মানিক, সাইফউদ্দিন আহমেদ

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২২:৪২, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)

মানিক, সাইফউদ্দিন আহমেদ (১৩৩৯-২০০৮)  রাজনীতিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। সাইফউদ্দিন আহমেদ ১৯৩৯ সালের ২৪ জুন পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মৌলবি সিদ্দিক আহমদ ছিলেন একজন শিক্ষক এবং মাতা আলিফা খাতুন। তাঁর পৈত্রিক নিবাস ফেনী জেলার পরশুরাম থানার ধনিকুন্ডা গ্রামে।

দেশ বিভাগের পর সাইফউদ্দিন মানিক ১৯৪৮ সালে পিতামাতার সঙ্গে ঢাকায় এসে গোপীবাগে বসবাস শুরু করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি ঢাকার মুসলিম গভর্নমেন্ট হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৫৬ সালে ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন। বাল্যকাল থেকেই খেলাধূলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে তিনি অনুরাগী ছিলেন। তিনি ছিলেন ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাব এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি সংস্কৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

সাইফউদ্দিন মানিক বিশ শতকের ষাটের দশকের প্রখ্যাত ছাত্রনেতা। ১৯৬২ সালে আইয়ুব খানের সামরিক শাসন ও শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট বিরোধী যে ছাত্র আন্দোলন গড়ে ওঠে তার সঙ্গে তিনি সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন। এক পর্যায়ে তিনি আন্দোলনের প্রথম সারির নেতা ছিলেন। তিনি ১৯৬৫ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৬৬ সালে ছাত্র ইউনিয়ন এক অংশের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি ছিলেন আইউব বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের ১১-দফা কর্মসূচির অন্যতম প্রণেতা, ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা এবং উনসত্তুরের গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক।

১৯৬৯ সালে তিনি শ্রমিক আন্দোলনে যোগ দেন। এ বছর ডেমরার বাওয়ানি পাটকল শ্রমিক ইউনিয়ন তাঁকে সভাপতি নির্বাচিত করে। পরবর্তীকালে তিনি ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র নামে একটি শ্রমিক সংগঠন গড়ে তোলেন এবং এর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

সাইফউদ্দিন আহমেদ মানিক


মুক্তিযুদ্ধে তিনি ছিলেন ন্যাপ-সিপিবি-ছাত্র ইউনিয়ন কর্মিদের নিয়ে গঠিত যৌথ গেরিলা বাহিনীর অন্যতম সংগঠক। স্বাধীনতা-উত্তর কালে তিনি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৭ সালে তিনি সিপিবির সাধারণ সম্পাদক এবং পরে সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯৪ সালে ‘গণফোরাম’ নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠনে তিনি উদ্যোগী ভূমিকা নেন এবং ১৯৯৬ সাল থেকে আমৃত্যু তিনি এ দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০০৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় তাঁর মৃত্যু হয়।  [চপল বাশার]