ফারাক্কা বাঁধ
ফারাক্কা বাঁধ (Farakka Barrage) কলকাতা বন্দরকে পলির হাত থেকে রক্ষার উদ্দেশ্যে ভারত কর্তৃক প্রায় ১৮ মাইল উজানে মনোহরপুরের কাছে নির্মিত ফারাক্কা বাঁধ বাংলাদেশে বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ব্যাপক ও ভয়াবহ ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করেছে। ভারত কর্তৃক গঙ্গার পানির একতরফা প্রত্যাহার বাংলাদেশের কেবল প্রতিবেশ ও পরিবেশ ব্যবস্থাই ধ্বংস করছে না বরং এ দেশের কৃষি, শিল্প, বনসম্পদ ও নৌযোগাযোগের মতো অর্থনৈতিক খাতগুলির ওপরও হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। ১৯৫১ সালের ২৯ অক্টোবর তৎকালীন পাকিস্তান সরকার প্রথমবারের মতো পশ্চিমবঙ্গে ভাগিরথী নদীকে পুনরুজ্জীবিত করতে শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গানদী থেকে বিপুল পরিমাণ পানি প্রত্যাহারের ভারতীয় পরিকল্পনা সর্ম্পকে জানতে চাইলে গঙ্গার বিষয়টি সবার নজরে আসে। ১৯৫২ সালে প্রত্যুত্তরে ভারত জানায় যে, পরিকল্পনাটি মাত্র প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে পাকিস্তানের উদ্বেগ সম্পূর্ণ অনুমান নির্ভর। এ ঘটনা থেকেই গঙ্গার জলবণ্টন সংক্রান্ত আলোচনার দীর্ঘ ইতিহাসের সূত্রপাত। ১৯৭০ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান ও ভারত সরকার বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে সরকার প্রধান পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে গঙ্গার প্রবাহ বণ্টনের ব্যাপারে বহুবার আলোচনায় বসেছে। ইতোমধ্যে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের প্রায় ১৮ কিমি উজানে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ করেছে।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সরকার ভারত সরকারের সঙ্গে গঙ্গা প্রশ্নে জরুরি আন্তরিক আলোচনা শুরু করে। ১৯৭২ সালে গঠিত হয় ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন (JRC)। ১৯৭৪ সালের ১৬ মে ভারত ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীদ্বয় এক যৌথ ঘোষণায় দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন যে, ফারাক্কা প্রকল্প চালু করার আগে গঙ্গায় বছরে সর্বনিম্ন প্রবাহের সময়কালে নদীর জলবণ্টন প্রশ্নে তারা পারস্পরিক গ্রহণযোগ্য একটি মতৈক্যে উপনীত হবেন। ঐ শীর্ষ বৈঠকে আরও স্থির হয় যে, শুষ্ক মৌসুমের পানি ভাগাভাগির পর্যায়ে দুই দেশের মধ্যে কোন চুক্তিতে উপনীত হওয়ার আগে ফারাক্কা বাঁধ চালু করা হবে না। ১৯৭৫ সালে ভারত বাংলাদেশকে জানায় যে, ফারাক্কা বাঁধের ফিডার ক্যানাল পরীক্ষা করা তাদের প্রয়োজন। সে সময় ভারত ১৯৭৫ সালের ২১ এপ্রিল থেকে ৩১ মে পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ১০ দিন ফারাক্কা থেকে ৩১০-৪৫০ কিউবিক মিটার/সেকেন্ড গঙ্গার প্রবাহ প্রত্যাহার করার ব্যাপারে বাংলাদেশের অনুমতি প্রার্থনা করে। বাংলাদেশ সরল বিশ্বাসে এতে সম্মতি জ্ঞাপন করে। ভারত বাঁধ চালু করে দেয় এবং নির্ধারিত সময়ের পরেও একতরফাভাবে গঙ্গার গতি পরিবর্তন করতে থাকে যা ১৯৭৬ সালের পুরা শুষ্ক মৌসুম পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এর উদ্দেশ্য ছিল কলকাতা বন্দরের নাব্যতা উন্নয়নে পলি ধুয়ে নিতে শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গানদী থেকে পশ্চিমবঙ্গের ভাগিরথী-হুগলী নদীতে ১১৩০ কিউবিক মিটারের বেশি পানি পৌঁছে দেওয়া।
ভারতকে এ কাজ থেকে বিরত করতে ব্যর্থ হয়ে বাংলাদেশ এ ব্যাপারে জাতিসংঘের শরণাপন্ন হয়। ১৯৭৬ সালের ২৬ নভেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে একটি সর্বসম্মত বিবৃতি গৃহীত হয় যাতে অন্যান্যের মধ্যে ভারতকে সমস্যার একটি ন্যায্য ও দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনায় বসার নির্দেশ দেওয়া হয়। এর জের ধরে কয়েক দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় এবং ১৯৭৭ সালের ৫ নভেম্বর দুই দেশ ফারাক্কায় প্রাপ্ত শুষ্ক মৌসুমের জলবণ্টনের ওপর ৫ বছর মেয়াদি (১৯৭৮-৮২) একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। ১৯৮২ সালের অক্টোবর মাসে দুই দেশের মধ্যে ১৯৮৩ ও ৮৪ সালের জন্য গঙ্গার জলবণ্টন সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। কোন সমঝোতা চুক্তি না থাকায় ১৯৮৫ সালে গঙ্গার জলের ভাগবাটোয়ারা হয় নি। ১৯৮৫ সালের নভেম্বর মাসে দুই দেশের মধ্যে ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৮-এই তিন বছরের জন্য পানি বণ্টনের ওপর আরেকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। বণ্টন সংক্রান্ত এই অস্থায়ী ব্যবস্থার কারণে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশাল এলাকায় বিভিন্ন খাতে গঙ্গার পানির আরও অর্থবহ ও সর্বোচ্চ ব্যবহারের উদ্দেশ্যে কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে নি।
১৯৮৯ সালের পর শুষ্ক মৌসুম থেকে জল ভাগাভাগি সংক্রান্ত কোন আইনানুগ ব্যবস্থা চালু ছিল না। এই সুযোগে ভারত শুষ্ক মৌসুমে নদীর পানি ব্যাপকভাবে একতরফা প্রত্যাহার শুরু করে। ফলে বাংলাদেশে গঙ্গার প্রবাহ দারুণভাবে হ্রাস পায়। হিসাবে দেখা যায় যে, প্রাক-ফারাক্কা আমলে মার্চ মাসে হার্ডিঞ্জ সেতুর কাছে যেখানে গঙ্গার প্রবাহ ছিল প্রতি সেকেন্ডে ১৯৮০ কিউবিক মিটার, ১৯৯৩ সালে তা কমে দাঁড়ায় মাত্র ২৬১ কিউবিক মিটারে। ১৯৯২ সালের মে মাসে দুই দেশের সরকার প্রধানের মধ্যে বৈঠকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী দ্ব্যর্থহীনভাবে আশ্বাস দেন যে, ফারাক্কায় গঙ্গার পানি সাম্যতার ভিত্তিতে বণ্টনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে অযথা হয়রানি থেকে রেহাই দিতে সম্ভাব্য সব প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হবে। সেই থেকে দুই দেশের মধ্যে দুটি মন্ত্রী পর্যায়ের ও দুটি সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। যদিও বণ্টন সংক্রান্ত কোন চুক্তিতে উপনীত হওয়া যায় নি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৩ সালের এপ্রিল মাসে আবার বৈঠকে মিলিত হন কিন্তু বাংলাদেশকে অযথা হয়রানি থেকে মুক্তি দেওয়ার ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি পূর্বাপর অপূর্ণই থেকে গেল। পরিশেষে ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকার ভারতের সঙ্গে গঙ্গার পানি বণ্টন সংক্রান্ত একটি চুক্তিতে উপনীত হতে সক্ষম হয়।
সংকট ভারত কর্তৃক শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গার পানির ব্যাপক প্রত্যাহার বাংলাদেশের গঙ্গা-নির্ভর এলাকার জনগণের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। মনুষ্যসৃষ্ট এই দুর্বিপাক দেশের সমগ্র দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে নিদারুণ আঘাত হেনেছে। ভারত কর্তৃক বছরের পর বছর শুষ্ক মৌসুমের মূল্যবান পানি সম্পদ প্রত্যাহারের ফলে বাংলাদেশকে আজও কৃষি, মৎস্য, বনজ, শিল্প, নৌপরিবহণ, জলসরবরাহ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বাংলাদেশের এসব ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ ক্ষতির আনুমানিক পরিমাণ প্রায় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। পরোক্ষ ক্ষতি হিসাবে আনলে এই পরিমাণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
জলবিদ্যা ও ভূ-প্রকৃতি বাংলাদেশে গঙ্গা ও এর শাখানদীসমূহের জলবিদ্যা ও ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যসমূহ ফারাক্কা-উত্তর বছরগুলিতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গঙ্গার প্রবাহ হ্রাসের ফলে অত্যধিক পলিময়তার সৃষ্টি হয়েছে যা নদীর বুক ভরাট করে নদীর খাড়ি গুলির পরিবহণ ক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছে। এভাবে বর্ষায় ভয়াবহ বন্যা হচ্ছে। বাংলাদেশে গঙ্গার প্রধান শাখানদী গড়াইয়ের নিষ্কাশন মুখ জানুয়ারির প্রথম ভাগেই ভরাট হয়ে আসে যার ফলে গুরুত্বপূর্ণ এই নদীটি পুরা শুষ্ক মৌসুম জুড়ে শীর্ণকায়া হয়ে থাকে। একদা প্রমত্ত গঙ্গা শুষ্ক মৌসুমে পরিণত হয় অন্তঃর্পলাবী-স্রোতস্বিনীতে।
লবণাক্ততা ফারাক্কা-উত্তর বছরগুলিতে খুলনায় অত্যধিক লবণাক্ততার আক্রমণ আশঙ্কাজনক ও উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অঞ্চলের লবণাক্ততার অনুপ্রবেশ, কেন্দ্রীকরণ ও মেয়াদ সর্বাধিক মাত্রায় নির্ভর করে এই অঞ্চলে বাহিত নিম্নমুখী প্রবাহের পরিমাণ ও মেয়াদের ওপর। শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গার প্রবাহে হ্রাসমান প্রবণতার কারণে এ সময়ে গড়াই -মধুমতি খুব কম পানি পাচ্ছে। ফলে লবণাক্ততা ও জোয়ার সীমা দেশের অভ্যন্তরভাগে প্রবেশ করছে। ১৯৮৩ সালে ৫০০ মাইক্রো-mho (লবণাক্ততা) রেখা কামারখালির প্রায় ১৩ কিমি উত্তরে এবং পসুর নদীর মোহনা থেকে ২৪০ কিমি পর্যন্ত ভিতরে এসে পৌঁছেছে। খুলনায়ও ১৭,১০০ মাইক্রো-mho লবণাক্ততা দৃশ্যমান হয়। কয়েকজন বিশেষজ্ঞ খুলনা এলাকায় রূপসা নদীর জলের উপরিভাগে ৫৬৩.৭৫ মিগ্রা/১ ক্লোরাইড কেন্দ্রীভবনের কথা উল্লেখ করেছেন। স্বাদুপানির প্রবাহ হ্রাস নদী প্রবাহের লবণাক্ততার ওপর কি প্রভাব বিস্তার করে এটি তা ইঙ্গিত করে। শুষ্ক মৌসুমে স্বাদু পানির সরবরাহ হ্রাসের কারণে ভূগর্ভস্থ পানিস্তরে লবণ পানির অনুপ্রবেশ ঘটেছে। হ্রাসমান পৃষ্ঠপ্রবাহ অথবা এই অঞ্চলে জলের উপরিভাগে লবণ পানির অনুপ্রবেশ, পুনঃসঞ্চারণ, প্রত্যাহার ও প্রাকৃতিক অবমুক্তির বেগবান ভারসাম্যকে ক্ষুন্ন করবে। এই অঞ্চলের বর্তমান লবণাক্ততা এখানকার কৃষি, মৎস্য চাষ, রসায়ন ও শিল্প-কলকারখানাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
কৃষি সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত খাত হচ্ছে কৃষি। ফারাক্কা-উত্তর বছরগুলিতে গঙ্গার পানির সীমারেখা দ্রুত নেমে যাওয়ায় এ অঞ্চলের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প গঙ্গা-কপোতাক্ষ প্রকল্পের পাম্পমেশিন চালানো দুরূহ হয়ে উঠেছে। ঐ প্রকল্পের প্রত্যক্ষ এখতিয়ারে ১,২১,৪১০ হেক্টর জমির সেচ নির্ভর করে। গঙ্গার প্রবাহ অত্যধিক নেমে যাওয়ায় প্রকল্পের পাম্পগুলি হয় কর্মহীন অবস্থায় পড়ে আছে নয়ত সামর্থ্যের চেয়ে অনেক কম শক্তিতে চলছে। এছাড়া, মাটির আর্দ্রতা ও মাটির লবণাক্ততার ওপর অত্যধিক চাপ এবং নতুন ভূগর্ভস্থ জলের অভাব সমগ্র দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের কৃষি কাজকে দারুণভাবে ব্যাহত করছে।
মৎস্য সম্পদ মূল গঙ্গানদী ও এর শাখানদীসমূহে পানির সংকট মাছের প্রজননের জন্য প্রয়োজনীয় আদর্শ প্রবাহ, স্রোত অবক্ষেপ, দ্রুতি, মোট দ্রবীভূত ঘনবস্ত্ত ও লবণাক্ততার মাত্রাকে ব্যাহত করেছে। গাঙ্গেয় জলব্যবস্থায় দুই শতাধিক প্রজাতির মিঠাপানির মাছ ও ১৮ প্রজাতির চিংড়ি লালিত হয়। কিন্তু আজ ঐ অঞ্চলে ধৃত মাছের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। ফলে হাজার খানেক জেলে ও মৎস্যজীবী এর ফলে বেকার হয়ে পড়েছে।
নৌপরিবহণ ফারাক্কা-উত্তর আমলে গঙ্গার প্রবাহ সংকট নৌপরিবহণ খাতকেও আঘাত হেনেছে। এখন শুষ্ক মৌসুমে ৩২০ কিলোমিটারের বেশি প্রধান ও মধ্যম নৌপথ বন্ধ রাখতে হয়। যার ফলে শত শত মাঝি মাল্লা কর্মহীন হয়ে আছে।
ভূগর্ভস্থ পানি ফারাক্কা বাঁধের ফলে গঙ্গা-নির্ভর এলাকায় ক্ষীয়মাণ ভূগর্ভস্থ পানি অধিকাংশ স্থানে ৩ মিটারের বেশি নেমে গেছে। মোট দ্রবীভূত ঘনবস্ত্ত, ক্লোরাইড, সালফেট ইত্যাদির ঘনত্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় পানির গুণগত মানও কমে গেছে। ফলে বিশাল এলাকার কৃষিকাজ, কলকারখানা, গার্হস্থ্য ও পৌর জল সরবরাহ এবং মাটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জনগণ ১২০০ mg/l TDS (total dissolved solids) পানীয় জল পান করতে বাধ্য হচ্ছে- যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পানীয় জলের জন্য অনুমোদিত সীমা মাত্র ৫০০ mg/l। জনসাধারণের সার্বিক স্বাস্থ্যের মান এ কারণে হ্রাস পাচ্ছে।
ফারাক্কা-উত্তর সময়কালে ভূগর্ভস্থ পানির গতিপথ ধীরে ধীরে দক্ষিণ থেকে উত্তর দিকে পরিবর্তিত হচ্ছে। গঙ্গানদী বর্তমানে বছরের অধিক সময় ধরে, অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে জুলাই এবং অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর সময়কাল পর্যন্ত আশপাশের ভূগর্ভস্থ জলস্তর থেকে পানি সংগ্রহ করছে আর ভূগর্ভস্থ জলস্তরে অনুভূমিক পুনঃসঞ্চারন ঘটাচ্ছে মাত্র দুই কি তিন মাস। কিন্তু ফারাক্কায় গঙ্গার জল প্রত্যাহার শুরু হওয়ার আগে আশপাশের ভূগর্ভস্থ জলস্তরগুলি গঙ্গা থেকে অধিকতর সময় ধরে সর্বোচ্চ পরিমাণ পানি লাভ করত। এর অর্থ ফারাক্কা বাঁধ চালু করার পর গঙ্গা নির্ভর অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ জল শুকিয়ে আসছে, যে কারণে গঙ্গা-নির্ভর অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ জলের বিদ্যমানতা হ্রাস পাচ্ছে।
[সিফাতুল কাদের চৌধুরী]
আরও দেখুন গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি; যৌথ নদী কমিশন।