বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি
বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি ১৮৬০ সালের সোসাইটিজ রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্টের অধীনে নিবন্ধিত একটি অরাজনৈতিক, বেসরকারি ও অলাভজনক সংস্থা। ১৯৫২ সালে এশিয়ার মানুষ ও প্রকৃতি বিষয়ে গবেষণার লক্ষ্যে বাংলাদেশে এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সংস্থাটির প্রেরণা ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো উভয়ই কলকাতা এশিয়াটিক সোসাইটির (স্থাপিত ১৭৮৪) অনুসারী। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এ সোসাইটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক। ঢাকা মহানগরে ৫ পুরাতন সচিবালয় রোডে (নিমতলী) সোসাইটির কার্যালয় স্থাপিত।
বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির জন্মের একটি গুণগত ঐতিহ্য রয়েছে। এর ভিত্তি রচিত হয়েছিল আঠারো শতকের শেষ পাদে যখন ১৭৮৪ সালের ১৫ জানুয়ারি তৎকালীন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি স্যার উইলিয়ম জোনস এশিয়ার মানুষ ও প্রকৃতি নিয়ে গবেষণার জন্য দি এশিয়াটিক সোসাইটি (The Asiatick Society) নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর কলকাতা এশিয়াটিক সোসাইটির সক্রিয় সদস্য ছিলেন এমন কিছুসংখ্যক পন্ডিত ঢাকায় চলে আসেন। তাঁরাই কলকাতা এশিয়াটিক সোসাইটির আদলে ঢাকায় একটি বিদ্বৎসঙ্ঘ প্রতিষ্ঠার ধারণা দেন। এটা লক্ষণীয় যে, প্রাচ্য গবেষণার উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে কলকাতায় আদি এশিয়াটিক সোসাইটির আদলে মুম্বাই (১৮০৪), লন্ডন (১৮২৩), কলম্বো (১৮৪৫), হংকং (১৮৪৭), টোকিও (১৮৭২), মালয়েশিয়া (১৮৭৮) ও কোরিয়ায় (১৯০০) এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এগুলি অবশ্য একটির সঙ্গে অন্যটি সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল না, তবে এদের সবক’টির লক্ষ্য ছিল এশিয়ার মানুষ ও প্রকৃতি বিষয়ে অধ্যয়ন।
ঢাকাতে অনুরূপ এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের তৎকালীন শিক্ষক এবং ঢাকা জাদুঘরের কিউরেটর ডক্টর আহমদ হাসান দানী। দেশবিভাগ-পূর্ব সময়ে দানী রাজশাহীতে অবস্থিত আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার আঞ্চলিক অধীক্ষক ছিলেন। তাঁকে এশিয়াটিক সোসাইটি অব পাকিস্তানের উইলিয়ম জোনস বলা যেতে পারে। ডক্টর দানীর ভাবনা ঢাকার বিশিষ্ট পন্ডিতবর্গের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন লাভ করে এবং তাঁরা ১৯৫২ সালের ৩ জানুয়ারি এক সভায় মিলিত হয়ে এশিয়াটিক সোসাইটি অব পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে আরও ছিলেন ডক্টর এ.বি.এম হবিবুল্লাহ, ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, ডক্টর আই.এইচ জুবেরী, ডক্টর সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, ডক্টর ডব্লিউ.এইচ.এ সাদানি, ডক্টর আবদুল হালিম, ডক্টর সিরাজুল হক, আবদুল হামিদ, সৈয়দ মুহাম্মদ তৈফুর, খান বাহাদুর আবদুর রহমান, শেখ শরাফুদ্দীন ও জে.এস টার্নার। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর পাকিস্তান এশিয়াটিক সোসাইটির নতুন নামকরণ হয় বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি।
সোসাইটির সদস্যপদ জাতীয়তা, বর্ণ, ধর্ম নির্বিশেষে সকলের জন্য উন্মুক্ত। সদস্যগণ মাসিক সাধারণ সভায় সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত হন। সদস্যপদের জন্য আবেদনপত্র সোসাইটির দুজন সদস্যের দ্বারা প্রস্তাবিত ও সমর্থিত হতে হয়। অতঃপর আবেদনপত্রটি নিরীক্ষা কমিটি কর্তৃক সমীক্ষার পর এটিকে সোসাইটির কাউন্সিলে পেশ করা হয়। কাউন্সিলের অনুমোদনক্রমে পরবর্তী মাসিক সাধারণ সভায় আবেদনকারীকে সদস্য পদের জন্য নির্বাচন করা হয়। নির্বাচিত হওয়ার পরে আবেদনকারী ভর্তি ও সদস্য ফি প্রদান করে সোসাইটির সদস্যপদ গ্রহণ করেন। সহযোগী সদস্য পদেও অনুরূপভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তবে এ ধরনের সদস্যগণ নির্বাচনে ভোট প্রদান ও অন্য কোনো সদস্যের আবেদনপত্রে প্রস্তাবক বা সমর্থক হওয়া ব্যতীত সোসাইটির সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকেন। সোসাইটি অনারারি সদস্য এবং ফেলোও নির্বাচন করে। এ ধরনের পদের জন্য আবেদন করতে হয় না। এশিয়া বিষয়ক অধ্যয়নের উপর অনন্য অবদান রেখেছেন এমন সুপ্রতিষ্ঠিত পন্ডিতদের অনারারি সদস্যপদ এবং ফেলোশিপ প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সাংগঠনিক বিন্যাসে কলকাতা এশিয়াটিক সোসাইটির কাঠামো অনুসৃত হয়েছে। সোসাইটি তার নিজস্ব নীতিমালার অধীনে দুবছরের জন্য নির্বাচিত ১৭ সদস্যের নির্বাহী কাউন্সিল দ্বারা পরিচালিত হয়। এই কাউন্সিলে থাকেন একজন প্রেসিডেন্ট, তিন জন ভাইস প্রেসিডেন্ট, একজন কোষাধ্যক্ষ, একজন সাধারণ সম্পাদক, একজন সম্পাদক এবং ১২ জন সদস্য (সদস্যদের মধ্যে ২ জন ফেলোদের মধ্য থেকে কাউন্সিল কর্তৃক মনোনীত)। কাউন্সিলের দায়িত্ব হলো সোসাইটির গঠনতন্ত্র সংরক্ষণ, কর্মপন্থা নির্ধারণ এবং সোসাইটির কার্যক্রম পরিচালনা। কাউন্সিলকে এর কার্যক্রম পরিচালনায় সোসাইটির সদস্যদের নিকট জবাবদিহি করতে হয়। কাউন্সিল সাধারণত মাসে একবার সভায় মিলিত হয় এবং সেখানে সোসাইটি পরিচালনার সার্বিক উপস্থাপন ও অনুমোদন করা হয়। সাধারণ সম্পাদক সোসাইটির নির্বাহী প্রধান হিসেবে দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা, সোসাইটির সকল রেকর্ড সংরক্ষণ এবং গঠনতন্ত্রের বিধান অনুযায়ী সভা আহবান করে থাকেন এবং দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় সোসাইটির কার্যক্রমের রিপোর্ট উপস্থাপন করেন।
বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির অন্যতম দায়িত্ব হলো প্রতিমাসে একটি মাসিক সাধারণ সভার আয়োজন করা এবং ওই সভায় গবেষণামূলক প্রবন্ধ উপস্থাপনের ব্যবস্থা করা। এছাড়াও সোসাইটি বছর ব্যাপী সেমিনার, কনফারেন্স, ট্রাস্টফান্ড বক্তৃতা এবং বিশেষ বক্তৃতার আয়োজন করে থাকে। এছাড়াও প্রতিবছর ৩ জানুয়ারি সোসাইটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন করা হয় এবং এ উপলক্ষে সোসাইটি দেশের বা বিদেশের কোনো নামকরা পন্ডিতকে ফাউন্ডেশন ডে বক্তৃতা দেবার জন্য আমন্ত্রন জানায়।
প্রতিষ্ঠাকাল থেকে বর্তমান (২০১৩) সময় পর্যন্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং গঠিত ট্রাস্ট ফান্ডের তালিকা দেওয়া হলো:
সময়কাল | সভাপতি | সাধারণ সম্পাদক |
১৯৫২-৫৩ | আব্দুল হামিদ | ড. আহমদ হাসান দানী |
১৯৫৪ | ড. মোঃ শহীদুল্লাহ | ড. সিরাজুল হক |
১৯৫৫ | অধ্যাপক আব্দুল হালিম | ড. সিরাজুল হক |
১৯৫৬ | বিচারপতি মোঃ ইব্রাহীম | ড. আহমদ হাসান দানী |
১৯৫৭-৫৮ | খান বাহাদুর আব্দুর রহমান খান | ড. আহমদ হাসান দানী |
১৯৫৯ | খান বাহাদুর আব্দুর রহমান খান | ড. এম. সগীর হাসান |
১৯৬০-৬১ | অধ্যাপক আব্দুল হালিম | ড. আহমদ হাসান দানী |
১৯৬২ | ড. মফিজুল্লাহ কবীর | ড. মোঃ শহীদুল্লাহ |
১৯৬৩-৬৪ | ড. মোঃ শহীদুল্লাহ | ড. এস. সাজ্জাদ হোসেন |
১৯৬৫ | ড. মোহাম্মদ এনামুল হক | ড. আব্দুল করিম |
১৯৬৬ | ড. মোহাম্মদ এনামুল হক | ড. মফিজুল্লাহ কবীর |
১৯৬৭ | ড. মোঃ শহীদুল্লাহ | সৈয়দ মর্তুজা আলী |
১৯৬৮ | বিচারপতি আব্দুল মওদুদ | অধ্যাপক এ.বি.এম. হবিবুল্লাহ |
১৯৬৯-৭৩ | অধ্যাপক এ.বি.এম হবিবুল্লাহ | ড. আহমদ শরীফ |
১৯৭৪ | সৈয়দ মর্তুজা আলী | ড. অজয় কুমার রায় |
১৯৭৫ | অধ্যাপক এ.বি.এম হবিবুল্লাহ | ড. অজয় কুমার রায় |
১৯৭৬ | কামরুদ্দীন আহমেদ | ড. এম. মনিরুজ্জামান মিঞা |
১৯৭৭-৭৮ | কামরুদ্দীন আহমেদ | ড. এম.আর তরফদার |
১৯৭৯ | অধ্যাপক সিরাজুল হক | ড. এম.আর তরফদার |
১৯৮০ | অধ্যাপক মোঃ এনামুল হক | ড. এম.আর তরফদার |
১৯৮১ | খান বাহাদুর আব্দুল হাকিম | ড. সিরাজুল ইসলাম |
১৯৮২ | অধ্যাপক মফিজুল্লাহ কবীর | ড. সিরাজুল ইসলাম |
১৯৮৩ | অধ্যাপক এ.আর মল্লিক | ড. কে.এম মহসিন |
১৯৮৪-৮৫ | অধ্যাপক এ.আর মল্লিক | অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান |
১৯৮৬-৮৭ | জনাব আ.ক.ম জাকারিয়া | অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম |
১৯৮৮-৮৯ | ড. এ.এম শরাফুদ্দীন | অধ্যাপক ওয়াকিল আহমদ |
১৯৯০-৯১ | ড. এ.এম শরাফুদ্দীন | ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন |
১৯৯২-৯৩ | অধ্যাপক এ.কে.এম নূরুল ইসলাম | অধ্যাপক হাসনা বেগম |
১৯৯৪-৯৫ | অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম | ড. হারুন-অর-রশীদ |
১৯৯৬-৯৭ | অধ্যাপক ওয়াকিল আহমদ | অধ্যাপক আকমল হোসেন |
১৯৯৮-৯৯ | অধ্যাপক এম. হারুনুর রশীদ | ড. সাজাহান মিয়া |
২০০০-২০০১ | অধ্যাপক আবদুল মমিন চৌধুরী | ড. সাজাহান মিয়া |
২০০২-২০০৩ | অধ্যাপক আবদুল মমিন চৌধুরী | অধ্যাপক সৈয়দ রাশেদুল হাসান |
২০০৪-২০০৫ | অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদ | অধ্যাপক এস.এম মাহফুজুর রহমান |
২০০৬-২০০৭ | অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদ | অধ্যাপক সাজাহান মিয়া |
২০০৮-২০০৯ | অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম | অধ্যাপক মাহফুজা খানম |
২০১০-২০১১ | অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম | অধ্যাপক মাহফুজা খানম |
২০১২-২০১৩ | অধ্যাপক নজরুল ইসলাম | অধ্যাপক আহমেদ এ. জামাল |
২০১৪-২০১৫ | অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম চৌধুরী | অধ্যাপক আহমেদ এ. জামাল |
ট্রাস্ট ফান্ডের তালিকা | ||||||||
ট্রাস্ট ফান্ডের নাম | স্থাপিত | প্রতিষ্ঠাতা | গবেষণার বিষয়/ক্ষেত্র | |||||
ফিনাস ফাউন্ডেশন | ১৯৮৪ | খান বাহাদুর আব্দুল হাকিম | আধুনিক জীবন সাধনে বিজ্ঞানের ভূমিকা | |||||
সালেহা খানম ট্রাস্ট ফান্ড | ১৯৮৬ | জনাব মুস্তাফিজুর রহমান খান | সমাজ জীবনে সঞ্চয়ের ভূমিকা | |||||
মুস্তাফিজুর রহমান খান অ্যান্ড সালেহা খানম ট্রাস্ট ফান্ড | ১৯৮৭ | অধ্যাপক মাহফুজা খানম | এশিয়ায় নারী অধিকার | |||||
অধ্যাপক মুফাসসিলউদ্দিন আহমেদ ট্রাস্ট ফান্ড | ১৯৮৭ | অধ্যাপক মুফাসসিলউদ্দিন আহমেদ | মেডিসটিক সাইকোথেরাপি | |||||
অধ্যাপক মোহাম্মদ ইছহাক ট্রাস্ট ফান্ড | ১৯৮৭ | অধ্যাপক মোহাম্মদ ইছহাক | বাংলার ইতিহাস, ১৯৪৭ পর্যন্ত | |||||
মুন্সী আফতাবউদ্দিন অ্যান্ড আব্দুল হাফিজ ট্রাস্ট ফান্ড | ১৯৮৭ | জনাব আব্দুল হাফিজ | বাংলাদেশ স্টাডিজ | |||||
অধ্যাপক শফিকুর রহমান ট্রাস্ট ফান্ড | ১৯৮৮ | অধ্যাপক শফিকুর রহমান | মানবিক ও সমাজ বিজ্ঞান | |||||
জাতীয় অধ্যাপক আতোয়ার হুসেইন ট্রাস্ট ফান্ড | ১৯৮৮ | অধ্যাপক রামত আরা হুসেইন | এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক সমস্যা এবং উন্নয়নের লক্ষ্যে পরিকল্পনা | |||||
হালিমা বেগম অ্যান্ড শেখ শরাফউদ্দিন ট্রাস্ট ফান্ড | ১৯৯১ | ড. আবদুল্লাহ আল-মুতী শরাফউদ্দিন | বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | |||||
অধ্যাপক মোহাম্মদ নূরুল করিম ট্রাস্ট ফান্ড | ১৯৯১ | অধ্যাপক মোহাম্মদ নূরুল করিম | আরবি, ইসলামি শিক্ষা, ফার্সি ও উর্দু বিষয়ে অধ্যয়নে এশিয়ার অবদান | |||||
জাহানারা মজিদ অ্যান্ড মাহবুব আলম ট্রাস্ট ফান্ড | ১৯৯৪ | মাহবুব আলম | ঢাকা মহানগর: অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ | |||||
বিচারপতি মুহাম্মদ ইব্রাহীম ট্রা্স্ট ফান্ড | ১৯৯৬ | জাতীয় অধ্যাপক সুফিয়া আহমেদ এবং জনাব তারিক ইব্রাহীম | মানবিক ও লিবারাল আর্টস | |||||
শহীদ জামিল আহমেদ ট্রাস্ট ফান্ড | ২০০০ | মিসেস আঞ্জুমান আরা জামিল | প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিষয়, সামরিক বেসামরিক সম্পর্ক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষায় প্রতিরক্ষা সার্ভিসের ভূমিকা | |||||
ড. সিরাজুল হক অ্যান্ড মাহজুজাহ হক ট্রাস্ট ফান্ড | ২০০১ | অধ্যাপক সিরাজুল হক | ইসলামের বিভিন্ন দিক | |||||
মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী ট্রাস্ট ফান্ড | ২০০৩ | অধ্যাপক ওয়াজিউর রহমান | সমসাময়িক বাংলা সাহিত্যে মুসলিম লেখক, বিশ শতকের বাংলা সাহিত্য, বাংলা সাহিত্যে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় প্রভাব | |||||
মৌলভী শামসুদ্দিন আহমেদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ড | ২০০৩ | মো. আমিনুল ইসলাম | মুদ্রাতত্ত্ব, লিপিতত্ত্ব, প্রত্নতত্ত্ব, শিল্পকলা ও স্থাপত্য | |||||
এ.কে.এম আজিজুল হক অ্যান্ড হুসনিয়ারা হক ট্রাস্ট ফান্ড | ২০০৩ | অধ্যাপক হুসনিয়ারা হক | শিক্ষা ও উন্নয়ন | |||||
ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন | ২০০৪ | জাতীয় অধ্যাপক সুফিয়া আহমেদ | বাংলাদেশের আইন ও সাংবিধানিক ইতিহাস এবং সাংস্কৃতিক ইতিহাস | |||||
অধ্যাপক মাহফুজা খানম অ্যান্ড ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ট্রাস্ট ফান্ড | ২০০৪ | অধ্যাপক মাহফুজা খানম | আইন ও মানবাধিকার | |||||
বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট | ২০০৪ | বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি | বাংলাপিডিয়ার সংশোধিত ও বর্ধিত সংস্করণ প্রকাশ এবং অনুরূপ প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন। | |||||
অধ্যাপক আব্দুল মাজেদ খান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট | ২০০৮ | আব্দুর রহমান খান অ্যান্ড মিসেস মালিহা চৌধুরী | বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাস ও সংস্কৃতি। | |||||
কালচারাল স্টাডিজ ট্রাস্ট | ২০০৮ | বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি | সাংস্কৃতিক সম্পর্কিত গবেষণা ও প্রকাশনা,লোকশিল্প জাদুঘর ও আর্ট গ্যালারির পরিচালনা, শিল্প প্রদর্শনীর আয়োজন ইত্যাদি। | |||||
ফ্লোরা ও ফনা স্টাডিজ ট্রাস্ট | ২০০৮ | বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি | বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণি জ্ঞানকোষের সংশোধিত ও বর্ধিত সংস্করণ প্রকাশ এবং অনুরূপ প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন | |||||
খান বাহাদুর আহসানউল্লাহ ট্রাস্ট ফান্ড | ২০০৯ | ঢাকা আহসানিয়া মিশন | কলা, মানবিক, সমাজ বিজ্ঞান ও বিজ্ঞান বিষয়ে তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক গবেষণা | |||||
এফ.আই.এম নুরুল আবেদিন এবং আঞ্জুমান আরা বেগম মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ড | ২০১০ | অধ্যাপক সামিনা সুলতানা | কলা, মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান এবং পরিবেশ | |||||
খোদা বকস্ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট | ২০১০ | জাভেদ বখত | অর্থনীতি, ইতিহাস, সামাজিক বিজ্ঞান এবং মানবাধিকার | |||||
ড. আনোয়ার দিল অ্যান্ড ড. আফিয়া দিল ট্রাস্ট ফান্ড | ২০১১ | ড. আনোয়ার দিল এবং ড. আফিয়া দিল | এশিয়ার ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং সভ্যতা |
সোসাইটির একটি প্রকাশনা কার্যক্রম রয়েছে। সোসাইটি পন্ডিত ও গবেষকদের তাদের গবেষণা গ্রন্থ বা প্রবন্ধ সোসাইটি থেকে প্রকাশ করতে উদ্বুদ্ধ করে। সোসাইটি এ পর্যন্ত প্রাচ্য বিষয়ে ১০৭টি গ্রন্থ প্রকাশ করেছে। সোসাইটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনার মধ্যে উল্লেলখযোগ্য হলো: History of Bangladesh (1704-1971) ৩ খন্ড, Banglapedia: National Encyclopedia of Bangladesh (২০০৩) ১০ খন্ড, Cultural Survey of Bangladesh (২০০৮) ১২ খন্ড, Encyclopedia of Flora and Fauna of Bangladesh (২০১০) ২৮ খন্ড, A Survey of Historical Monuments and Sites in Bangladesh: Mainamati-Devaparvata, Gawr-Lakhnawti, Sonargaon-Panam (১৯৯৭) ৩ খন্ড। দেশি ও বিদেশি পাঠকদের প্রয়োজনে সোসাইটির প্রকাশিত বহু খন্ডের অধিকাংশ গ্রন্থ বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় এবং সিডি ও অনলাইন মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে।
এছাড়াও সোসাইটির জার্নাল ও নিউজলেটার নিয়মিত প্রকাশিত হয়। তিনটি জার্নাল বছরে দুবার করে নিয়মিত বের হয়। এগুলি হলো: Journal of the Asiatic Society of Bangladesh (Humanities), Journal of the Asiatic Society of Bangladesh (Science), বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি পত্রিকা। এসব জার্নাল ছাড়াও সোসাইটির চলমান কার্যক্রম সম্পর্কে সদস্যদের অবহিত করার জন্য একটি ত্রৈমাসিক নিউজলেটার প্রকাশ করা হয়। সোসাইটির সকল সদস্যকে বিনামূল্যে এসব জার্নাল ও নিউজলেটারের কপি প্রদান করা হয়। সোসাইটি বড় ধরনের যৌথ গবেষণা প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে থাকে। তাছাড়া, সোসাইটি বিদেশি গবেষকদের এদেশে তাদের গবেষণাকর্ম পরিচালনার জন্য মঞ্জুরি ও সহায়তা দিয়ে থাকে। এ ধরনের গবেষকরা সোসাইটির গ্রন্থাগার ব্যবহার ও আবাসনসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন।
বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির রয়েছে ১৫ হাজার গ্রন্থ সম্বলিত একটি সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার। এ সংগ্রহের মধ্যে রয়েছে বই, জার্নাল, পুরাতন পান্ডুলিপি এবং অন্যান্য দুষ্প্রাপ্য গবেষণা সামগ্রী। সোসাইটির সকল সদস্য ও অপরাপর গবেষক গ্রন্থাগার থেকে গ্রন্থাবলি ব্যবহার করতে পারেন এবং একটি বিশেষ সময়ের জন্য বই ধারও নিতে পারেন। অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে পন্ডিতজনের নিকট গ্রন্থাগারটি একটি বিশেষ গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। এ ছাড়াও সোসাইটির রয়েছে একটি মানচিত্রাঙ্কন, আলোকচিত্র ও মাল্টিমিডিয়া বিষয়ক গ্রন্থাগার।
শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর জন্য সোসাইটি ৩৫০০ বর্গফুট আয়তনের একটি স্থায়ী আর্ট গ্যালারি নির্মাণ করেছে। এটি দেশি-বিদেশি সুপ্রসিদ্ধ শিল্পীদের শিল্পকর্ম সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করে থাকে। এছাড়াও সোসাইটির রয়েছে পাঁচকক্ষ বিশিষ্ট একটি গেস্ট হাউস যেখানে পন্ডিত, গবেষক, অতিথি এবং সদস্যদের জন্য আবাসনের সুব্যবস্থা আছে।
সোসাইটির কার্যক্রমের পরিধি বিস্তার ও বিদ্যোৎসাহী লোকদের সোসাইটির কর্মকান্ডে অংশগ্রহণের সুযোগদানের লক্ষ্যে এখানে ১৯৮৪ সালে এনডাউমেন্ট স্কিম চালু করা হয়। তখন থেকে এ পর্যন্ত সোসাইটিতে মোট ২৪টি ট্রাস্ট ফান্ড চালু করা হয়েছে। প্রতিটি ট্রাস্ট ফান্ডই একটি আলাদা বোর্ড অব ট্রাস্টি দ্বারা পরিচালিত হয়। এছাড়াও সোসাইটি কর্তৃক গৃহীত ও বাস্তবায়িত ৩টি প্রকল্প সমাপ্তির পর এর পরিসম্পদ নিয়ে ৩টি ট্রাস্টফান্ড গঠন করা হয়েছে। এগুলি হলো বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, কালচারাল স্টাডিজ ট্রাস্ট, ফ্লোরা অ্যান্ড ফনা স্টাডিজ ট্রাস্ট। এছাড়াও সোসাইটি ঢাকার বিভিন্ন দিক নিয়ে গবেষণা পরিচালনার লক্ষে সেন্টার ফর ঢাকা স্টাডিজ স্থাপন করেছে। ট্রাস্ট ফান্ডগুলি গবেষণা কর্ম, বক্তৃতা অনুষ্ঠান, পুরস্কার, সম্মাননা প্রদান, গ্রন্থ রচনা, গবেষণা কর্মে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ, প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ প্রভৃতি কাজে অর্থায়ন করে থাকে।
সোসাইটির আয় সংগৃহীত হয় বিভিন্ন উৎস থেকে, যেমন সরকারি অনুদান, সদস্যদের চাঁদা, সোসাইটি থেকে প্রকাশিত বই-পুস্তক বিক্রয়ের আয়, ট্রাস্ট ফান্ড থেকে অর্জিত সুদ, অনুদান এবং সোসাইটির অডিটোরিয়াম, গেস্ট-হাউজ ও আর্ট গ্যালারি থেকে প্রাপ্ত ভাড়ার অর্থ। [সাজাহান মিয়া]