নেওয়াজ, কাজী কাদের

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২০:৩৭, ২১ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (fix: tag)

নেওয়াজ, কাজী কাদের (১৯০৯-১৯৮৩)  শিক্ষাবিদ, কবি। ১৯০৯ সালের ১৫ জানুয়ারি মুর্শিদাবাদের তালেবপুরে মাতুলালয়ে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট গ্রামে। তিনি বর্ধমানের মাথরুন উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় থেকে এন্ট্রান্স (১৯২৩), বহরম কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্সসহ বিএ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ (১৯২৯) পাস করেন। ১৯৩২ সালে তিনি বিটি পাস করে সাব-ইন্সপেক্টর অব স্কুল পদে যোগদান করেন। ১৯৪৬ সালে তিনি সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন।

দেশবিভাগের পর কাজী কাদের ঢাকায় এসে প্রথমে নবাবপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং পরে দিনাজপুর জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিযুক্ত হন (১৯৫১)। তিনি ১৯৬৬ সালে অবসর গ্রহণ করে মাগুরার মুজদিয়া গ্রামে বসবাস করেন। একজন আদর্শবান শিক্ষক হিসেবে কাজী কাদের সকলের শ্রদ্ধা অর্জন করেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেছিলেন।

কাজী কাদের অল্প বয়সেই সাহিত্যের প্রতি আকৃষ্ট হন। বিকাশ, শিশুসাথী,  ভারতবর্ষ,  বসুমতী, শুকতারা, পাঠশালা, রামধনু, শীশমহল, মৌচাক,  প্রবাসীসওগাত প্রভৃতি পত্রিকায় তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়েছে। সাহিত্যের সব শাখায়ই তাঁর বিচরণ ছিল, তবে কবিতাই ছিল তাঁর প্রধান চর্চার ক্ষেত্র। তিনি রবীন্দ্রভাববলয়ের কবি হলেও বিষয়ে, বিন্যাসে, আঙ্গিকে ও প্রকাশনৈপুণ্যে তাঁর কাব্য স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল। কবিতায় তিনি সত্য, সুন্দর আর সুনীতিকে আহবান করেছেন। ছান্দসিক কবি হিসেবে তিনি অধিক পরিচিত ছিলেন। প্রেম, প্রকৃতি ও স্বদেশ তাঁর কবিতার বিষয়বস্ত্ত। সহজ-সরল ভাবমাধুর্যে রচিত তাঁর কাহিনীধর্মী ও নীতিকথামূলক শিশুতোষ রচনার সংখ্যা অনেক।


  1. কাজী কাদের নেওয়াজ

দেশ বিভাগের পর পূর্ববঙ্গের সাহিত্যচর্চার ধারাকে স্বতন্ত্র মর্যাদায় সুসংগঠিত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রেম ও পল্লীর শ্যামল প্রকৃতি তাঁর কবিতায় মনোজ্ঞভাবে প্রকাশিত হয়েছে।

কাজী কাদের নেওয়াজের গুরুত্বপূর্ণ রচনাবলি হলো: মরাল (১৯৩৬), দাদুর বৈঠক (১৯৪৭), নীল কুমুদী (১৯৬০), মণিদীপ, কালের হাওয়া, মরুচন্দ্রিকা, দুটি পাখি দুটি তারা (১৯৬৬), উতলা সন্ধ্যা ইত্যাদি। তিনি প্রেসিডেন্ট পুরস্কার, শিশুসাহিত্যের জন্য বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬৩) এবং মাদার বক্শ পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৩ সালের ৩ জানুয়ারি স্বগ্রামে তাঁর মত্যু হয়।  [শিপ্রা দস্তিদার]