আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক
আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক আইন ১৯৯৫-এর অধীনে সরকার নিয়ন্ত্রিত একটি বিশেষায়িত ব্যাংক ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থা। নভেম্বর ১৯৯৬ সালে ঢাকাস্থ লোকাল অফিস খোলার মাধ্যমে এ ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৯ শেষে এ ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধনের পরিমাণ ১০০০ মিলিয়ন এবং পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৩৮১ মিলিয়ন টাকায় দাঁড়ায়। ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধনের ৩২.৮ শতাংশ শেয়ার সরকারের এবং অবশিষ্ট শেয়ার আনসার-ভিডিপি সদস্য, আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের। ডিসেম্বর ২০০৯ শেষে ব্যাংকের শাখার সংখ্যা ৯২ টিতে দাঁড়ায় এবং ১৯২ জন কর্মকর্তা ও ৩০০ জন কর্মচারী নিয়ে মোট জনশক্তি ৪৯২। ১৯ সদস্যবিশিষ্ট পরিচালনা পর্ষদ ও ৫ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাহী কমিটির তত্ত্বাবধানে ব্যাংকটি পরিচালিত হচ্ছে।
মৌল তথ্য ও পরিসংখ্যান (মিলিয়ন টাকা)
বিবরণ | ২০০৪ | ২০০৫ | ২০০৬ | ২০০৭ | ২০০৮ | ২০০৯ |
অনুমোদিত মূলধন | ১০০ | ১০০ | ১০০০ | ১০০০ | ১০০০ | ১০০০ |
পরিশোধিত মূলধন | ১৬০ | ১৭৯ | ১৯৯ | ২০০ | ২৮৮ | ৩৬৫ |
রিজার্ভ | ৩০ | ৩২ | ৪৫ | ৪৯ | ৪৯ | ৫২ |
আমানত | - | ১৫১ | ২০৩ | ২৬৪ | ২৬৭ | ৩৯৭ |
ক) তলবি আমানত | - | ১৪২ | ১৯৩ | ২৫০ | ২৫৩ | ৩৫৮ |
খ) মেয়াদি আমানত | - | ৯ | ১০ | ১৪ | ১৪ | ৩৯ |
ঋণ ও অগ্রিম | ৫২০ | ৬৭৮ | ৯৩০ | ৯৪০ | ৮৭০ | ১০৫৬ |
বিনিয়োগ | ৪০৬ | ৩০৮ | ১১৮ | ১২ | ১২ | ৩৫২ |
মোট পরিসম্পদ | ১০২০ | ১০৬৮ | ১১৪৭ | ১২৪০ | ১২৯৭ | ১৫৮৯ |
মোট আয় | ২০১ | ১৮২ | ২০২ | ২০০ | ১৫৮ | ১৬৩ |
মোট ব্যয় | ১৪১ | ১২৫ | ১১৩ | ১২১ | ১১৬ | ১৩৪ |
'মোট জনশক্তি .সংখ্যায়') | ৪৪৪ | ৪৫৩ | ৪৫৩ | ৪৫১ | ৪৪৫ | ৪৯২ |
ক) কর্মকর্তা | ১৪৫ | ১৪৫ | ১৪৫ | ১৪৭ | ১৪৩ | ১৯২ |
খ) কর্মচারী | ২৯৯ | ৩০৮ | ৩০৮ | ৩০৪ | ৩০২ | ৩০০ |
'শাখা .সংখ্যায়') | ৭৬ | ৮১ | ৮১ | ৮১ | ৮৫ | ৯২ |
ক) দেশে | ৭৬ | ৮১ | ৮১ | ৮১ | ৮৫ | ৯২ |
খ) বিদেশে | - | - | - | - | - | - |
উৎস ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকার, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলী, ২০০৪-০৫ থেকে ২০০৯-১০।
আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক সারাদেশে ৪.৫ মিলিয়ন আনসার ও ভিডিপি সদস্যের আত্ম-কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পুঁজি সরবরাহ ও ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। একই গ্রামের পাঁচ জন সদস্য নিয়ে একটি গ্রুপ এবং সর্বোচ্চ ১০টি গ্রুপ নিয়ে একটি সেন্টার গঠনের মাধ্যমে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়ে থাকে। গ্রুপভুক্ত প্রত্যেক সদস্যকে গ্রামীণ ৬০টি খাতে জামানতবিহীন সর্বোচ্চ ৫০,০০০(পঞ্চাশ হাজার) টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করা হয়। ক্ষুদ্রঋণের আওতায় বিতরণকৃত ঋণ ৫০টি সমান সাপ্তাহিক কিস্তিতে সুদসহ আদায় করা হয়ে থাকে। ২৫টি শাখায় মাসিক ভিত্তিতে ক্ষদ্রঋণ আদায় কার্যক্রম চালু আছে যা ১২টি মাসিক কিস্তিতে আদায় করা হয়। ঋণের পরিমাণের উপর ভিত্তি করে সাপ্তাহিক ন্যূনতম ২০টাকা থেকে ১০০ টাকা জমা নেওয়া হয়।
প্রচলিত গ্রুপভিত্তিক ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম ছাড়াও ব্যক্তি পর্যায়ে উদ্যেক্তাদের মাঝে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ঋণ প্রদান কর্মসূচি চালু আছে। এগুলি হলো সরকারের কৃষিভিত্তিক শিল্পে ঋণ সহায়তা কর্মসূচির আওতায় কৃষিভিত্তিক শিল্প স্থাপন, কৃষিভিত্তিক শিল্পে চলতি মূলধন ঋণ/ব্যবসায় নগদ ঋণ, এসএমই খাতে চলতি মূলধন ঋণ/ব্যবসায় নগদ ঋণ, কনজ্যুমার’স ক্রেডিট স্কিম, স্থায়ী আমানতের বিপরীতে ঋণ এবং এসডিপিএস-এর বিপরীতে ঋণ। আনসার ভিডিপি ব্যাংক পরিচালিত কৃষিভিত্তিক শিল্পের জন্য ঋণ সহায়তা কর্মসূচির মূল উদ্দ্যেশ্য হলো কৃষিভিত্তিক প্রকল্পের সাথে সম্পৃক্ত আয়বর্ধক কর্মকান্ডে ঋণ সহায়তা প্রদান করা এবং ছোট আকারের কৃষিভিত্তিক প্রকল্পে অগ্রধিকার ভিত্তিতে ঋণ সহায়তা প্রদান করা।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে কনজ্যুমারস ক্রেডিট ঋণ বিতরণ কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। মার্চ ২০১০ পর্যন্ত এ খাতে ১৩৩ মিলিয়ন টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। এদিকে ব্যাংকের ঋণ গ্রহীতাদের জন্য ১ জুলাই ২০০৩ তারিখ থেকে ঋণ বীমা তহবিল গঠন করা হয়েছে। ঋণ গ্রহীতারা ঋণের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে চাঁদা প্রদান করে থাকে। কোনো ঋণ গ্রহীতা মৃত্যুবরণ করলে ও তাঁর ওয়ারিশগণ ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে ঋণ বীমা তহবিল থেকে অপরিশোধিত ঋণ সমন্বয় করা হয়ে থাকে।
[মোহাম্মদ আবদুল মজিদ]