বীরগঞ্জ উপজেলা
বীরগঞ্জ উপজেলা (দিনাজপুর জেলা) আয়তন: ৪১৩.১১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°৪৮´ থেকে ২৬°০৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°২৯´ থেকে ৮৮°৪৪´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ঠাকুরগাঁও সদর ও দেবীগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে কাহারোল উপজেলা, পূর্বে আত্রাই নদী ও খানসামা উপজেলা, পশ্চিমে বোচাগঞ্জ, পীরগঞ্জ (রংপুর) ও ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা।
জনসংখ্যা ৩১৭২৫৩; পুরুষ ১৫৯৬১২, মহিলা ১৫৭৬৪১। মুসলিম ২২১০১১, হিন্দু ৮৮৫০৯, বৌদ্ধ ৪৪, খ্রিস্টান ৪১১৪ এবং অন্যান্য ৩৫৭৫।
জলাশয় প্রধান নদী: আত্রাই, পুনর্ভবা। পাইসা বিল, লাল বিল ও চন্দ্রঘোরের বিল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন বীরগঞ্জ থানা গঠিত হয় ১৮৯০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ১১ | ১৮৬ | ১৮৭ | ১৯৪৬৭ | ২৯৭৭৮৬ | ৭৬৮ | ৬৫.৭ | ৪৬.৯ |
পৌরসভা | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |||
৬.৩০ | ৯ | ১১ | ১৯৪৬৭ | ৩০৯০ | ৬৫.৭ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
নিজপাড়া ৪৩ | ৯৪৮৭ | ১৫৩০৬ | ১৫১৫১ | ৪৭.২ | ||||
পলাশবাড়ী ৫১ | ৯২৩৯ | ১৩৮৬৯ | ১৩৭১৫ | ৪৯.১ | ||||
পাল্টাপুর ৬০ | ৯৫৪৮ | ১৪৩১৭ | ১৩৯৬২ | ৪০.৮ | ||||
ভোগনগর ১৩ | ৯৫৩৮ | ১৩৮৪৯ | ১৩৬৫২ | ৫৯.২ | ||||
মরিচা ১৭ | ৯৪০০ | ১৩৫৫৮ | ১৩৫২১ | ৪৫.৩ | ||||
মোহনপুর ৩৪ | ৮৮২৪ | ১৪২৪২ | ১৪০৯২ | ৪৪.৬ | ||||
মোহাম্মদপুর ২৫ | ৭৯১৫ | ১০৩৩৫ | ১০২৫৫ | ৫৯.৭ | ||||
শতগ্রাম ৬৯ | ৯২৫৯ | ১৪৭৩৩ | ১৪৩৫৬ | ৪৪.৫ | ||||
শিবরামপুর ৮৬ | ৯৫৭১ | ১৩৯২১ | ১৩৮৫৮ | ৪৫.২ | ||||
সাতোর ৭৭ | ৯৭১৪ | ১৪০৫৯ | ১৩৯০৫ | ৪২.৯ | ||||
সুজালপুর ৯৪ | ৮০৩২ | ১১৪৭৪ | ১১৬৫৬ | ৩৯.৫ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ সেনগ্রাম জামে মসজিদ, লস্করপুর জামে মসজিদ।
ঐতিহাসিক ঘটনা এ উপজেলা তেভাগা আন্দোলন এবং সাঁওতাল বিদ্রোহের একটি প্রধান কেন্দ্র ছিল।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে ভাতগাঁও ব্রিজের পূর্বপাড়ে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে প্রায় ৫০ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং পাকবাহিনীর দুটি ট্যাংক ধ্বংস হয়। এছাড়া এ লড়াইয়ে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
বিস্তারিত দেখুন বীরগঞ্জ উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩১২, মন্দির ৪৫, গির্জা ৫, মাযার ২।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৮.১%; পুরুষ ৫১.৮%, মহিলা ৪৪.৩%। কলেজ ৮, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৭৩, প্রাথমিক বিদ্যালয় ২১০, কিন্ডারগার্টেন ৮, মাদ্রাসা ২৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: বীরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ, বীরগঞ্জ মহিলা কলেজ, গোলাপগঞ্জ কলেজ, বীরগঞ্জ কারিগরি কলেজ, চৌধুরী হাট কারিগরি কলেজ, পলাশবাড়ী ইউএসসি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪২), রহিমবক্স উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৪), ঝড়বাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৭), বীরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬২), গোলাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৯)।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী অনিয়মিত: চেতনা, শালবন।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ১১, মহিলা সংগঠন ১২, নাট্যদল ১, যাত্রাদল ২, সিনেমা হল ২।
বিনোদন কেন্দ্র সিংড়া শালবন।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭৪.০৪%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৭১%, শিল্প ০.৬৭%, ব্যবসা ৯.৮১%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৬১%, চাকরি ৩.৩৮%, নির্মাণ ০.৬৯%, ধর্মীয় সেবা ০.১৩%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১৪% এবং অন্যান্য ৪.৮২%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫০.২১%, ভূমিহীন ৪৯.৭৯%। শহরে ৪১.১৭% এবং গ্রামে ৫০.৬৬% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, আখ, আলু।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি পাট, তিল, কাউন।
প্রধান ফল-ফলাদি তরমুজ, আম, কলা, কাঁঠাল, লিচু।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ১২, হাঁস-মুরগি ১৫।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১০৪.২৩ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ০.৮৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ৮৫৫.১১ কিমি; নৌপথ ১৬ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা অটোরাইস মিল, হাসকিংমিল, স’মিল, অয়েলমিল, চিড়ার মিল, আইস ফ্যাক্টরি, বিস্কুট ফ্যাক্টরি।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, দারুশিল্প।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৫০, মেলা ৬। গোলাপগঞ্জ হাট ও ঢেমঢেমেডিয়া কালীর মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য তরমুজ, লিচু, আলু।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩৪.৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৬.৬%, ট্যাপ ০.৫% এবং অন্যান্য ২.৯%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৪৬.৯% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩২.০% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২১.১% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১০, হেলথ সেন্টার ২, ক্লিনিক ১, প্যাথলজী ল্যাব ১।
এনজিও ব্র্যাক, আশা, কারিতাস। [মমতাজুর আলম ইলু]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বীরগঞ্জ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।