নাগরপুর উপজেলা

Banglapedia admin (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৬:৩৭, ৫ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

নাগরপুর উপজেলা (টাঙ্গাইল জেলা)  আয়তন: ২৬২.৭০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৫৮´ থেকে ২৪°১০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৪৬´ থেকে ৯০°০১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে টাঙ্গাইল সদর ও দেলদুয়ার উপজেলা, দক্ষিণে দৌলতপুর (মানিকগঞ্জ) ও সাটুরিয়া উপজেলা, পূর্বে মির্জাপুর ও ধামরাই  উপজেলা, পশ্চিমে চৌহালি ও শাহজাদপুর উপজেলা।

জনসংখ্যা ২৮৮০৯২; পুরুষ ১৩৬৫৮৫, মহিলা ১৫১৫০৭। মুসলিম ২৬৮৭২০, হিন্দু ১৯৩৬৫, খ্রিস্টান ২ এবং অন্যান্য ৫।

জলাশয় প্রধান নদী: যমুনা, ধলেশ্বরী, পুরাতন ধলেশ্বরী ও বংশী। গাইঘাটা খাল ও ভড়ুয়া বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন নাগরপুর থানা গঠিত হয় ১৯০৬ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ৯ সেপ্টেম্বর ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ১২ ২১৭ ২৪৫ ১৩১১০ ২৭৪৯৮২ ১০৯৭ ৫৮.৩ ৪২.০
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৪.৬৮ ১৩১১০ ২৮০১ ৫৮.৩
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
গয়হাটা ৪৩ ৬২৪৮ ১৪৯০৭ ১৫৭০৬ ৪৮.১
দুপতিয়র ২১ ৬৭৮৯ ১২৮১৬ ১৩৫২০ ৩৫.৬
ধুবুরিয়া ৩৬ ২৮৯৭ ৬০২৭ ৬৭৩৩ ৪৭.৪
নাগরপুর ৭৩ ৪৩৮৬ ১৩০৪১ ১৩৯৯৭ ৪৮.০
পাকুটিয়া ৮০ ৪২৯৭ ৮৫১৪ ৯৬৭০ ৪৯.১
বেকড়া ১০ ২৬১৮ ৪৯২৬ ৫৮৮৫ ৪৫.৮
ভাদ্রা ১২ ৫৪০১ ১০৫৭৫ ১১৩৭৫ ৪১.৩
ভাড়রা ১৪ ৯৪০৯ ১৪৭৭০ ১৫৯৭৩ ৩৬.৮
মামুদ নগর ৫৮ ৭৯৫৯ ১৮০৪৭ ২০৩৬৩ ৩২.৫
মোকনা ৬৫ ৫৮৯২ ১০২৩১ ১১৮০৯ ৪২.৪
সহবতপুর ৮৭ ৫৮৯৪ ১২৮২৫ ১৪৭০৮ ৪৬.৭
সলিমাবাদ ৯৪ ৪২০০ ৯৯০৬ ১১৭৬৮ ৫০.৪

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ তেবাড়ীয়া মসজিদ (মুগল আমলে নির্মিত), বৃন্দাবনচন্দ্র বিগ্রহের অট্টালিকা।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর এ উপজেলার বনগ্রামে পাকসেনারা ব্যাপক লুঠতরাজ ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। একই দিনে সারেংপুর গ্রামে তারা একই পরিবারের ৭ জনকে হত্যা করে। এছাড়া পাকসেনারা মুক্তিযুদ্ধের সময় বড়নগর গ্রামেও ব্যাপক লুটপাট করে। মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলার নাগরপুর থানা, ঘাসকাউরিয়া, বনগ্রাম, কেদারপুর, কোনড়া প্রভৃতি স্থানে পাকসেনাদের বিরুদ্ধে অপারেশন পরিচালনা করে। উপজেলার সারেংপুরে ১টি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে।

বিস্তারিত দেখুন নাগরপুর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৫।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২৭৯, মন্দির ৯০। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: সলিমাবাদ মসজিদ, সদামপাড়া মসজিদ, গয়হাটা মঠ।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪২.৭%; পুরুষ ৪৬.৩%, মহিলা ৩৯.৬%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৫৭, মাদ্রাসা ১২৩। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নাগরপুর সরকারি কলেজ (১৯৬৬), নাগরপুর মহিলা কলেজ (১৯৮৯), গয়হাটা উদয়তারা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৭৯), যদুনাথ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০০), আফছার মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৮), পাকুটিয়া বিসিআরজি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), ধুবুরিয়া ছিফাতুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), সারেংপুর বিলাতেশ্বরী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১), ভাড়রা উমেশচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩০), সহবতপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫০), নয়ান খান মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৮৯)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী  সাপ্তাহিক নাগরপুর বার্তা (অনিয়মিত) ও ধলেশ্বরী (অনিয়মিত সাহিত্যপত্র)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৫, ক্লাব ২৬৫, সিনেমা হল ৩, মহিলা সমবায় সমিতি ১৩, খেলার মাঠ ১৪।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬১.৬৩%, অকৃষি শ্রমিক ৩.২২%, শিল্প ১.০৭%, ব্যবসা ১১.২০%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৬৬%, চাকরি ১০.৫০%, নির্মাণ ০.৭৪%, ধর্মীয় সেবা ০.২৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৯৪% এবং অন্যান্য ৮.৭৮%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৫.৭৮%, ভূমিহীন ৩৪.২২%। শহরে ৩৭.৭৩% এবং গ্রামে ৬৭.০৯% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, সরিষা, আখ।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, তিসি, কাউন, মিষ্টি আলু, চিনা, কলাই।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, জাম, কুল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার গবাদিপশু ৭১, হাঁস-মুরগি ৪০।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৯৯.৩ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৪.২২ কিমি, কাঁচারাস্তা ৬০৯ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, মৃৎশিল্প, লৌহশিল্প, কাঠের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৩, মেলা ৩। নাগরপুর হাট, সলিমাবাদ হাট, সহবতপুর হাট, ধুনিপাড়া হাট এবং চৈত্র সংক্রান্তি মেলা (দুয়াজানী) উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  ধান, পাট, কলা, আখ।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৮.৪% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৭.২%, ট্যাপ ০.২% এবং অন্যান্য ২.৬%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা ৪৮.২% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৮.৭% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩.১% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র  ৬, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১২, কমিউনিটি ক্লিনিক ৩৫, প্রাইভেট ক্লিনিক ৬।

এনজিও প্রশিকা, আশা, ব্র্যাক। [মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নাগরপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।