চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ১৮৮৭ সালের ‘কমিশনার্স ফর দ্য পোর্ট অব চিটাগাং’ আইনবলে গঠিত হয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কমিশনার্স ফর দ্য পোর্ট অব চিটাগং, যা চট্টগ্রাম বন্দর নামে পরিচিত। চট্টগ্রাম বন্দরকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির স্বর্ণদ্বার বলা হয়। পতেঙ্গায় কর্ণফুলি নদীর মোহনা থেকে উজানে প্রায় ২ হাজার ৫ শত একর জমি নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর অবস্থিত। ১৯০০ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর এ কমিশনার্স এবং আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ে কর্তৃক পরিচালিত হয়েছে। এ দ্বৈত-প্রশাসন বিলুপ্ত ১৯৬০ সালে এর নতুন নামকরণ হয় ‘পোর্ট ট্রাস্ট’। ১৮৮৭ সালের কমিশনার্স ফর দ্য পোর্ট অব চিটাগাং আইন বাতিল করে পোর্ট ট্রাস্ট গঠিত হয়। পরবর্তীকালে বন্দর ব্যবস্থাপনাকে অধিকতর স্বায়ত্তশাসন প্রদান ও বন্দর কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম পোর্ট ট্রাস্ট বিলুপ্ত করে ‘চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ-১৯৭৬’ জারি করা হয় এবং বন্দরের নতুন নামকরণ করা হয় ‘চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ’। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক) নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত ১ জন চেয়ারম্যান এবং অনধিক ৪ সদস্য বিশিষ্ট বোর্ড বন্দর কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে দেশের শতকরা ৯২ ভাগ মালামাল আমদানি-রপ্তানি ও হ্যান্ডলিং করা হয়ে থাকে। পৃথিবীর প্রায় ১৪০ টি দেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের পণ্যভর্তি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে আগমন করে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ট্যাক্স ও ভ্যাট বাবদ প্রচুর অর্থ সরকারি কোষাগারে নিয়মিত জমা দেয়। ১৯৯৯-২০০০ থেকে ২০০৮-২০০৯ অর্থবছর পর্যন্ত চট্গ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ১২৭৭.৬২ কোটি টাকা আয়কর বাবদ সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব অর্থ দিয়ে এর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদান এবং উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে থাকে। নিজস্ব কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব অর্থায়নে ১টি ১৫০ শয্যার হাসপাতাল, ২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। এছাড়াও বন্দর কর্তৃপক্ষ মক্তব, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির, মঠ এবং ১টি স্টেডিয়াম পরিচালনা করছে। [আরইউ আহমেদ]