জাজিরা উপজেলা
জাজিরা উপজেলা (শরিয়তপুর জেলা) আয়তন: ২৪৬.২১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°১৫´ থেকে ২৩°২৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°১৩´ থেকে ৯০°২৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে লৌহজং ও টঙ্গীবাড়ী উপজেলা, দক্ষিণে শরিয়তপুর সদর ও নড়িয়া উপজেলা, পূর্বে নড়িয়া উপজেলা, পশ্চিমে শিবচর ও মাদারীপুর সদর উপজেলা।
জনসংখ্যা ১৯৪০১৯; পুরুষ ৯৬০৪১, মহিলা ৯৭৯৭৮। মুসলিম ১৯১৫৯৭, হিন্দু ২৪০৭ খ্রিস্টান ১৪ এবং অন্যান্য ১।
জলাশয় প্রধান নদী: পদ্মা।
প্রশাসন থানা গঠিত হয় ১৯৭৩ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ১২ | ১১৪ | ২০০ | ২১২৫১ | ১৭২৭৬৮ | ৭৮৮ | ৫৬.০ | ৪৩.০ |
পৌরসভা | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |||
১৩.২৭ | ৯ | ১৯ | ২১২৫১ | ১৬০১ | ৫৬.০ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
কণ্ডের চর ৫১ | ১০৩৯৯ | ৫৬৩৪ | ৫৬২৯ | ৩৫.৭ | ||||
জয়নগর ৪৩ | ৩৫৮২ | ৬৯৯১ | ৭৩৮৫ | ৪৮.১ | ||||
জাজিরা ৯৪ | ১৮৬৩ | ৩৬০৭ | ৪০১১ | ৫৫.৮ | ||||
নাওডোবা ৬৫ | ৪১১৯ | ৯৭৬৪ | ১০১০৩ | ৪১.০ | ||||
পালের চর ৭৩ | ৯৮৬৩ | ৬১১৩ | ৬১৯১ | ৩৬.১ | ||||
পূর্ব নাওডোবা ৮০ | ৬৬৬৯ | ৮৫৬৩ | ৮৪৭৩ | ৪১.৪ | ||||
বড় কৃষ্ণনগর ২১ | ২৭২৪ | ৬৫৩০ | ৬৫৭১ | ৪৪.৫ | ||||
বড় গোপালপুর ১২ | ২১৪৮ | ৫৩৮৬ | ৫১৯৪ | ৪৫.২ | ||||
বড়কান্দী ১৪ | ৫৪৫৮ | ৯২৮৭ | ৯২৭২ | ৩৬.৫ | ||||
বিলাসপুর ২৯ | ৩১২৩ | ৬৭০৭ | ৭৪২৪ | ৪৭.১ | ||||
মূলনা ৫৮ | ৩১৭০ | ৭৫৫৭ | ৭৪৯৮ | ৪৭.৬ | ||||
সেনের চর ৮৭ | ৪৪৩৯ | ৯৪২২ | ৯৪৫৬ | ৪৩.২ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বেশ কয়েকটি খণ্ডযুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ সময় স্থানীয় রাজাকাররা দক্ষিণ নমকান্দি গ্রাম পুড়িয়ে দেয় এবং ব্যাপক ধ্বংস ও হত্যাযজ্ঞ চালায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলার বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। উপজেলায় ১টি স্মৃতিসৌধ এবং ৬টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।
বিস্তারিত দেখুন জাজিরা উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৪।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৭৪৭, মন্দির ৪, আশ্রম ১, মাযার ১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: জাজিরা উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদ।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৪.৪%; পুরুষ ৪৫.৫%, মহিলা ৪৩.৩%। কলেজ ৪, কারিগরি কলেজ ১, প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭০, কমিউনিটি বিদ্যালয় ৬, কিন্ডার গার্টেন ১২, মাদ্রাসা ১১। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: জাজিরা ডিগ্রি কলেজ, জাজিরা মোহর আলী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৮), জাজিরা হাট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জাজিরা শামসুল উলুম মাদ্রাসা।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, ক্লাব ২, কমিউনিটি সেন্টার ১, সংগীত একাডেমি ১, শিল্পকলা একাডেমি ১, সিনেমা হল ২, অডিটোরিয়াম ১, নাট্যদল ১, সাংস্কৃতিক সংগঠন ২, মহিলা সংগঠন ২, খেলার মাঠ ১০।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭১.৩২%, অকৃষি শ্রমিক ১.৮০%, শিল্প ০.৭৯%, ব্যবসা ১২.৭৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৭৯%, চাকরি ৩.৯৬%, নির্মাণ ০.৪৫%, ধর্মীয় সেবা ০.২০%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১.৮৯% এবং অন্যান্য ৫.০৩%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৭৪.৪০%, ভূমিহীন ২৫.৬০%। শহরে ৬০.২৩% এবং গ্রামে ৭৫.৯৬% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, সরিষা, পিঁয়াজ, রসুন, কালিজিরা, শাকসবজি।
বিলুপ্ত ও বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি কাউন, তিসি, ছোলা।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, জাম, কাঠাল, কলা, বেল।
মৎস্য, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ১৪, গবাদিপশু ৪৫, হাঁস-মুরগি ৬৩।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৮৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩৭২ কিমি; নৌপথ ২৯ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা চালকল, তেলকল, কাঠ চেরাই কল, বরফকল, ওয়েল্ডিং কারখানা।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, বাঁশ ও বেতের কাজ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৬, মেলা ৪। কাজীরহাট, লাউখোলা হাট উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ইলিশ, কাঁচা পাট, শাকসবজি, পিঁয়াজ, রসুন, কালিজিরা।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪৩.৬% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে ।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৭.৬%, ট্যাপ ০.২% এবং অন্যান্য ২.২%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক পাওয়া গেছে।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা ৮২.৬% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১৫.৩% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে । ২.১% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র ৩, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১২, কমিউনিটি ক্লিনিক ১৬, প্রাইভেট ক্লিনিক ৩, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ২, পশু চিকিৎসা কেন্দ্র ১।
এনজিও ব্র্যাক, আশা, হীড বাংলাদেশ। [শাজাহান খান]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; জাজিরা উপজেলা মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০০৭।