ধুনট উপজেলা

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৬:২৪, ৬ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র'''))

ধুনট উপজেলা (বগুড়া জেলা)  আয়তন: ২৪৭.৭৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৩২´ থেকে ২৪°৪৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°২৮´ থেকে ৮৯°৪০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে গাবতলী ও সারিয়াকান্দি উপজেলা, দক্ষিণে রায়গঞ্জ উপজেলা, পূর্বে কাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা, পশ্চিমে শাহজাহানপুর ও শেরপুর উপজেলা।

জনসংখ্যা ২৭০৮১০; পুরুষ ১৩৬৫০১, মহিলা ১৩৪৩০৯। মুসলিম ২৫৮৬২২, হিন্দু ১২১৪৯, বৌদ্ধ ১০, খ্রিস্টান ১৬ এবং অন্যান্য ১৩।

জলাশয় প্রধান নদী: যমুনা, বাঙ্গালী ও ইছামতী।

প্রশাসন ধুনট থানা গঠিত হয় ১৯৬২ সালে এবং থানা উপজেলায় রূপান্তরিত হয় ১৯৮৩ সালে।


উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ১০ ৯১ ২১০ ১৮০৫৮ ২৫২৭৫২ ১০৯৩ ৩৮.৮ ৩০.৬
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১০.৮৭ ১৮০৫৮ ১৬৬১ ৩৮.৮
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন(একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার(%)
|| || পুরুষ মহিলা
এলাঙ্গী ৪৭ ৫০৯৫ ১০৬২৭ ১০৩৪১ ৩০.৩৯
কালেরপাড়া ৭৬ ৫৬২৮ ১২৫২৭ ১২৭১১ ২৫.৮৪
গোপালনগর ৫৭ ৬১২৪ ১৩৫৫৬ ১২৭৯৫ ২৮.৬৮
গোসাইবাড়ী ৬৬ ৫১৯১ ১৩৯৭২ ১৪৩০৬ ২৭.৮৩
চিকাশী ২৮ ৬৩৪৩ ১৩৬১৩ ১৩৩৫৭ ৩৩.৫২
চৌকিবাড়ী ১৯ ৭২৯৩ ১৪৩৩৪ ১৪১৯৬ ৩০.৪৭
ধুনট ৩৮ ৬৬৪১ ১৮৭১০ ১৭৯০৫ ৩৩.৭২
নিমগাছী ৯৫ ৬৪৩৮ ১৪৭৫৬ ১৪৫১৩ ৩৩.১০
ভান্ডারবাড়ী ৯ ৫৬৭১ ৮৫৪৮ ৯২০৩ ৩১.৮৬
মথুরাপুর ৮৫ ৬৭৯২ ১৫৮৫৮ ১৪৯৮২ ৩৪.২২

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ এলাঙ্গী বন্দরের দর্গাভবন, নীলকুঠি, জোড়খালি মাদ্রাসা, বাদশাহ সেকেন্দারের বাড়ি (বেরের বাড়ি গ্রাম)।

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের ১৯ এপ্রিল পাকবাহিনী ধুনট থানা আক্রমণ করলে গুলিতে ১ জন সিপাহী নিহত হয়। ২৬ এপ্রিল পাকবাহিনী এলাঙ্গী বন্দরে ৩৩ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে। এছাড়াও বন্দরের সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ২৭ এপ্রিল পাকবাহিনী পুনরায় উক্ত থানা আক্রমণ করে এবং ৫ জন সিপাহীকে হত্যা করে। ৪ মে পাকবাহিনী কালের পাড়া ইউনিয়নে হামলা করে ৩ জন লোককে হত্যা করে। ৬ ডিসেম্বর পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখযুদ্ধে ৩ জন পাকসেনা ও ২ জন রাজাকার নিহত হয়। ৭ সেপ্টেম্বর পাকবাহিনী ১৭ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে থানার পাশে গণকবর দেয়।  ১১ ডিসেম্বর ধুনট উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ১ (ধুনট), শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ ১।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩০৫, মন্দির ১৫, তীর্থস্থান ৩।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান  গড় হার ৩১.১%; পুরুষ ৩৫.৫%, মহিলা ২৬.৮%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ধুনট ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২), ধুনট মহিলা কলেজ (১৯৯৬), গোসাইবাড়ী এ এ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), ধুনট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪১), ধুনট পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭৭), জোড়খালি সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯১১)।

চিত্র:ধুনট উপজেলা html 88407781.png

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী  সাপ্তাহিক: নতুনবার্তা;  সাহিত্য পত্রিকা: পিদিম।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩, ক্লাব ৪৮, সিনেমা হল ৩, খেলার মাঠ ১০।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭২.২০%, অকৃষি শ্রমিক ২.৫৫%, শিল্প ০.৮৭%, ব্যবসা ৯.৫২%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.১০%, চাকরি ৩.৫৬%, নির্মাণ ০.৮৬%, ধর্মীয় সেবা ০.১২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৭৯% এবং অন্যান্য ৭.৪৩%।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, পাট, সরিষা, পিঁয়াজ, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি আউশ ধান, কাউন, চিনা, তামাক, অড়হর, খেসারি, ছোলা, তিসি, শনপাট।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, লিচু, জাম, কলা।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৭৮.৭৫ কিমি,  কাঁচারাস্তা ৪৮৩.১৫ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা বরফকল, চালকল, আটাকল, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, সূচিশিল্প, দারুশিল্প, বাঁশের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৩৩, মেলা ২৩। ধুনট বাজার, মথুরাপুর বাজার, গোসাইবাড়ী বাজার, অজয়পুর বাজার, এলাঙ্গী বাজার, সোনাহাটা হাট এবং চৈতালী মেলা, বৈশাখী মেলা, খাটিয়ামারি মেলা, ধুনট বৈশাখী মেলা, চরক মেলা ও বেলকুচি মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   ধান, পাট, শাকসবজি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫.৭৭% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯২.৬৮%, ট্যাপ ০.২২%, পুকুর ০.২৯% এবং অন্যান্য ৬.৮২%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৩৩.৮৯% (গ্রামে ৩২.৪২% ও শহরে ৫৫.৬৮%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৯.৬৭% (গ্রামে ৪০.৩২% ও শহরে ২৯.৯১%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২৬.৪৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১০, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৪, ক্লিনিক ২৮।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৬২ সালের ২২ মার্চ ঘূর্ণিঝড়ে ২৮ জন লোক মারা যায় এবং ২ শতাধিক আহত হয়। ১৯৮৪, ১৯৮৮ ও ২০০১ সালের বন্যায় এ উপজেলার ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ২০০৩ সালের ২১ মে ঘূর্ণিঝড়ে এ উপজেলার ৮ গ্রামের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয় এবং দেড়শতাধিক লোক আহত হয়।

এনজিও ব্র্যাক, প্রশিকা, আশা, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ।  [মো. সিরাজুল ইসলাম]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ধুনট উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।