দেব, বি.সি
দেব, বি.সি (১৯১২-১৯৯১) বিজ্ঞানী এবং মৃত্তিকা রসায়নবিদ; পুরো নাম ভূপেন্দ্র চন্দ্র দেব, তবে বি.সি দেব নামেই অধিক পরিচিত। ভূপেন্দ্র চন্দ্র ১৯২২ সালের ৫ জুলাই সিলেট জেলার কাদিপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর প্রাথমিক এবং স্নাতক নিম্ন পর্যায়ের শিক্ষা সম্পন্ন হয় সিলেটেই এবং ১৯৩৩ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এসসি (সম্মান) ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৩৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষি রসায়নে এম.এসসি ডিগ্রি লাভ করেন এবং প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করার জন্য স্বর্ণপদক প্রাপ্ত হন। মায়ানমারের মান্দালয়ে ২ বৎসর শিক্ষকতা করার পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। বি.সি দেব বিখ্যাত মৃত্তিকা বিজ্ঞানী এ.টি সেন-এর তত্ত্বাবধানে মৃত্তিকা রসায়নে তাঁর পিএইচ.ডি গবেষণা সম্পন্ন করেন এবং ১৯৪৪ সালে ডি.এসসি ডিগ্রি প্রাপ্ত হন। ১৯৪৬ সালে তিনি বৃত্তি নিয়ে ইংল্যান্ড গমন করেন। মৃত্তিকায় মুক্ত আয়রন অক্সাইড ও জিপসামের অস্তিত্ব নির্ধারণে তিনি নতুন কিছু পদ্ধতির উদ্ভাবন করেন এবং তাঁর এ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৪৮ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে পিএইচ.ডি ডিগ্রি প্রদান করে।
১৯৪৯ সালে বি.সি দেব ভারতের পুনাতে অবস্থিত ‘কেন্দ্রীয় পানি ও শক্তি গবেষণা কেন্দ্রে’ (সিডব্লিউপিআরএস) প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ১৯৬২ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত ‘খাদ্য ও কৃষি সংস্থা’-র দুটি নির্ধারিত দায়িত্ব পালন করেন; প্রথমটি মিশরের কায়রোতে এবং দ্বিতীয়টি দক্ষিণ কোরিয়ার সুওন-এ অবস্থিত কৃষি ইনস্টিটিউটে। ১৯৬৯ সালে ‘কেন্দ্রীয় পানি ও শক্তি গবেষণা কেন্দ্র’ থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি ১৯৭৫ পর্যন্ত ঘানার ‘কামাসি মৃত্তিকা গবেষণা ইনস্টিটিউটে’ খাদ্য ও কৃষি সংস্থা’র (এফএও) বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেন। ড. দেবের গবেষণা ক্ষেত্রের ব্যাপ্তি ছিল পডজল (Podsol) মৃত্তিকার গঠন, মৃত্তিকা পরীক্ষা থেকে নদীর পানির গুণাগুণ বিচার পর্যন্ত। তিনি মৃত্তিকা পরীক্ষার কিছু সংখ্যক পদ্ধতির উন্নয়ন ও উদ্ভাবন ঘটিয়েছেন। কলকাতার ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেস সমিতি বি.সি দেবের স্মরণে দুটি পুরষ্কার প্রবর্তন করেছে। ভূপেন্দ্র চন্দ্র দেব ১৯৯১ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
[ডি.কে দাস এবং এস.কে সান্যাল]