কেশবপুর উপজেলা
কেশবপুর উপজেলা (যশোর জেলা) আয়তন: ২৫৮.৫৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৪৮´ থেকে ২২°৫৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°০৭´ থেকে ৯০°২৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে মনিরামপুর উপজেলা, দক্ষিণে তালা ও ডুমুরিয়া উপজেলা, পূর্বে ডুমুরিয়া উপজেলা, পশ্চিমে কলারোয়া উপজেলা।
জনসংখ্যা ২২৬৩৬৭; পুরুষ ১১৬২৬১, মহিলা ১১০১০৬। মুসলিম ১৮৪৩১২, হিন্দু ৪১৬৩৭, বৌদ্ধ ৮০ এবং অন্যান্য ৩৩৯।
জলাশয় প্রধান নদ-নদী: কপোতাক্ষ, হারথার এবং মাসিহা বাওড়, ঘুহার বাওড় ও চেঙ্গরাল খাল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন কেশবপুর থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে এবং কেশবপুর পৌরসভা গঠিত হয় ১৯৯৮ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ৯ | ১৪২ | ১৪২ | ২৪৫৩৮ | ২০১৮২৯ | ৮৭৫ | ৪৭.২১ | ৫২.৯৩ |
উপজেলা শহর | ||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) |
১৮.৪৬ | ৭ | ২৪৫৩৮ | ১৩২৯ | ৫৮.৭৫ |
ইউনিয়ন | ||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |
পুরুষ | মহিলা | |||
কেশবপুর ২৮ | ৮৩৬২ | ১৯৭০১ | ১৮৫১৮ | ৫৬.৮২ |
গৌরীঘোনা ১৯ | ৬৪৫৬ | ৯৬৩০ | ৯০২৫ | ৫০.৭৭ |
ত্রিমোহিনী ৮৫ | ৮৫৫৪ | ১৫৫৭২ | ১৪৮১৬ | ৩৯.৬৯ |
পাঁজিয়া ৫৭ | ৭০৬৬ | ১১১০৪ | ১০৬৩৪ | ৪৬.৯৩ |
বিদ্যানন্দকাটি ১৭ | ৮০৯০ | ১৫৪২১ | ১৪৫৫৬ | ৪৫.২০ |
মঙ্গলকোট ৪৭ | ৫৬৭৩ | ১০৭৮০ | ১০০২৮ | ৫১.১০ |
মজিদপুর ৩৮ | ৬১০৭ | ১১৪৬৭ | ১০৯২২ | ৪৫.৪০ |
সাগরদাঁড়ি ৬৬ | ৭২১৩ | ১৪৩৯৪ | ১৩৮৬১ | ৩৯.১৮ |
সুফলাকাটি ৭৬ | ৬৩৬২ | ৮১৯২ | ৭৭৪৬ | ৪৯.৯২ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শন ও প্রত্নসম্পদ ভরত ভায়না রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ (ভরতের দেউল), মীর্জানগর হাম্মামখানা (নবাব মীর জুমলার বাড়ি), সাগরদাঁড়ি গ্রামে কবি মধুসূদন দত্তের বাড়ি, একটি প্রাচীন দূর্গের ধ্বংসাবশেষ (বিদ্যানন্দকাঠি গ্রামে), শেখপুরা তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ (১৯৩৯ খ্রি:), জাহানপুর মসজিদ, বায়সা কালিবাড়ি, চালিতাবাড়িয়া মন্দির, খাঞ্জালি দিঘি।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন স্মৃতিস্তম্ভ ১।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩২০, মন্দির ৮১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: শেখপাড়া নবাব বাড়ীর মসজিদ।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৭.২১%; পুরুষ ৫২.৯৩%, মহিলা ৪১.২২%। কলেজ ৮, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬৯, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৪৩, কমিউনিটি বিদ্যালয় ৯, এনজিও স্কুল ৯৮, মাদ্রাসা ৬৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কেশবপুর ডিগ্রী কলেজ (১৯৬৭), পাঁজিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৮৯৭), বিদ্যানন্দকাটি রাসবিহারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯০১), সুফলাকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৪), সাতবাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২১), কাটাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২১)।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৭, সিনেমা হল ২, খেলার মাঠ ১০, নাট্যদল ৩, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ৫, মহিলা সংগঠন ৩, প্রেসক্লাব ১। মধুসূদন পাবলিক লাইব্রেরি ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদ স্মৃতি পাঠাগার উল্লেখযোগ্য।
দর্শনীয় স্থান বা পর্যটন কেন্দ্র গৌরিঘোনা ইউনিয়নের ভরত ভায়না গ্রামের ভরতের দেউল, বিদ্যানন্দকাটি গ্রামে অবস্থিত খাঞ্জালি দীঘি, সাগরদাড়ি গ্রামের মধুপল্লী, পাঁজিয়া গ্রামে চলচ্চিত্র অভিনেতা ধীরাজ ভট্টাচার্যের বাড়ি।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৯.৪৪%, অকৃষি শ্রমিক ২.৭৭%, শিল্প ১.৭০%, ব্যবসা ১৩.০৬%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৮৬%, চাকরি ৪.৭২%, নির্মাণ ০.৭৪%, ধর্মীয় সেবা ০.০৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২২% এবং অন্যান্য ৪.৪০%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৭২.১৫%, ভূমিহীন ২৭.৮৫%। শহরে ৫৭.৫৪% এবং গ্রামে ৭৩.৮৫% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, আলু, বেগুন, পান, আখ, তৈলবীজ, মরিচ, হলুদ, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি অড়হর, স্থানীয় জাতের ধান, খেসারি।
প্রধান ফল-ফলাদিব আম, জাম, কাঁঠাল, নারিকেল, সুপারি।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১২১ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৩০ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪০০ কিমি; নৌপথ ৯ নটিক্যাল মাইল।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি ও গরুর গাড়ি।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, কাঠের কাজ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৩, মেলা ৫। পাঁজিয়া বাজার, কাটাখালি বাজার, মঙ্গলকোট বাজার, চিংড়া বাজার, ত্রিমোহনী বাজার, সরসকাঠি বাজার এবং ত্রিমোহনী বারুনীর মেলা, সাগরদাঁড়ি মধু মেলা, খাঞ্জালি দীঘির পাড়ের মেলা, ভেরচি নিমতলা মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, পাট, কাঁঠাল, গম, খেজুর গুড়।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৩.১৪% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৪.৮৫%, ট্যাপ ০.৮০%, পুকুর ০.৩০% এবং অন্যান্য ৪.০৪%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা ২৬.৯৩% (শহরে ৪৬.১২% এবং গ্রামে ২৪.৭০%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৩.৭১% (শহরে ৩০.৮৯% এবং গ্রামে ৪৫.২০%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২৯.৩৬% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৯, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, ক্লিনিক ৩।
এনজিও ব্র্যাক, আশা, কারিতাস, সমাধান, সমাজকল্যাণ সংস্থা, আহসানিয়া মিশন উল্লেখযোগ্য। [মোঃ ফিরোজ আনছারী]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কেশবপুর উপজেলা মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০০৭।