লালমোহন উপজেলা
লালমোহন উপজেলা (ভোলা জেলা) আয়তন: ৩৯৬.২৪ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°১০´ থেকে ২২°২৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৩৮´ থেকে ৯০°৫৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে বোরহানউদ্দিন এবং তজমুদ্দিন উপজেলা, দক্ষিণে চরফ্যাশন উপজেলা, পূর্বে মনপুরা উপজেলা, পশ্চিমে দশমিনা ও বাউফল উপজেলা।
জনসংখ্যা ২৮৩৮৮৯; পুরুষ ১৩৮৮৭৭, মহিলা ১৪৫০১২ (২০১১)। মুসলিম ২৬১৯৬৪, হিন্দু ১৪৫৫৮, বৌদ্ধ ১১ এবং অন্যান্য ১৪।
জলাশয় তেঁতুলিয়া, মেঘনা, বেতুয়া ও বোয়ালিয়া নদী এবং দেবনাথের বিল, গতিয়ার খাল, ভুটার খাল ও শাহবাজপুর চ্যানেল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন লালমোহন থানা গঠিত হয় ১৯১৯ সালে। থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ৯ | ৫৩ | ৭৮ | ৩৬০৬৬ | ২৪৭৮২৩ | ৭১৬ | ৪৫.৮ (২০০১) | ৩৮.০ |
পৌরসভা | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |||
৬.৫৫ (২০০১) | ৯ | ১৮ | ২০৫২২ | ২৭৩৮ (২০০১) | ৬০.৩ |
উপজেলা শহর | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||||
১৫.১২ (২০০১) | ৪ | ১৫৫৪৪ | ৯৯১ (২০০১) | ৪৪.১ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
কালমা ৪৭ | ৮৩৯৮ | ১৭৬১৬ | ১৮৬৮২ | ৩৭.৭ | ||||
চরভুতা ১৯ | ৬৭১২ | ১৩৭৪৩ | ১৪৭৯২ | ৩৮.৫ | ||||
ধলী গৌরনগর ২৮ | ১১৭৯৫ | ২০০৬৪ | ২০৮৫৫ | ৪০.৮ | ||||
পশ্চিম চর উমেদ ৭০ | ৭৯০৬ | ১৭৬৭৫ | ১৭৮৭০ | ৩৪.২ | ||||
ফরাজগঞ্জ ৩৮ | ৫৬৯৮ | ১১৩৭৪ | ১২৩৫১ | ৩৩.৭ | ||||
বদরপুর ১৬ | ৯৭২৪ | ১৬৯৬১ | ১৮১১৩ | ৩৫.৭ | ||||
লর্ড হার্ডিঞ্জ ৬৬ | ১১৩৬৩ | ১২৯৮৭ | ১২৮১১ | ৪২.৮ | ||||
লালমোহন ৫৭ | ৩৭৩৬ | ৭৫১৭ | ৮০২৭ | ৪৪.১ | ||||
রামগঞ্জ ৭৬ | ৫৮৪৪ | ১০৫৫২ | ১১৩৭৭ | ৪১.৪ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ আঃ রহমান তহসিলদারের বিল্ডিং (মুন্সি বাড়ি), বিজয় বাবুর বাড়ির মন্দির, খাস মহল ভূমি অফিস।
মুক্তিযুদ্ধ লালমোহন উপজেলায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো যুদ্ধ হয়নি। তবে এই উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা বরিশালের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দিয়ে তালতলীতে পাকবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করে। এছাড়া স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা লালমোহন থানা আক্রমণ করে পাকিস্তান পক্ষের পুলিশ ও রাজাকারদের সেখান থেকে বিতাড়িত করে।
বিস্তারিত দেখুন লালমোহন উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৯।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৫৩৮, মন্দির ১৩। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: দারা মসজিদ, উত্তর বাজার বড় মসজিদ, মিয়াবাড়ি মসজিদ এবং মদন মোহন আখড়া, গজারিয়া মন্দির, বাবু বাড়ির মন্দির।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪০.০%; পুরুষ ৪১.৩%, মহিলা ৩৮.৮%। কলেজ ৪, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৮০, এনজিও স্কুল ৩১, মাদ্রাসা ১৭৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: লালমোহন সরকারি শাহবাজপুর কলেজ, ডাঃ আজহার উদ্দিন কলেজ, লর্ড হার্ডিঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রামগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, লালমোহন ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী অনিয়মিত: শ্রাবনী, দ্বীপ শিখা, সময়ের শিখা।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩, সিনেমা হল ৪, সাহিত্য সংসদ ২, ক্লাব ৩৪, খেলার মাঠ ১৮।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৩.৯১%, অকৃষি শ্রমিক ৫.৮৬%, ব্যবসা ১২.২৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.০২%, চাকরি ৫.০২%, নির্মাণ ০.৮৬%, ধর্মীয় সেবা ০.২৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৩৬% এবং অন্যান্য ৯.৪০%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৪.৮৬%, ভূমিহীন ৪৫.১৪%। শহরে ৪৩.০১% এবং গ্রামে ৫৬.৪৭% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, মরিচ, গম, মিষ্টি আলু, চীনাবাদাম, পান, মসুর, ছোলা।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তামাক, পাট, তিসি, আখ।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, পেঁপে, কলা, সুপারি।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৪৫, হাঁস-মুরগি ৩২।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৫৪.৪৪ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৪৩.১৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ৬৯৫ কিমি; নৌপথ ৫৮ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা বরফকল।
কুটিরশিল্প মৃৎশিল্প, লৌহশিল্প, সূচিশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ, কাঠের কাজ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৪২। রামগঞ্জ হাট, হরিগঞ্জ হাট, নাজিরপুর হাট, কর্তার হাট, লর্ড হার্ডিঞ্জ বাজার, দেবিরচর বাজার, মঙ্গল সিকদার বাজার ও রায়চাঁদ বাজার উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ইলিশ মাছ।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৬.৯% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৭.৮%, ট্যাপ ০.৪% এবং অন্যান্য ১.৮%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৭১.০% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৫.২% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ৩.৮% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ১, কমিউনিটি ক্লিনিক ১৯।
এনজিও ব্র্যাক, আশা। [শাখাওয়াত হোসেন]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; লালমোহন উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।