ভোলাহাট উপজেলা

Banglapedia admin (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৭:২৯, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

ভোলাহাট উপজেলা (নবাবগঞ্জ জেলা)  আয়তন: ১২৩.৫৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৪৮´ থেকে ২৪°৫৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°০৮´ থেকে ৮৮°১৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য, দক্ষিণে শিবগঞ্জ (নবাবগঞ্জ) ও  গোমস্তাপুর উপজেলা।

জনসংখ্যা ১০৩৩০১; পুরুষ ৫১০৩৫, মহিলা ৫২২৬৬। মুসলিম ১০২৪০৩, হিন্দু ৮৮২, বৌদ্ধ ২ এবং অন্যান্য ১৪।

জলাশয় প্রধান নদী: মহানন্দা। ভেওয়া বিল, কালান বিল, আমগাছি বিল, কাউবাড়ি বিল ও চাত্রা বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন ভোলাহাট থানা গঠিত হয় ১৯১৮ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৩৭ ১০০ ১৩৭২৬ ৮৯৫৭৫ ৮৩৬ ৬১.২ ৪৫.০
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৫.০৭ ১৩৭২৬ ২৭০৭ ৬১.২
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
গোহালবাড়ী ৫৬ ১২৫৭০ ১৩৬১৪ ১৪০১৮ ৪৮.৮
জামবাড়ীয়া ৭৫ ৪৫৬৬ ৮৮৫৫ ৮৯০২ ৩৬.৩
দলদলী ৩৭ ৭৯৫০ ১৪৪৪৪ ১৫০১২ ৪৭.৩
ভোলাহাট ১৮ ৫৪৩৬ ১৪১২২ ১৪৩৩৪ ৫২.২

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ শিব মন্দির, জাদুনগরে অবস্থিত মুগল আমলের মসজিদ, গোপীনাথপুর ও বজরাটেকের সুলতানি আমলের মসজিদ, শাহাবুদ্দিন শাহের (র.) মাযার, বড় খান গাজীর (র.) মাযার, ত্রিরত্ন মন্দির।

ঐতিহাসিক ঘটনা গুপ্ত আমলের ২টি দেবমূর্তি এবং ধর্মপালের ভূমিদান সংক্রান্ত তাম্রলিপি এখানে পাওয়া যায়। ১৮৯৩ খ্রি. নভেম্বর মাসে তৎকালিন মালদহের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উমেশ চন্দ্র বটব্যাল উপজেলার খালিমপুর গ্রামের মোরি বেওয়া নামক জনৈক মহিলার নিকট হতে লিপিটি উদ্ধার করেন। এটি খালিমপুর লিপি নামে পরিচিত।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ১৬ অক্টোবর উপজেলার কাশিয়াবাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াইয়ে ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ৯ নভেম্বর পাকবাহিনী এ উপজেলার জামবাড়ীয়া গ্রামে ব্যাপক গণহত্যা ও লুটপাট চালায়। উপজেলার সাঠিয়া বাজার ও জাদুনগরে ২টি বধ্যভূমি এবং জামবাড়ীয়ায় ১টি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে।

বিস্তারিত দেখুন ভোলাহাট উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান   মসজিদ ১৮৪, মন্দির ৭, মাযার ১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: জাদুনগর মসজিদ, গোপিনাথপুর জামে মসজিদ, জামবাড়ীয়া জামে মসজিদ, বজরাটেক জামে মসজিদ, বড় খান গাজীর মাযার, ত্রিরত্ন মন্দির।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৭.২%; পুরুষ ৪৫.৭%, মহিলা ৪৮.৫%। কলেজ ৪, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫৫, মাদ্রাসা ১৫। উল্লেলখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ভোলাহাট মোহেবুলাহ ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৬), ভোলাহাট রামেশ্বর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১১), মুশরীভুজা উচ্চবিদ্যালয় (১৯৬২), গোহালবাড়ী সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৬১)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দর্পণ (১৯৯৪), বিকাশ (১৯৯৯)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ২, ক্লাব ২১, নাট্যদল ১, মহিলা সংগঠন ১, অডিটোরিয়াম ১, সিনেমা হল ১।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৬.২৭%, অকৃষি শ্রমিক ৫.২২%, শিল্প ০.৫৮%, ব্যবসা ১২.৬২%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.০৫%, চাকরি ৩.৬৩%, নির্মাণ ০.৬৯%, ধর্মীয় সেবা ০.১৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১৪% এবং অন্যান্য ৯.৬৩%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৪২.২৫%, ভূমিহীন ৫৭.৭৫%। শহরে ৪৮.১২% এবং গ্রামে ৪১.২৯% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, পাট, সরিষা, ডাল, আখ, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিসি, আউশ ধান, কাউন, মাষকলাই, চীনা।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, লিচু, জাম, তাল, নারিকেল, তরমুজ, কুল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৪, গবাদিপশু ৫, হাঁস-মুরগি ২০।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৭৪.৬৯কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৪.৯৭ কিমি, কাঁচারাস্তা ২২৫.৮ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা রেশমশিল্প, চালকল, আটাকল।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৪, মেলা ৩। গোহালবাড়ী হাট, বড়গাছির হাট ও মুন্সিগঞ্জের কানার হাট এবং পোল্লাডাঙ্গা, বাহাদুরগঞ্জ ও বজরাটেকের মেলা উল্লেলখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য রেশম সুতা, আম, শাকসবজি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪৩.৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৮৯.৬%, ট্যাপ ৩.৩% এবং অন্যান্য ৭.১%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৪১.১% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৪.৯% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্্িরন ব্যবহার করে। ৪.০% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেলক্স ২, হাসপাতাল ১, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৪, দাতব্য চিকিৎসালয় ১, ক্লিনিক ৩।

এনজিও ব্র্যাক, প্রশিকা, মানব উন্নয়ন সংস্থা।  [মাযহারুল ইসলাম তরু]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ভোলাহাট উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।