শর্ষিনা দারুসসুন্নাত কামিল মাদ্রাসা
শর্ষিনা দারুসসুন্নাত কামিল মাদ্রাসা বরিশাল জেলার নেছারাবাদ থানার এক কিলোমিটার উত্তরে ছারছিনা গ্রামে ২০ একর জমির উপরে ১৯১৫ সালে ১৫ জানুয়ারি ছারছীনা মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯২৭ সালে মাদ্রাসার সুপারিন্টেন্ডেন্ট মৌলবী ইছহাকের প্রচেষ্টায় মাদ্রাসা মঞ্জুরি লাভ করে। ১৯২২, ১৯৩১ ও ১৯৪২ সালে মাদ্রাসাটি যথাক্রমে আলিম, ফাযিল ও কামিল শ্রেণির জন্য সরকারি মঞ্জুরি পায়। ১৯৩০ সালে ৮০ হাত দৈর্ঘ্য এবং ২০ হাত প্রস্থ একটি ভবন নির্মিত হয়। মাদ্রাসার বর্তমান ক্যাম্পাস ২০.৫৬ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। এছাড়া মাদ্রাসার অধীনে রয়েছে প্রায় ৩ হাজার বিঘা আবাদি জমি। মাদ্রাসার বার্ষিক আয় অর্ধকোটি টাকারও বেশি।
১৯৫২ সালে মাওলানা আবু জাফর সালেহ মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তাঁর প্রচেষ্টায় দারুল হাদীস ভবন (১৯৬১), লাইব্রেরি (১৯৬৬), রেস্ট হাউজ (১৯৭৪), চার তলা একাডেমিক ভবন, মসজিদ (১৯৭৪), দ্বিতল প্রশাসনিক ভবন (১৯৫৬) এবং ছাত্রাবাস (১৯৬১) নির্মিত হয়।
বর্তমানে মাদ্রাসার ছাত্রসংখ্যা ১৮০০। শিক্ষার্থীদের আবাসনের জন্য ৭টি ছাত্রাবাস রয়েছে। এসব ছাত্রাবাসে ১৫০০ ছাত্রের বিনামূল্যে থাকা এবং খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। মাদ্রাসায় শিক্ষক সংখ্যা ৪৭ এবং কর্মচারীর সংখ্যা ২০। ঐতিহ্যবাহী এ মাদ্রাসা হতে এ পর্যন্ত ৩০০ ছাত্র বোর্ড স্ট্যান্ড করেছে। মাদ্রাসায় দাখিল পর্যন্ত বিজ্ঞান শাখা চালু আছে। কামিল শ্রেণিতে হাদীস, তাফসীর ও ফিকাহ বিভাগ রয়েছে। মাদ্রাসায় দুটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরি আছে। গ্রন্থ সংখ্যা ২০ সহস্রাধিক। মাদ্রাসার একটি নিজস্ব ছাপাখানা আছে, যেখান থেকে বিভিন্ন বই প্রকাশিত হয়। ছাপাখানা হতে এ পর্যন্ত প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে তরীকুল ইসলাম (১ম ও ২য়), ফতওয়ায়ে সিদ্দীকিয়া, খুৎবায়ে ছালেহিয়া, কুরবানীর মাসায়েল, মাওলানা নেছারুদ্দীন (জীবনী), মাওলানা আবু জাফর (জীবনী), আজীফায়ে ছালেহীন, চার তরীকার শাজরা, বার চান্দের ফজীলত, নারী ও পর্দা, দাড়ী ও ধুমপান, আমীর মুয়াবীয়া প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও পাক্ষিক তাবলীগ, মাসিক কুঁড়ি, মুকুল ও আল-হেলাল পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। [আ.ব.ম সাইফুল ইসলাম সিদ্দীকী]