আটঘরিয়া উপজেলা
আটঘরিয়া উপজেলা (পাবনা জেলা) আয়তন: ১৮৬.১৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°০৩´ থেকে ২৪°১২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°১০´ থেকে ৮৯°২৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে চাটমোহর ও ফরিদপুর উপজেলা, পূর্বে সাঁথিয়া উপজেলা, দক্ষিণে পাবনা সদর ও ঈশ্বরদী উপজেলা, পশ্চিমে বড়াইগ্রাম উপজেলা।
জনসংখ্যা ১৫৭২৫৪; পুরুষ ৭৮২৩৭; মহিলা ৭৯০১৭। জনসংখ্যার মধ্যে মুসলিম ১৫৪১৩৬, হিন্দু ২৮৮৬, বৌদ্ধ ৪, খ্রিস্টান ১২৫ এবং অন্যান্য ১০৩।
জলাশয় প্রধান নদী:ইছামতি, চিকনাই ও কামালা।
প্রশাসন আটঘরিয়া থানা গঠিত হয় ১৩ জানুয়ারি ১৯১৫ সালে। উপজেলায় রূপান্তরিত হয় ১৯৮৩ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ৫ | ১০২ | ১২২ | ১৩৬৮৬ | ১৪৩৫৬৮ | ৮৪৫ | ৫৬.৭ | ৪২.৪ |
পৌরসভা | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |||
৮.৬০ | ৯ | ১৮ | ১৩৬৮৬ | ১৫৯১ | ৫৬.৭ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
একদাতা ৪৭ | ৮৩৮৭ | ১৮২০১ | ১৭৮৩৮ | ৪০.৮ | ||||
চাঁদবা ১৫ | ৭৬০২ | ১২৭৪৪ | ১৩৫০১ | ৫১.০ | ||||
দেবোত্তর ৩১ | ৭৫৭৮ | ১০৮১২ | ১০৮৯৯ | ৩৯.৮ | ||||
মাঝপাড়া ৭৯ | ১০০৯১ | ১৭৪০৯ | ১৭৬৯২ | ৪৪.৪ | ||||
লক্ষীপুর ৬৩ | ৯৯৯৪ | ১২২৯৫ | ১২১৭৭ | ৩৪.৫ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ খানবাড়ি মসজিদ (আটঘরিয়া), মৃধার মসজিদ (আটঘরিয়া), বেরুয়ান জামে মসজিদ (বেরুয়ান)।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে মাজপাড়া ইউনিয়নের বংশীপাড়া ঘাটে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ১ জন পাক অফিসার নিহত হয় এবং ১২ জন মুক্তিযোদ্ধা সহ ৩ জন গ্রামবাসী শহীদ হন। উপজেলার দেবোত্তর দক্ষিণ পাড়াস্থ ডাক্তার মগরেবের বাঁশঝাড়ে ১টি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে।
বিস্তারিত দেখুন আটঘরিয়া উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ১৬১, মন্দির ১৭, গির্জা ১। উল্লেখযোগ্য: বেরুয়ান মসজিদ, আটঘরিয়া মসজিদ, দেবোত্তর মসজিদ, শ্রীকান্তপুর মসজিদ, একদন্ত মসজিদ, রাধাকান্তপুর মসজিদ।
শিক্ষার হার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৩.৭%; পুুরুষ ৪৩.৭%, মহিলা ৪৩.৬%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: খিদিরপুর ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় (১৯৯৫), দেবোত্তর ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় (১৯৯৫), আটঘরিয়া ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় (১৯৭২), খিদিরপুর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ (২০০৩), আটঘরিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৪), দেবোত্তর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৬), দেবোত্তর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৮০), ত্বাহা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা (১৯২৩), ধলেশ্বর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা (১৯২২)।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সাপ্তাহিক প্রগতি, সাহিত্য পত্রিকা (অবলুপ্ত)।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১৬, ক্লাব ৫০, সাংস্কৃতিক দল ১, যাত্রাপার্টি ১, সাহিত্য সংসদ ১, থিয়েটার গ্রুপ ১, সিনেমা হল ১।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭৩.৭৬%, অকৃষি শ্রমিক ২.২৫%, শিল্প ২.৯৯%, ব্যবসা ৮.৩৩%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.০৯%, চাকরি ৩.৯৬%, শিল্প ০.৯২%, নির্মাণ ০.৫৩%, ধর্মীয় সেবা ০.০৮%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২৬% এবং অন্যান্য ৪.৮৩%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬১.১৮%, ভূমিহীন ৩৮.৮২%। শহরে ৪৪.৫৭% এবং গ্রামে ৬২.২৭% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষিফসল ধান, পাট, পান, ডাল, সরিষা, বেগুন, আলু, কাঁচা মরিচ, পটল, পিঁয়াজ, রসুন, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি চিনা, কাউন, ভুরা, যব।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, লিচু, পেয়ারা।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ১২৫, গবাদিপশু ১৭০, হাঁস-মুরগি ২৩০, হ্যাচারি ৩।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকা রাস্তা ১১৮ কিমি, আধাপাকা রাস্তা ৭ কিমি, কাঁচা রাস্তা ৩৭৯ কিমি; রেলপথ ৭ কিমি; নৌপথ ৩৫ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।
কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, বাঁশশিল্প, বেতের কাজ, কাঠের কাজ, রেশম উৎপাদন শিল্প ইত্যাদি।
হাটবাজার, মেলা হাটবাজার ১৮, মেলা ২। উল্লেখযোগ্য হাটবাজার: আটঘরিয়া, দেবোত্তর, খিদিরপুর, গরুরী হাট।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, পাট, পান, শাকসবজি।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি উপজেলা পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪৭.৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৪.৫%, ট্যাপ ১.০% এবং অন্যান্য ৪.৫%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৭৯.৮% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১৭.৪% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২.৮% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৫।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৭৭০ (বাংলা ১১৭৬) সালের দুর্ভিক্ষে এ উপজেলার বহু লোক প্রাণ হারায়।
এনজিও ১৫। ব্র্যাক, সিসিডিবি, আশা। [মোঃ আলাউদ্দিন মোল্লা]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; আটঘরিয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।