মুস্তফা, কে.জি

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২২:৪৭, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)

মুস্তফা, কে.জি (১৯২৮-২০১০)  সাংবাদিক, কলামিস্ট, ভাষা সৈনিক, সাবেক রাষ্ট্রদূত। পুরো নাম খোন্দকার গোলাম মোস্তফা। ১৯২৮ সালে সিরাজগঞ্জের কুড়িপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা খোন্দকার ওয়াসিউজ্জামান এবং মা তাহিয়াতুন্নেসা। তিনি সিরাজগঞ্জের বনোয়ারীলাল বিদ্যালয় থেকে ১৯৪৪ সালে মাধ্যমিক পাস করেন এবং প্রথমে পাবনা  এডওয়ার্ড কলেজ ও পরে কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে ইন্টারমেডিয়েট পড়েন। কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে এক সঙ্গে পড়াশোনার সূত্রে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে পরিচিত হন এবং অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫১ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বি.এ ডিগ্রি লাভ করেন। এম.এ পাঠকালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর সাথে যুক্ত হন এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হন। কে.জি মুস্তাফা ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৭ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন।

দেশ বিভাগের আগে থেকেই ইসলামিয়া কলেজে পড়াকালীন তিনি পেশা হিসাবে সাংবাদিকতাকে গ্রহণ করেন ও কলকাতার দৈনিক আজাদ পত্রিকায় যোগ দেন। পরবর্তীকালে তিনি দৈনিক ইনসাফ, দৈনিক ইত্তেফাক, বাংলাদেশ অবজারভার, দৈনিক পূর্বকোণ ও সংবাদ পত্রিকায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। নববই দশকের দ্বিতীয়ার্ধে তিনি দৈনিক মুক্তকণ্ঠ নামের একটি পত্রিকার সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি তৎকালীন পাকিস্তান ফেডারেল জার্নালিস্টস ইউনিয়নের সভাপতি এবং স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন।

এছাড়া সাপ্তাহিক ইরাক টুডে ও ডেইলি বাগদাদ পত্রিকার প্রতিনিধি হিসাবেও তিনি কাজ করেন। কে.জি মুস্তাফা ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণের স্বীকৃতিস্বরূপ সম্মানজনক একুশে পদক লাভ করেন। এছাড়া সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেন।

কে.জি মুস্তাফা


দেশের সাংবাদিকতার উন্নয়ন ও বিকাশে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। সাংবাদিক নেতা হিসাবেও তিনি দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন।

কে.জি মুস্তফা বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত লেবাননে এবং ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ইরাকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দীর্ঘকাল কমিউনিস্ট আন্দোলনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। তিনি ২০১০ সালের ১৩ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন।

[সিদ্দিক মাহমুদুর রহমান]