নন্দীগ্রাম উপজেলা
নন্দীগ্রাম উপজেলা (বগুড়া জেলা) আয়তন: ২৬৫.৪৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৩৫´ থেকে ২৪°৪৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°০৮´ থেকে ৮৯°২১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে শাহজাহানপুর ও কাহালু উপজেলা, দক্ষিণে সিংড়া উপজেলা, পূর্বে শেরপুর (বগুড়া) উপজেলা, পশ্চিমে আদমদীঘি, রানীনগর ও সিংড়া উপজেলা।
জনসংখ্যা ১৬৮১৫৫; পুরুষ ৮৫৬৯০, মহিলা ৮২৪৬৫। মুসলিম ১৪৬৩৯৮, হিন্দু ২১৬৮৩, বৌদ্ধ ৮ এবং অন্যান্য ৬৬। এ উপজেলায় সাঁওতাল, ওরাওঁ প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
জলাশয় প্রধান নদী: নাগর, ভদ্রাবতী।
প্রশাসন নন্দীগ্রাম থানা গঠিত হয় ১৯৩২ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
- | ৫ | ২৩৫ | ২৪৫ | ৫৪২৩ | ১৬২৭৩২ | ৬৩৩ | ৫৪.৩ | ৪৫.৭ |
উপজেলা শহর | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||||
২.৩৬ | ১ | ৫৪২৩ | ২২৯৮ | ৬১.২ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
থালতা মাজগ্রাম ৮৪ | ১২২৬৪ | ১৬৪২২ | ১৫৫০৭ | ৪৫.৭৩ | ||||
নন্দীগ্রাম ৭৩ | ১২১৯৭ | ১৮২০৩ | ১৭৩৯০ | ৪৪.৯২ | ||||
বুড়ইল ৩১ | ১৩৯০২ | ১৭৭৫৩ | ১৭১৮০ | ৪০.০৭ | ||||
ভাটগ্রাম ১০ | ১২৬৫০ | ১৭৩৭১ | ১৬৯৫৪ | ৩৯.৮৬ | ||||
ভাটরা ২১ | ১৪৫৯১ | ১৫৯৪১ | ১৫৪৩৪ | ৪০.২৮ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের ২৮ এপ্রিল এ উপজেলার বামন গ্রামে পাকবাহিনী একটি গণহত্যা সংঘটিত করে। উক্ত গণহত্যায় ১৫৭ জন নিরীহ লোক মারা যায়। তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর এক লড়াইয়ে ১ জন শহীদ হন। ৮ ডিসেম্বর নন্দীগ্রাম উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ১ (বামন গ্রাম)।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৭১, মন্দির ২৬। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: ওমরপুর হাট জামে মসজিদ, আলিয়াপুকুর জামে মসজিদ, রনবাঘা জামে মসজিদ, চান মোকামতলা জামে মসজিদ।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪২.২%; পুরুষ ৪৮.৪%, মহিলা ৩৫.৭%। কলেজ ১০, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৪, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯৩, মাদ্রাসা ১৯। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কুন্দারহাট হাইস্কুল (১৯৪৫), দামগড়া সিদ্দিকীয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯২৮)।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ৩১, প্রেসক্লাব ১, সিনেমা হল ২, সাংস্কৃতিক সংগঠন ২।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৮১.৯৪%, অকৃষি শ্রমিক ১.৬৫%, শিল্প ০.২২%, ব্যবসা ৭.৫৪%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৫০%, চাকরি ২.৮২%, নির্মাণ ০.৩১%, ধর্মীয় সেবা ০.১৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১৫% এবং অন্যান্য ৩.৭৩%।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, সরিষা, আলু, মরিচ, ডাল, শাকসবজি।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, কুল।
মৎস্য গবাদিপশু ও হাঁস মুরগির খামার মৎস্য ২, গবাদিপশু ও হাঁসমুরগি ১০।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৩৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৪৪.৯৯ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩৮.৬৪ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা খাদ্যশিল্প ৭০, ফেব্রিকেট মেটালশিল্প ২৩।
কুটিরশিল্প মৃৎশিল্প, দারুশিল্প, বাঁশের কাজ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৫, মেলা ৩। নন্দীগ্রাম হাট, রনবাঘা হাট, ওমরপুর হাট, কুন্দার হাট এবং বৈশাখী মেলা (কল্যাণপুরে) উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, দধি।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৩.২৩% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৪.০৭%, ট্যাপ ০.৪৬%, পুকুর ০.১৬% এবং অন্যান্য ৫.৩১%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ২৬.৬৮% (গ্রামে ২৫.২৯% ও শহরে ৭২.০১%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৪.১১% (গ্রামে ৪৪.৯৫% ও শহরে ১৬.৭৭%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২৭.২১% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ২, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৪, হাসপাতাল ১।
এনজিও আশা, ব্র্যাক, কেয়ার, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ। [মো. খায়রুল আলম পুলক]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নন্দীগ্রাম উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।