ব্লোট

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৫:২৬, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

ব্লোট (Bloat) গৃহপালিত গবাদি প্রাণীর ব্লোট বা পেটফাঁপা একটি মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা। এটি সাধারণত গবাদি প্রাণীর রুমেনে গ্যাস জমার মাধ্যমে হয়ে থাকে। গবাদি প্রাণীর বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় সাধারণত গ্যাস উৎপন্ন হয়ে থাকে এবং স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এই গ্যাস বের হয়ে যায়। কিন্তু কোনো কারণে যখন এই গ্যাস পাকস্থলী হতে বের হতে পারে না তখন প্রাণীর শরীরের বাম দিকে (যেখানে রুমেন থাকে) ফুলে উঠে। ব্লোট দুই ধরনের হয়ে থাকে- (ক) কেবল গ্যাস থাকে এমন ব্লোট, যা সচরাচর বেশি দেখা যায়; (খ) ফেনাযুক্ত গ্যাস থাকে এমন ধরনের ব্লোট, যা তুলনামুলক কম দেখা যায়।

ব্লোট হওয়ার অন্যতম কারণ পাকস্থলীতে কোনো কারণে খাদ্য আটকে যাওয়া, পচা খাদ্য, ডাল জাতীয় লতাপাতা বা বেশি পরিমাণ রসালো সবুজ ঘাস খাওয়া।

লক্ষণ পেটের বাম দিক ফুলে উঠা এ রোগের প্রধান লক্ষণ, একই সাথে শ্বাসকষ্ট, পেটব্যথা ও অস্থিরতা দেখা যায়। প্রাণী খাওয়া ও জাবরকাটা বন্ধ করে দেয়। প্রাণী জিহ্বা বের করে মুখ দিয়ে শ্বাস নিবে। সময়মতো গ্যাস বের করা না হলে অনেক সময় প্রাণী ২০ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে মারা যেতে পারে।

রোগনির্ণয় রোগের লক্ষণ দেখে সহজেই এ রোগ নির্ণয় করা যায়। এছাড়াও প্রাণীর খাদ্য গ্রহণের তথ্যের মাধ্যমেও এ রোগ সনাক্ত করা সম্ভব। পাকস্থলীতে নল (স্টমাক টিউব) ঢ়ুকিয়ে কোনো ধরনের ব্লোটতা সনাক্ত করা যায়। এ সময় নল দিয়ে কেবল গ্যাস অথবা গ্যাসের সাথে প্রচুর ফেনা আসতে পারে।

চিকিৎসা পাকস্থলীতে নল ঢ়ুকিয়ে গ্যাস বের করাই উত্তম চিকিৎসা। এছাড়াও ট্রকার ও ক্যনুল (Trochar and cannula) গ্যাস জমা স্থানে প্রবেশ করিয়ে দ্রুত গ্যাস বের করতে হবে। অনেক সময় প্রাণীকে বাঁচানোর জন্য সার্জারির মাধ্যমে গ্যাস বের করতে হয়। প্রাণিচিকিৎসকের পরামর্শ মতো লিনসিড তৈল বা তারপিন তৈল প্রাণীকে খাওয়ানো যেতে পারে।

প্রতিরোধ গবাদি প্রাণীর খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশ জাতীয় খাদ্য (যেমন খড়) থাকতে হবে। চারণভূমিতে যদি ডাল জাতীয় ঘাস থাকে তবে আঁশ জাতীয় খাদ্যের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রাণীকে পরিমাণ মতো দানাদার খাদ্য দিতে হবে, বেশি দেয়া যাবে না। নিয়মিত প্রাণীর স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং এ বিষয়ে প্রাণিচিকিৎসকের পরার্মশ গ্রহণ করতে হবে। [মো. গিয়াসউদ্দিন]