শাহ তুরকান মাজার
শাহ তুরকান মাযার দক্ষিণমুখী ইটের তৈরি একটি গম্বুজাকৃতির কাঠামো। এর মধ্যে কিংবদন্তির মুসলিম দরবেশ শাহ তুরকান শহীদের মরদেহ রাখা হয়েছিল বলে বিশ্বাস করা হয়। এটি বগুড়া জেলার শেরপুরে/মোর্চা করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে স্থাপিত। এ স্থানটি বগুড়া শহরের প্রায় ২৫.৭৪ কি.মি. দক্ষিণে এবং অধিকতর বিখ্যাত তিন গম্বুজবিশিষ্ট খেরুয়া মসজিদের (১৫৮২ খ্রি) প্রায় ১.৬০ কিমি. পূর্বে অবস্থিত।
১.৮৩ মিটার উঁচুতে ১২ বাহুবিশিষ্ট একটি মঞ্চে স্থাপিত এ মাজারের পূর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণদিকে তিনটি নিচু প্রবেশদ্বার আছে। এ প্রবেশদ্বারগুলিতে রয়েছে পাথরের গোবরাট। গোবরাটগুলি ছিল চুন ও রঙের ধারাবাহিক প্রলেপে কঠিনভাবে আবৃত। সমাধি ঘরের ভেতরে আছে চুন-সুরকি দ্বারা নির্মিত একটি কবর এবং বৈচিত্র্য আনার জন্য এর কোণাগুলিতে স্থাপন করা হয়েছে চারটি সরু মিনার।
জনশ্রুতি অনুযায়ী, বল্লালসেনের বিরুদ্ধে শাহ তুরকান যুদ্ধে লিপ্ত হন এবং যুদ্ধে তিনি শহীদ হন। তাঁর বিচ্ছিন্ন মাথা শরীর থেকে প্রায় ০.৮০ কিমি দূরে পতিত হয় এবং মাথা ও শরীর আলাদাভাবে কবর দেওয়া হয়। শরীর যেখানে কবর দেওয়া হয় সেস্থান ‘ধর (শরীর) মোকাম’ এবং মাথা যেখানে কবর দেওয়া হয় সেস্থান ‘শির (মাথা) মোকাম’ বলে পরিচিত। স্থানীয় লোকেরা এ কবরদুটিকে গভীরভাবে শ্রদ্ধা করে।
ভক্তরা মাজারের উপর বারবার চুন ও রঙের প্রলেপ দেওয়ায় তা এমনভাবে ঢেকে গেছে যে, এখানে কার কবর রয়েছে তা উদ্ঘাটনে কোন সম্ভাব্য লিপি প্রমাণ বা বিশ্বাসযোগ্য কোন যোগসূত্র নির্ণয়ের কোন সম্ভাবনাই বর্তমানে আর নেই। বল্লালসেনের সাথে শাহ তুরকানের যুদ্ধের কাহিনী বড় জোর একটি কিংবদন্তি হতে পারে। [নাজিমউদ্দীন আহমেদ]