বোয়ালখালী উপজেলা
বোয়ালখালী উপজেলা (চট্টগ্রাম জেলা) আয়তন: ১৪৫.৪৪ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°২০´ থেকে ২২°২৫´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫২´ থেকে ৯২°০৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা, দক্ষিণে পটিয়া উপজেলা, পূর্বে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা, পশ্চিমে চান্দগাঁও থানা ও কর্ণফুলি নদী।
জনসংখ্যা ২৮৭১৭৮; পুরুষ ১৪৮৪৬৭, মহিলা ১৩৮৭১১। মুসলিম ২১৮০৪৫, হিন্দু ৬২৫৯৮, বৌদ্ধ ২৯২, খ্রিস্টান ৬০৭৯ এবং অন্যান্য ১৬৪।
জলাশয় প্রধান নদী: কর্ণফুলি।
প্রশাসন বোয়ালখালী থানা গঠিত হয় ১৯১০ সালের ৯ আগস্ট এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালের ৩ জুলাই।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
- | ১০ | ৩৫ | ৩৪ | ৫১৬৯৫ | ২৩৫৪৮৩ | ১৯৭৪ | ৬৮.৭২ | ৬৯.৩৯ |
উপজেলা শহর | ||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) |
১৫.৩৮ | ৩ | ৫১৬৯৫ | ৩৩৬১ | ৬৮.৭ |
ইউনিয়ন | ||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |
পুরুষ | মহিলা | |||
আমচিয়া ১৯ | ৩২১৭ | ৬২৮৭ | ৫৭৬৯ | ৭৭.০৭ |
আহলা করলডাংগা ৯ | ৯২৭৬ | ৮৭৩২ | ৮২৪৫ | ৬৭.৮৭ |
কঁধুরখীল ৪৭ | ২৪৪৫ | ১৫০৯১ | ১৩৪৪১ | ৭৬.৬৫ |
চরণদ্বীপ ২৮ | ১৪৯৭ | ১১২৪৯ | ১০৫০১ | ৭১.০৭ |
পূর্ব গোমদন্ডী ৩৮ | ১৭২০ | ১৪৪২৩ | ১৩৯৩৫ | ৬৬.১৫ |
পোপদিয়া ৫৭ | ২৫৬৪ | ১২৬৩৯ | ১০৯০৮ | ৭৭.৮৪ |
পশ্চিম গোমদন্ডী | ২৫৬০ | ১৭৩৪৬ | ১৬৫৪৭ | ৪৭.২২ |
শাকপুরা ৭৬ | ২০৮২ | ১২০৯৭ | ১১২৪০ | ৭১.৮১ |
শ্রীপুর খরণদ্বীপ ৮৫ | ৪৫১৩ | ১১৪৪৭ | ১১২৫৮ | ৬৪.৪৬ |
সারোয়াতলী ৬৬ | ২৬৮৬ | ১২৬৩৬ | ১১৬৯২ | ৭৩.৮১ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ শ্রীপুর বুড়া মসজিদ, দেওয়ান ভিটা (আ. ১৭১১ খ্রি:), হযরত বু-আলী কালন্দর শাহে্র (রা:) মাযার (কড়লডাঙ্গা), কালাচাঁন ঠাকুর বাড়ি (পোপদিয়া), লালার দিঘি (কঁধুরখীল), কানুনগো পাড়া শ্যামরায় মন্দির, মেদস্ আশ্রম।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে পাকবাহিনীর কালুরঘাট, ফকিরনী দিঘির পাড় ও কানুনগো পাড়া প্রভৃতি জায়গায় সম্মুখ সমরে অনেকে হতাহত হয়। ১৩ অক্টোবর কঁধুররখীল দুর্গাবাড়ি প্রাঙ্গণে পাকবাহিনী গণহত্যা সংঘটিত করে। এছাড়া তারা এ উপজেলায় ব্যাপক অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও নির্যাতন চালায়।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন স্মৃতিস্তম্ভ ২; শহীদ শান্তিময় খাস্তগীর ও শহীদ দিলীপ চৌধুরীর স্মৃতিস্তম্ভ (স্যার আশুতোষ কলেজ সংলগ্ন, কানুনগো পাড়া)।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ১৯৮, মন্দির ৪০, গির্জা ১, প্যাগোডা ১৮, মাযার ১৫।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৬৯.০৬%; পুরুষ ৭২.০৬%, মহিলা ৬৫.৮৭%। উল্লেলখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: স্যার আশুতোষ ডিগ্রি কলেজ (১৯৩৯), বোয়ালখালী সিরাজুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজ (১৯৭০), কঁধুরখীল জলিল আম্বিয়া ডিগ্রি কলেজ (১৯৭০), পূর্ণচন্দ্র সেন সারোয়াতলী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮০), শাকপুরা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৫), কানুনগো পাড়া ডক্টর বিভূতিভূষণ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), চরণদ্বীপ দেওয়ান বিবি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১), মুক্তকেশী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৮), শাকপুরা প্রবর্তক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩০), শ্রী অরবিন্দ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৩), খিতাপচর আজিজিয়া মাবুদিয়া আলিয়া মাদ্রাসা (১৯৭০)।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী মাসিক: বোয়ালখালী, বোয়ালখালী বার্তা (অবলুপ্ত), সমাজচিত্র; পাক্ষিক: আলোকিত বোয়ালখালী।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১৫, ক্লাব ১, ক্রীড়া সংস্থা ১, মহিলা সমিতি ১।
বিশেষ আকর্ষণ ঐতিহাসিক কড়লডাংগা পাহাড়, কর্ণফুলি নদীর বিস্তৃত তীর।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ১৮.০৬%, অকৃষি শ্রমিক ৪.৪০%, শিল্প ০.৫২%, ব্যবসা ১৯.২৯%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৪৯%, চাকরি ২২.৫৪%, নির্মাণ ১.৩৪%, ধর্মীয় সেবা ০.৫০%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১২% এবং অন্যান্য ১৭.৮৬%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৩৯.০৭%, ভূমিহীন ৬০.৯৩%।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, আলু, পাট, তামাক।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি আখ।
প্রধান ফল-ফলাদিব পেয়ারা, তাল।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ২০, গবাদিপশু ২৫, ও হাঁস-মুরগি৩৮৫।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৫৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৪০ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৯১ কিমি; রেলপথ ৯ কিমি; নদীপথ ১০.৭৯ নটিক্যাল মাইল।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা সুতাকল, কাগজকল, বরফকল, পোশাকশিল্প, লবণশিল্প, স্টীল কারখানা, নৌযান নির্মাণ কারখানা।
কুটিরশিল্প বুননশিল্প, মৃৎশিল্প, চুনশিল্প।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৭, মেলা ৫। মুরাদ মুন্সির হাট, নূরুল্লা মুন্সির হাট, কালাইয়ার হাট, চৌধুরী হাট, জমাদার হাট, অন্নপূর্ণার হাট, চাঁদার হাট, কানুনগো পাড়া মাষ্টার বাজার এবং হরিমন্দির বৈশাখী মেলা, কালাচাঁন ঠাকুরবাড়ী মেলা ও সূর্যব্রত মেলা উল্লেলখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য কাপড়, মুরগি, দুধ।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৬১.৯৬% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৩.৪৩%, পুকুর ২.২৫%, ট্যাপ ০.৩৭% এবং অন্যান্য ৩.৯৫%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫৬.৪৬% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৮.০৮% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৫.৪৬% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৬, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৯।
এনজিও আশা, প্রশিকা। [গোলাম কিবরিয়া ভূইয়া]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বোয়ালখালী উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।