্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১২), পিরোজপুর টাউন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৭) ও খানাকুনিয়ারী পি ই ফাজিল মাদ্রসা (১৯২০)।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৯, ক্লাব ৩৫, নাট্যমঞ্চ ১, নাট্যদল ১, মহিলা সংগঠন ৭, সিনেমা হল ৩।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৪৯.৮৮%, অকৃষি শ্রমিক ৫.৮৯%, শিল্প ১.৫৪%, ব্যবসা ১৯.০৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.০৩%, চাকরি ১.৮৭%, নির্মাণ ০.৩৪%, ধর্মীয় সেবা ৯.৫৫%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৪৪% এবং অন্যান্য ৮.৪০%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৫.৮৭%, ভূমিহীন ৪৪.১৩%।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, আখ, ডাল, পান, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি আউশ ধান, মিষ্টি আলু।
প্রধান ফল-ফলাদি কলা, পেঁপে, নারিকেল, তরমুজ, সুপারি, আমড়া।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৫০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৪০ কিমি, কাঁচারাস্তা ৭০০ কিমি; নৌপথ ৭৩ নটিক্যাল মাইল।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা ধানকল, ময়দাকল, বরফকল, করাতকল, ছাপাখানা, বেকারি, ওয়েল্ডিং কারখানা।
কুটিরশিল্প লৌহশিল্প, তাঁতশিল্প, বাঁশের কাজ, বিড়িশিল্প।
হাটবাজার ও মেলা পিরোজপুর বাজার, কদমতলা বাজার ও ঘোষের হাট উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য কলা, নারিকেল, পান, সুপারি।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৮.৬% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৮২.৭৫%, পুকুর ১৪.১৩%, ট্যাপ ০.২৯% এবং অন্যান্য ২.৮৩%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা ৪১.৫৭% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫২.৬৮% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৫.৭৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ২, ক্লিনিক ৪, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১১।
এনজিও ব্র্যাক, আশা, কেয়ার, প্রশিকা। [স্বপ্না রায়]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; পিরোজপুর সদর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।