পানছড়ি উপজেলা
পানছড়ি উপজেলা (খাগড়াছড়ি জেলা) আয়তন: ৩৩৪.১১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°১২´ থেকে ২৩°২৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫০´ থেকে ৯২°০০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, দক্ষিণে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা, পূর্বে দীঘিনালা উপজেলা, পশ্চিমে মাটিরাঙ্গা উপজেলা।
জনসংখ্যা ৬৪৫১০; পুরুষ ৩৩৮৬৩, মহিলা ৩০৬৪৭। মুসলিম ১৮৮৭৫, হিন্দু ১২৪৭৫, বৌদ্ধ ২৩৬, খ্রিস্টান ৩২৯০৭ এবং অন্যান্য ১৭। এ উপজেলায় চাকমা, ত্রিপুরা, মারমা প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
জলাশয় প্রধান নদী: চেঙ্গী।
প্রশাসন পানছড়ি থানা গঠিত হয় ১৯৭৬ সালের ১ অক্টোবর এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
- | ৪ | ৭ | ২১৯ | ২৪০৭০ | ৪০৪৪০ | ১৯৩ | ৪৬.০ | ২৭.৬ |
উপজেলা শহর | ||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) |
৮২.৮৮ | ১ | ২৪০৭০ | ২৯০ | ৪৫.৯৬ |
ইউনিয়ন | ||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |
পুরুষ | মহিলা | |||
চেঙ্গী ১৯ | ১৪৭২০ | ৪২২১ | ৪১১৩ | ২৬.৩১ |
পানছড়ি ৭৬ | ২০৪৮০ | ১৩১৪৭ | ১০৯২৩ | ৪৫.৯৬ |
লতিবন ৩৮ | ২৭৫২০ | ৯৮২৩ | ৯২৫৯ | ২৬.৫৫ |
লোগাং ৫৭ | ১৯৮৪০ | ৬৬৭২ | ৬৩৫২ | ৩৯.৮৫ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
ঐতিহাসিক ঘটনাবলি ১৯৮৬ সালের জুন মাসে পানছড়ি উপজেলার দমদম, কালানাল ও ছনটিলায় শান্তিবাহিনীর সদস্যরা ১০৫ জন লোককে হত্যা করে। এ উপজেলার লোগাং ইউনিয়নের দুদুকছড়াতে ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি অনুযায়ী শান্তিবাহিনীর সশস্ত্র সদস্যরা ১৯৯৮ সালের ৫ মার্চ অস্ত্রসমর্পণ করে। এখানেই শান্তিবাহিনী বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৪.৬%; পুরুষ ৪২.৮%, মহিলা ২৫.৪%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: পানছড়ি কলেজ (১৯৯০), পানছড়ি হাইস্কুল ও কলেজ (১৯৮১)।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ১৭, নাট্যদল ১, সিনেমা হল ১, খেলার মাঠ ৭।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৪.৮৪%, অকৃষি শ্রমিক ৯.৫৬%, শিল্প ০.২৭%, ব্যবসা ৮.৫৬%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ০.৭৪%, চাকরি ৫.৮৬%, নির্মাণ ০.৫৭%, ধর্মীয় সেবা ০.২২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৩২% এবং অন্যান্য ৯.০৬%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৪২.৪৬%, ভূমিহীন ৫৭.৫৪%। শহরে ৩৮.৭৬% এবং গ্রামে ৪৪.৪৯% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, আলু, ভুট্টা, সরিষা, তিল, আদা, হলুদ, বাঁশ, শাকসবজি।
প্রধান ফল-ফলাদিব আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, পেঁপে, আনারস, আখ।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার হাঁস-মুরগি ৩।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন গরুর গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা আইস ফ্যাক্টরি।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, কাঠের কাজ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৩, মেলা ১। লোগাং বাজার, পুইজগাং বাজার, উল্টাছড়ি বাজার এবং বিজয় মেলা (পানছড়ি সদরে) উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য কাঠ, বাঁশ, আদা, হলুদ, তিল, সরিষা, কলা, কাঁঠাল, আনারস।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৯% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৪৬%, ট্যাপ ১.০৩%, পুকুর ৫.২০% এবং অন্যান্য ৪৭.৭৭%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলায় ১১.৯০% (গ্রামে ৫.৫৯% এবং শহরে ২৩.৩৭%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৭৮.১২% (গ্রামে ৮৩.৮৬% এবং শহরে ৬৭.৭১%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৯.৯৮% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৩, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ৩।
এনজিও ব্র্যাক, ইউনিসেফ। [সঞ্জয় কিশোর দাস]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; পানছড়ি উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।