প্রশাসন ও চাকুরি পুনর্গঠন কমিটি
প্রশাসন ও চাকুরি পুনর্গঠন কমিটি প্রশাসনিক সংস্কারের জন্য গঠিত একটি কমিটি। ১৯৭২ সালের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ সরকার এ কমিটি গঠন করে। ভবিষ্যৎ প্রশাসনিক কাঠামো এবং বেসামরিক চাকুরির পদ্ধতি সম্পর্কে সরকারের নীতি কি হবে সে ব্যাপারে পরামর্শ দানের জন্য এ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর মুজাফফর আহমদ চৌধুরীকে চেয়ারম্যান করে পরিকল্পনা কমিশনের একজন সদস্য, সংস্থাপন বিভাগের সচিব এবং প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক মনোনীত একজন প্রতিনিধিসহ ৩ জন সদস্য নিয়ে এই কমিটি গঠিত হয়। সদস্যরা ছিলেন প্রফেসর আনিসুর রহমান (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক), মাহবুবুজ্জামান ও ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম (সংসদ-সদস্য)।
এ কমিটির কাজ ছিল: (ক) টেকনিক্যাল ও নন-টেকনিক্যাল উভয় ক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন চাকুরি কাঠামো বিবেচনা করে সরকারের চাহিদা ও কার্যোপযোগী ভবিষ্যৎ কাঠামো নির্ধারণ; (খ) বিদ্যমান বেসামরিক সকল চাকুরিকে (প্রতিরক্ষা চাকুরি ব্যতিরেকে) অভিন্ন চাকুরি কাঠামোর আওতায় আনার প্রশ্নটি বিবেচনা করা; (গ) সমন্বিত চাকুরি কাঠামোতে বিভিন্ন ধরনের চাকুরিতে নিয়োজিত ব্যক্তিদের কোন নীতির ভিত্তিতে একীভূত করা হবে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত প্রদান; পুনর্গঠন বা সংযুক্তি প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন চাকুরিতে নিয়োজিত অনুরূপ শিক্ষাগত যোগ্যতা ও পূর্ব অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জ্যেষ্ঠতা কিভাবে নির্ধারণ করা হবে সে ব্যাপারে সমন্বয়ের নীতি ও উপায় নির্ধারণ; (ঘ) শিক্ষাগত ও অপরাপর যোগ্যতার আলোকে সরকারি চাকুরির বিভিন্ন পর্যায়ে ভবিষ্যতে নিয়োগের নীতি নির্ধারণ করা এবং (ঙ) প্রশাসনিক পুনর্গঠনের জন্য ব্যাপক ভিত্তিক একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন ও সুপারিশ করা।
১৯৭৩ সালের এপ্রিল ও অক্টোবর মাসে এ কমিটি দুই কিস্তিতে রিপোর্ট পেশ করে। পেশকৃত রিপোর্টের প্রথম অংশে ছিল সরকারি চাকুরি পুনর্গঠনের প্রস্তাবনা। সরকারি চাকুরিতে এই পুনর্গঠনের পদক্ষেপ গৃহীত হবে নতুন বেতনস্কেল নির্ধারণের ক্ষেত্রে ১৯৭২ সালে গঠিত ন্যাশনাল পে কমিশনকে সহায়তা দানের জন্য। রিপোর্টের দ্বিতীয় অংশে ছিল সচিবালয় পদ্ধতি ও কার্যপ্রণালী, মন্ত্রণালয় ও বিভাগীয় সংস্থা এবং জেলা ও স্থানীয় প্রশাসন পুনর্গঠন সম্পর্কিত সুপারিশ। [এ.এম.এম শওকত আলী]