মহেশখালী উপজেলা
মহেশখালী উপজেলা (কক্সবাজার জেলা) আয়তন: ৩৬২.১৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২১°২৮´ থেকে ২১°৪৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫১´ থেকে ৯১°৫৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে চকোরিয়া উপজেলা, দক্ষিণে কক্সবাজার সদর ও বঙ্গোপসাগর, পূর্বে চকোরিয়া ও কক্সবাজার সদর উপজেলা, পশ্চিমে কুতুবদিয়া উপজেলা এবং বঙ্গোপসাগর।
জনসংখ্যা ২৫৬৫৪৬; পুরুষ ১৩৫২২২, মহিলা ১২১৩২৪। মুসলিম ২৩৮১৫৯, হিন্দু ১৫৭৮১, বৌদ্ধ ৩৪, খ্রিস্টান ২৫৫৭ এবং অন্যান্য ১৫।
জলাশয় মহেশখালী চ্যানেল, কোহালিয়া নদী এবং বদ্দার খাল, নোয়াচি খাল ও করিয়া খাল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন মহেশখালী থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৫ ডিসেম্বর ১৯৮৩ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ৯ | ৩১ | ১৭০ | ১৩৯৫৭ | ২৪২৫৮৯ | ৭০৮ | ৪০.৯৭ | ২১.৩৯ |
উপজেলা শহর | ||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) |
২.৯৩ | ১ | ১৩৯৫৭ | ৪৭৬৩ | ৪০.৯৭ |
ইউনিয়ন | ||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |
পুরুষ | মহিলা | |||
কালারমারছড়া ৫৯ | ৭১৩২ | ২২৬৯৩ | ২০১৫৭ | ২০.৩০ |
কুতুবজুম ৬২ | ২৬২৬ | ২৬২২ | ২৩২২ | ৮.৯৯ |
গোরকঘাটা ৩৫ | ৭২৫ | ১১৬২১ | ১০২৮৬ | ৪০.০৪ |
ছোট মহেশখালী ১৮ | ১১৭০৫ | ১০৪৯৮ | ৯৪২২ | ২১.১৪ |
ধলঘাটা ২৩ | ৫৫১১ | ৬৩০১ | ৫২৮৩ | ৩৫.৪০ |
বড় মহেশখালী ১১ | ৩৭১৪ | ১৯৪৬১ | ১৭৪৬৪ | ২২.৯৭ |
মাতারবাড়ী ৭১ | ৬৫৩২ | ১৯০৯০ | ১৭২১৯ | ২০.৬০ |
শাপলাপুর ৮৩ | ৩৩৮০৩ | ১৩২৬৪ | ১২০১৬ | ১৬.১৭ |
হোয়ানক ৪৭ | ৯১৪৬ | ২১৫৭৯ | ১৯৬২৯ | ১৯.৪১ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ আদিনাথ মন্দির (মৈনাক পাহাড়, গোরকঘাটা ইউনিয়ন)।
ঐতিহাসিক ঘটনাবলি পর্তুগীজ পরিব্রাজক সিজার ফ্রেডারিকের বিবরণ এবং ড. সুনীতি ভূষণ কানুনগোর মতে ১৫৫৯ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ফলে মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মহেশখালী দ্বীপ সৃষ্টি হয়।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২১০, মন্দির ২৬, বৌদ্ধ কেয়াং ৬।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ২২.৫%; পুরুষ ২৫.৫%, মহিলা ১৯.৩%। কলেজ ১০, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৩, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭১, কেজি স্কুল ১২, মাদ্রাসা ৩৩। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মহেশখালী কলেজ (১৯৮৫), মহেশখালী সরকারি ভার্নাকুলার স্কুল (১৯২৩), মহেশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৬)।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী মহেশখালী বার্তা, আলোর দ্বীপ।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, ক্লাব ১৩।
দর্শণীয় স্থান আদিনাথ মন্দির, মৈনাক পর্বত, সোনাদিয়া দ্বীপ, রাখাইনদের কেয়াং।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬১.৯২%, অকৃষি শ্রমিক ৭.২৬%, ব্যবসা ১৫.৪৬%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৪৯%, চাকরি ২.৭৪%, নির্মাণ ০.৫৬%, ধর্মীয় সেবা ০.২০%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৪৫% এবং অন্যান্য ৯.৯২%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৩৩.২৩%, ভূমিহীন ৬৬.৭৭%। শহরে ২০.৯৩% এবং গ্রামে ৩৩.৯৪% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি মুক্তার চাষ।
প্রধান ফল-ফলাদিব আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, পেঁপে, নারিকেল।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৯১ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৯১ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন গরু ও ঘোড়ার গাড়ি, পাল্কি।
শিল্প ও কলকারখানা লবণ কারখানা, মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প, ময়দাকল, বরফকল।
কুটিরশিল্প মৃৎশিল্প, হস্তশিল্প, তাঁতশিল্প।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৫, মেলা ১। গোরকঘাটা, বড় মহেশখালী, কালারমার ছড়া, টাইমবাজার এবং আদিনাথ মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য লবণ, চিংড়ি, সামুদ্রিক মাছ, শুঁটকি মাছ।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৩.৩৪% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯১.৮৪%, ট্যাপ ০.৪৬%, পুকুর ১.০৯% এবং অন্যান্য ৬.৬১%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ২৫.৫৫% (শহরে ৫৯.১৬% এবং গ্রামে ২৩.৫৯%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৬.২১% (শহরে ২৮.২৪% এবং গ্রামে ৫৭.৪৮%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১৮.২৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৬, প্যাথোলজি ৪।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ২৯ এপ্রিল ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে মহেশখালী উপজেলার অনেক লোকের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে এবং গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। অনেক স্কুল কলেজ বিধ্বস্ত হয়।
এনজিও কারিতাস, ক্রিশ্চিয়ান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ, প্রিজম বাংলাদেশ। [মো. জসীম উদ্দিন]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১; মহেশখালী উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।