ভেদরগঞ্জ উপজেলা
ভেদরগঞ্জ উপজেলা (শরিয়তপুর জেলা) আয়তন: ৩১৩.৩৯ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°০৮´ থেকে ২৩°২৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°২৩´ থেকে ৯০°৩৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে মুন্সিগঞ্জ সদর এবং মতলব উত্তর উপজেলা, দক্ষিণে ডামুড্যা ও গোঁসাইরহাট উপজেলা, পূর্বে চাঁদপুর সদর উপজেলা এবং মেঘনা নদী, পশ্চিমে নড়িয়া এবং শরিয়তপুর সদর উপজেলা।
জনসংখ্য ২৩৭৭৬৯; পুরুষ ১১৯৫৮৯, মহিলা ১১৮১৮০। মুসলিম ২৩১৪৩৫, হিন্দু ৬২৭৬, বৌদ্ধ ১০ এবং অন্যান্য ৪৮।
জলাশয় পদ্মা ও মেঘনা নদী এবং বাংলাবাজার খাল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন ভেদরগঞ্জ থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে এবং পৌরসভা গঠিত হয় ১৯৯৭ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ১৩ | ৮৭ | ৩৭১ | ৭৮২১ | ২২৯৯৪৮ | ৭৫৮ | ৬৮.৫ | ৩৯.৪ |
পৌরসভা | |||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) |
২.১৫ | ৯ | ১২ | ৬৮৯৯ | ৩২০৯ | ৬৮.৬৯ |
উপজেলা শহর | ||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) |
০.৬০ | ১ | ৯২২ | ১৫৩৭ | ৬৬.৯৯ |
ইউনিয়ন | ||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |
পুরুষ | মহিলা | |||
আরশি নগর ১২ | ৫১৬৪ | ৮৩৭৪ | ৮০১৭ | ৩৯.৩০ |
কাচিকাটা ৫১ | ১৪৪৮৪ | ১৩৫২১ | ১২৫৮১ | ২৬.৩১ |
চর কুমারিয়া ১৭ | ৭৯৩২ | ৭৩০৪ | ৭২০০ | ৪৪.২৩ |
চর সেনসাস ২৮ | ৫০৩৮ | ৮৫৬১ | ৮২৭০ | ২৫.৭৩ |
চরভাগা ১৫ | ৪১৫২ | ১১৭৭৭ | ১০৬০৬ | ৩৮.৫৭ |
ছয়গাঁও ২৫ | ৩৯৭৩ | ৬৮৪৯ | ৭১১২ | ৫৪.৯৮ |
তারাবুনিয়া ৯৪ | ১৪২৭১ | ১০৫৪৩ | ১০৮০৮ | ২২.৭০ |
দক্ষিণ তারাবুনিয়া ৩২ | ২৭৮৫ | ৮২৬৯ | ৭৫৩৭ | ২২.৪০ |
দিগর মহিষখালী ৪৩ | ৫৭৬৮ | ১০০৫৭ | ১০২৩৭ | ৪৪.৬৯ |
নারায়ণপুর ৬৯ | ১৬৩১ | ৩৮৩৫ | ৩৯৯১ | ৫৬.১৭ |
মহিসার ৬০ | ৩২৪০ | ৭২৯১ | ৭৮৪৮ | ৫৭.৬২ |
রামভদ্রপুর ৭৭ | ৩৬৯০ | ৭৬৭৬ | ৮৩১৬ | ৫৫.৪৬ |
সখিপুর ৮৬ | ৫৬৮২ | ১১৭৬৮ | ১২২২২ | ৪২.৫০ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ মহিসার দিগম্বরী মায়ের আশ্রম।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভেদরগঞ্জ উপজেলায় পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা ব্যাপক হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। পাকবাহিনীর সাথে ২টি খন্ডযুদ্ধ এবং ১টি সম্মুখ লড়াইয়ে বহুসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ১ (মহিসার); স্মৃতিসৌধ ১ (ভেদরগঞ্জ সদর)।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৪৫০, মন্দির ১৫, আশ্রম ১। উল্লেখযোগ্য ধমীয় প্রতিষ্ঠান: কার্তিকপুর জরিনা ট্রাস্ট জামে মসজিদ, উপজেলা জামে মসজিদ।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪০.৪%; পুরুষ ৪২.৬%, মহিলা ৩৮.২%। কলেজ ৪, প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০৬, কমিউনিটি বিদ্যালয় ২৩, কিন্ডার গার্টেন ১৫, মাদ্রাসা ৯। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: এম এ ডিগ্রি কলেজ, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ১, হাজী শরীয়তুল্লাহ ডিগ্রি কলেজ, ভেদরগঞ্জ হেডকোয়ার্টার পাইলট উচ্চবিদ্যালয়।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ১০, লাইব্রেরি ২, কমিউনিটি সেন্টার ২, সংগীত একাডেমি ১, শিল্পকলা একাডেমি ১, সিনেমা হল ১, অডিটোরিয়াম ১, নাট্যদল ১, খেলার মাঠ ১০।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৭.৯৮%, অকৃষি শ্রমিক ২.২৪%, শিল্প ০.৫৯%, ব্যবসা ১১.৬৪%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৮৯%, চাকরি ৫.৬১%, নির্মাণ ১.০৪%, ধর্মীয় সেবা ০.২৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১.৫৭% এবং অন্যান্য ৭.২০%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৬.৮৩%, ভূমিহীন ৩৩.১৭%। শহরে ৪৭.২৭% এবং গ্রামে ৬৭.৫০% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, সরিষা, গম, আখ, পিঁয়াজ, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, তিসি, যব।
প্রধান ফল-ফলাদিব আম, জাম, কাঁঠাল, কুল।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ২৫, গবাদিপশু ৪৫, হাঁস-মুরগি ৫৮।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১২৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৭১ কিমি; নৌপথ ২ নটিক্যাল মাইল। কালভার্ট ৯, ব্রিজ ৮।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি।
শিল্পকারখানা চালকল, আটাকল, বরফকল, করাতকল।
কুটিরশিল্প লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৭, মেলা ১। ভেদরগঞ্জ বাজার, সেনের বাজার এবং মহিসার মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য পাট।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৬.৮৬% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯২.১৪%, পুকুর ২.৩০%, ট্যাপ ০.২৩% এবং অন্যান্য ৫.৩৩%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ২৬.৪৮% (গ্রামে ২৪.৪৯% ও শহরে ৮৫.০৫%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৬১.৮৯% (গ্রামে ৬৩.৫৯% ও শহরে ১২.০৫%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১১.৬২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১০, ক্লিনিক ২০, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ১, পশু চিকিৎসা কেন্দ্র ১।
এনজিও আশা, ব্র্যাক, কেয়ার। [বিল্লাল হোসেন]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ভেদরগঞ্জ উপজেলার মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০১০।