পোরশা উপজেলা
পোরশা উপজেলা (নওগাঁ জেলা) আয়তন: ২৫২.৮৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৫৪´ থেকে ২৫°০৫´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°২৪´ থেকে ৮৮°৩৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সাপাহার উপজেলা, দক্ষিণে গোমস্তাপুর ও নিয়ামতপুর উপজেলা, পূর্বে পত্নীতলা ও মহাদেবপুর উপজেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য।
জনসংখ্যা ১২১৮০৯; পুরুষ ৬১৮৯৬, মহিলা ৫৯৯১৩। মুসলিম ১০৪৫৭১, হিন্দু ৮০৫৫, বৌদ্ধ ১৩৯৭, খ্রিস্টান ৩২ এবং অন্যান্য ৭৭৫৪। এ উপজেলায় সাঁওতাল, ওরাওঁ, পাহান প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
জলাশয় পূনর্ভবা ও শিব নদী উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন পোরশা থানা গঠিত হয় ১৯৩৩ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
- | ৬ | ১৫৫ | ২৫৩ | ১০৭০৪ | ১১১১০৫ | ৪৮২ | ৪০.৮ | ৩৫.১ |
উপজেলা শহর | ||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) |
৪.৯১ | ৪ | ১০৭০৪ | ১০৩ | ৪০.৭৯ |
ইউনিয়ন | ||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |
পুরুষ | মহিলা | |||
গাংগুরিয়া ২৩ | ৮৭৪৪ | ৭৯২৩ | ৭৬৬৪ | ৪২.১৪ |
ঘাটনগর ৩১ | ৮৭৬৫ | ১০৩৬৮ | ১০০০৩ | ৩৯.২২ |
ছাওড় ১৫ | ১১৭৯০ | ৮৭৭৮ | ৮৬০০ | ৩০.৫৯ |
তেঁতুলিয়া ৮৭ | ৯১৫০ | ১০১৫৫ | ৯৮৬২ | ৩৪.১৬ |
নিতপুর ৫৫ | ১৪৫৯১ | ১৫০২৬ | ১৪৪৪১ | ২৯.৮৭ |
মুশিদপুর ৪৭ | ৯৪৩৬ | ৯৬৪৬ | ৯৩৪৩ | ৪০.৫৬ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ শাহী মসজিদ, বালা শহীদ মাযার (নিতপুর ইউনিয়ন), বেরাচাকী পুকুর (তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন)।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে এ উপজেলার নিতপুরে অবস্থিত বড় ইদারার কাছে ও বালিয়াচান্দা ব্রিজের নিচে এবং শিশা নামক বাজারের পূর্বদিকে ও গাংগুরিয়া কলেজের দক্ষিণ পার্শ্বে গণহত্যা চালানো হয়।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ৪।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২৬৮, মন্দির ৪১, গির্জা ১।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৫.৬%; পুরুষ ৩৮.৫%, মহিলা ৩২.৬%। কলেজ ২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১১, মাদ্রাসা ২। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: পোরশা ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৯), গাংগুরিয়া কারিগরি ও কৃষি ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৭), পোরশা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৭), নিতপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৬), পোরশা উচ্চ মাদ্রাসা কাম উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৭), পলাশবাড়ি চাচাইবাড়ি ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৬৪) ।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ২০, ক্লাব ৮৯, সিনেমা হল ১।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৮১.৪৪%, অকৃষি শ্রমিক ৩.১৬%, শিল্প ০.২২%, ব্যবসা ৫.৪৩%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ০.৯৩%, চাকরি ৩.৩৪%, নির্মাণ ০.২৫%, ধর্মীয় সেবা ০.১৩%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.০৩% এবং অন্যান্য ৫.০৬%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫০.২০%, ভূমিহীন ৪৯.৮০%। শহরে ৪১.১৪% এবং গ্রামে ৫০.৯৫% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, সরিষা।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি স্থানীয় জাতের ধান।
প্রধান ফল-ফলাদিব আম, কাঁঠাল, লিচু, তরমুজ।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ২, গবাদিপশু ১, হাঁস-মুরগি ১১।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ২৭ কিমি; আধা-পাকারাস্তা ১৯ কিমি; কাঁচারাস্তা ২২৯ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা চালকল ১১, আইস ফ্যাক্টরি ৩, ফ্লাওয়ার মিল ২, ওয়েল্ডিং কারখানা ১৬ ।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প ২৭, লৌহশিল্প ১১২, মৃৎশিল্প ২৪৩, সূচিশিল্প ২১০, বাঁশের কাজ ২১৫, কাঠের কাজ ২৫৬।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১২, মেলা ২। গাংগুরিয়া হাট, মুশিদপুর হাট, শিশা হাট এবং করবোলার মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, গম, বাঁশের কাজ।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৭.০১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৩.৯১%, ট্যাপ ০.৩০%, পুকুর ০.২০% এবং অন্যান্য ৫.৫৯%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ১৭.৮৯% (গ্রামে ১৭.২৯% এবং শহরে ৩৪.৪২%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫০.৭৬% (গ্রামে ৫১.৩৭% এবং শহরে ৩৩.৭৭%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ৩১.৩৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৩, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, ক্লিনিক ৫।
এনজিও কারিতাস, ব্র্যাক, কেয়ার, প্রশিকা, আশা। [মো. মোখলেছুর রহমান]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; পোরশা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।