ঘরামি

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২০:২৮, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)

ঘরামি  বাঁশ, কাঠ, ছন, কাদামাটি ইত্যাদি দিয়ে কাঁচা ঘর-বাড়ি তৈরিতে পারদর্শী ব্যক্তি। বাংলাদেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের যে সমস্ত এলাকা সাধারণভাবে বন্যামুক্ত সেসব এলাকায় মাটির তৈরি দেয়ালে ঐতিহ্যবাহী ঘর নির্মাণ করা হয়। এ দেয়াল বিশেষভাবে প্রস্ত্ততকৃত কাদামাটি এবং গোবর মিশিয়ে তৈরি। কাদামাটির তৈরি দেয়ালের বিকল্প হিসেবে বাঁশের বেড়াও ব্যবহূত হয়।

বাঁশ ফেড়ে প্রয়োজন মাফিক লম্বালম্বি টুকরা করা হয় এবং ঘন করে বসিয়ে শক্ত বেড়া তৈরি করা হয়। এর ছাউনি দেওয়া হয় নলখাগড়া, ছন অথবা ঢেউটিন দিয়ে। বাঁশ বা মাটি দিয়ে তৈরি প্রতিটি বাড়ির নির্মাণ-কৌশল বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে স্বতন্ত্র। আগে বংশপরম্পরায় ঘরামি কারিগররা নিজেদের পেশা টিকিয়ে রেখেছিলেন। বর্তমানে এসব হারিয়ে যেতে বসেছে। এর প্রধান কারণ গ্রামের বাড়ি নির্মাণ পদ্ধতিতে আধুনিক পাকা বা আধা-পাকা বাড়ি নির্মাণের প্রবণতা। ঐতিহ্যবাহী ঘরামিরা বিভিন্ন ধরনের ও বিচিত্র আঙ্গিকের বাড়ি নির্মাণ করতেন।

ঘরামি

অধিকাংশ বিখ্যাত বাড়িই নির্মিত হতো বেশ ব্যয়বহুলভাবে এবং কারুকার্যমন্ডিত আটচালা অবয়বে। আর ঘরের দেয়াল বা বেড়া নির্মাণ করা হতো মাটি বা নানা ধরনের বাঁশ, বেত বা ঘাস দিয়ে। ঘরামিরা চৌচালা, দোচালা এবং একচালা ঘরও নির্মাণ করতেন। একচালার পাশাপাশি চৌচালা ঘরের বৈশিষ্ট্য বেশ অভিনব। বর্তমানে এসব ঘরবাড়ি ক্রমে দুর্লভ হয়ে উঠছে। সেইসঙ্গে এককালের শ্রদ্ধাভাজন ঘরামি শ্রেণি ও গ্রামীণ স্থাপত্য বিলীন হতে বসেছে।  [গোফরান ফারুকী]