মেনিনজাইটিস: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

("'''মেনিনজাইটিস''' (Meningitis) হলোমেনিনজেস বা মস্তিষ্কের ঝিল্লীর প্রদাহ। মেনিনজেস হলো তিনটি ঝিল্লি (১. ডুরা ম্যাটার, সবচেয়ে বাইরের স্তর; ২. অ্যারাকনয়েড ম্যাটার, মাঝের স্তর; এবং ৩. প..." দিয়ে পাতা তৈরি)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
'''মেনিনজাইটিস''' (Meningitis)  হলোমেনিনজেস বা মস্তিষ্কের ঝিল্লীর প্রদাহ। মেনিনজেস হলো তিনটি ঝিল্লি (১. ডুরা ম্যাটার, সবচেয়ে বাইরের স্তর; ২. অ্যারাকনয়েড ম্যাটার, মাঝের স্তর; এবং ৩. পিয়া ম্যাটার, সবচেয়ে ভিতরের স্তর যা মস্তিষ্ক এবং মেরুরজ্জুর সবচেয়ে কাছাকাছি) যা মস্তিষ্ক এবং মেরুরজ্জু বা সুষু¤œাকা-কে আবৃত করে ও স্পাইনাল কর্ডকে সুরক্ষিত রাখে এবং মস্তিষ্ক ও মেনিনজেসের মাঝে সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড নামে একটি প্রতিরক্ষামূলক তরল থাকে, যা সাধারণত স্পাইনাল ফ্লুইড নামে পরিচিত। এই তরল মস্তিষ্ক ও মেরুরজ্জুকে ধাক্কা এবং অন্যান্য ধরণের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং এটি মেরুরজ্জুকে সুস্থ রাখার জন্য পুষ্টির পরিবহন ব্যবস্থা হিসেবেও কাজ করে। সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড সংক্রমিত হলে মেনিনজাইটিস হতে পারে। ভাইরাস দ্বারা সংক্রমণ হলো মেনিনজাইটিসের সবচেয়ে সাধারণ কারণ, তারপরে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ এবং ছত্রাক ও পরজীবী সংক্রমণে মেনিনজাইটিস বেশি দেখা যায় না। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত মেনিনজাইটিস প্রাণঘাতি হতে পারে, সুতরাং মূল কারণ চিহ্নিত করা অপরিহার্য।  
'''মেনিনজাইটিস''' (Meningitis)  হলোমেনিনজেস বা মস্তিষ্কের ঝিল্লীর প্রদাহ। মেনিনজেস হলো তিনটি ঝিল্লি (১. ডুরা ম্যাটার, সবচেয়ে বাইরের স্তর; ২. অ্যারাকনয়েড ম্যাটার, মাঝের স্তর; এবং ৩. পিয়া ম্যাটার, সবচেয়ে ভিতরের স্তর যা মস্তিষ্ক এবং মেরুরজ্জুর সবচেয়ে কাছাকাছি) যা মস্তিষ্ক এবং মেরুরজ্জু বা সুষু¤œাকা-কে আবৃত করে ও স্পাইনাল কর্ডকে সুরক্ষিত রাখে এবং মস্তিষ্ক ও মেনিনজেসের মাঝে সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড নামে একটি প্রতিরক্ষামূলক তরল থাকে, যা সাধারণত স্পাইনাল ফ্লুইড নামে পরিচিত। এই তরল মস্তিষ্ক ও মেরুরজ্জুকে ধাক্কা এবং অন্যান্য ধরণের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং এটি মেরুরজ্জুকে সুস্থ রাখার জন্য পুষ্টির পরিবহন ব্যবস্থা হিসেবেও কাজ করে। সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড সংক্রমিত হলে মেনিনজাইটিস হতে পারে। ভাইরাস দ্বারা সংক্রমণ হলো মেনিনজাইটিসের সবচেয়ে সাধারণ কারণ, তারপরে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ এবং ছত্রাক ও পরজীবী সংক্রমণে মেনিনজাইটিস বেশি দেখা যায় না। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত মেনিনজাইটিস প্রাণঘাতি হতে পারে, সুতরাং মূল কারণ চিহ্নিত করা অপরিহার্য।  


''''ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত মেনিনজাইটিস''''' ব্যাকটেরিয়া রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে মস্তিষ্ক ও মেরুরজ্জুতে গিয়ে তীব্র ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত মেনিনজাইটিস সৃষ্টি করতে পারে। তাছাড়া ব্যাকটেরিয়া সরাসরি মেনিনজেসে আক্রমণ করলেও এটি ঘটতে পারে। কান বা সাইনাস সংক্রমণ, মাথার খুলি ফাটল, বা খুব কম কিছু অস্ত্রোপচারের কারণে ব্যাকটেরিয়া সরাসরি মেনিনজেসে আক্রমণ করতে পারে। ব্যাকটেরিয়ার বেশ কিছু প্রকারভেদ তীব্র ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত মেনিনজাইটিস সৃষ্টি করতে পারে, সাধারণত: স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনিয়া (নিউমোকোকাস) Streptococcus pneumoniae (pneumococcus), নেইসেরিয়া মেনিনজিটিডিস (মেনিনোকোকাস) Neisseria meningitidis (meningococcus), হেমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা (হিমোফিলাস) Haemophilus influenzae (haemophilus), লিস্টেরিয়া মনোসাইটোজেনেস (লিস্টেরিয়া) Listeria monocytogenes (listeria)। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত মেনিনজাইটিসের জন্য অবিলম্বে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন। প্রাথমিক রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা মস্তিষ্কের ক্ষতি এবং মৃত্যু প্রতিরোধ করবে। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত মেনিনজাইটিস ইনজেকশনের মাধ্যমে শিরায় অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। ব্যাকটেরিয়াজনিত মেনিনজাইটিসের জন্য কোন নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিক নেই। এটি রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার উপর নির্ভর করে৷
'''''ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত মেনিনজাইটিস''''' ব্যাকটেরিয়া রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে মস্তিষ্ক ও মেরুরজ্জুতে গিয়ে তীব্র ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত মেনিনজাইটিস সৃষ্টি করতে পারে। তাছাড়া ব্যাকটেরিয়া সরাসরি মেনিনজেসে আক্রমণ করলেও এটি ঘটতে পারে। কান বা সাইনাস সংক্রমণ, মাথার খুলি ফাটল, বা খুব কম কিছু অস্ত্রোপচারের কারণে ব্যাকটেরিয়া সরাসরি মেনিনজেসে আক্রমণ করতে পারে। ব্যাকটেরিয়ার বেশ কিছু প্রকারভেদ তীব্র ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত মেনিনজাইটিস সৃষ্টি করতে পারে, সাধারণত: স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনিয়া (নিউমোকোকাস) Streptococcus pneumoniae (pneumococcus), নেইসেরিয়া মেনিনজিটিডিস (মেনিনোকোকাস) Neisseria meningitidis (meningococcus), হেমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা (হিমোফিলাস) Haemophilus influenzae (haemophilus), লিস্টেরিয়া মনোসাইটোজেনেস (লিস্টেরিয়া) Listeria monocytogenes (listeria)। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত মেনিনজাইটিসের জন্য অবিলম্বে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন। প্রাথমিক রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা মস্তিষ্কের ক্ষতি এবং মৃত্যু প্রতিরোধ করবে। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত মেনিনজাইটিস ইনজেকশনের মাধ্যমে শিরায় অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। ব্যাকটেরিয়াজনিত মেনিনজাইটিসের জন্য কোন নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিক নেই। এটি রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার উপর নির্ভর করে৷


''''ভাইরাস সংক্রমিত মেনিনজাইটিস'''''  ভাইরাল মেনিনজাইটিস খুব একটা মারাত্মক হয় না এবং ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এমনিতেই সেরে যায় এবং বাড়িতে চিকিৎসা করা যেতে পারে৷ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এন্টারোভাইরাস নামে পরিচিত ভাইরাসগুলির কারণে ঘটে। ভাইরাস যেমন হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস, এইচআইভি, মাম্পস ভাইরাস, ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস এবং অন্যান্য ভাইরাসও মেনিনজাইটিস তৈরি করতে পারে।  [মাহমুদ হোসেন]
'''''ভাইরাস সংক্রমিত মেনিনজাইটিস'''''  ভাইরাল মেনিনজাইটিস খুব একটা মারাত্মক হয় না এবং ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এমনিতেই সেরে যায় এবং বাড়িতে চিকিৎসা করা যেতে পারে৷ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এন্টারোভাইরাস নামে পরিচিত ভাইরাসগুলির কারণে ঘটে। ভাইরাস যেমন হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস, এইচআইভি, মাম্পস ভাইরাস, ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস এবং অন্যান্য ভাইরাসও মেনিনজাইটিস তৈরি করতে পারে।  [মাহমুদ হোসেন]


[[en:Meningitis]]
[[en:Meningitis]]

১৬:০৩, ১৪ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

মেনিনজাইটিস (Meningitis) হলোমেনিনজেস বা মস্তিষ্কের ঝিল্লীর প্রদাহ। মেনিনজেস হলো তিনটি ঝিল্লি (১. ডুরা ম্যাটার, সবচেয়ে বাইরের স্তর; ২. অ্যারাকনয়েড ম্যাটার, মাঝের স্তর; এবং ৩. পিয়া ম্যাটার, সবচেয়ে ভিতরের স্তর যা মস্তিষ্ক এবং মেরুরজ্জুর সবচেয়ে কাছাকাছি) যা মস্তিষ্ক এবং মেরুরজ্জু বা সুষু¤œাকা-কে আবৃত করে ও স্পাইনাল কর্ডকে সুরক্ষিত রাখে এবং মস্তিষ্ক ও মেনিনজেসের মাঝে সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড নামে একটি প্রতিরক্ষামূলক তরল থাকে, যা সাধারণত স্পাইনাল ফ্লুইড নামে পরিচিত। এই তরল মস্তিষ্ক ও মেরুরজ্জুকে ধাক্কা এবং অন্যান্য ধরণের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং এটি মেরুরজ্জুকে সুস্থ রাখার জন্য পুষ্টির পরিবহন ব্যবস্থা হিসেবেও কাজ করে। সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড সংক্রমিত হলে মেনিনজাইটিস হতে পারে। ভাইরাস দ্বারা সংক্রমণ হলো মেনিনজাইটিসের সবচেয়ে সাধারণ কারণ, তারপরে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ এবং ছত্রাক ও পরজীবী সংক্রমণে মেনিনজাইটিস বেশি দেখা যায় না। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত মেনিনজাইটিস প্রাণঘাতি হতে পারে, সুতরাং মূল কারণ চিহ্নিত করা অপরিহার্য।

ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত মেনিনজাইটিস ব্যাকটেরিয়া রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে মস্তিষ্ক ও মেরুরজ্জুতে গিয়ে তীব্র ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত মেনিনজাইটিস সৃষ্টি করতে পারে। তাছাড়া ব্যাকটেরিয়া সরাসরি মেনিনজেসে আক্রমণ করলেও এটি ঘটতে পারে। কান বা সাইনাস সংক্রমণ, মাথার খুলি ফাটল, বা খুব কম কিছু অস্ত্রোপচারের কারণে ব্যাকটেরিয়া সরাসরি মেনিনজেসে আক্রমণ করতে পারে। ব্যাকটেরিয়ার বেশ কিছু প্রকারভেদ তীব্র ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত মেনিনজাইটিস সৃষ্টি করতে পারে, সাধারণত: স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনিয়া (নিউমোকোকাস) Streptococcus pneumoniae (pneumococcus), নেইসেরিয়া মেনিনজিটিডিস (মেনিনোকোকাস) Neisseria meningitidis (meningococcus), হেমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা (হিমোফিলাস) Haemophilus influenzae (haemophilus), লিস্টেরিয়া মনোসাইটোজেনেস (লিস্টেরিয়া) Listeria monocytogenes (listeria)। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত মেনিনজাইটিসের জন্য অবিলম্বে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন। প্রাথমিক রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা মস্তিষ্কের ক্ষতি এবং মৃত্যু প্রতিরোধ করবে। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত মেনিনজাইটিস ইনজেকশনের মাধ্যমে শিরায় অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। ব্যাকটেরিয়াজনিত মেনিনজাইটিসের জন্য কোন নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিক নেই। এটি রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার উপর নির্ভর করে৷

ভাইরাস সংক্রমিত মেনিনজাইটিস ভাইরাল মেনিনজাইটিস খুব একটা মারাত্মক হয় না এবং ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এমনিতেই সেরে যায় এবং বাড়িতে চিকিৎসা করা যেতে পারে৷ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এন্টারোভাইরাস নামে পরিচিত ভাইরাসগুলির কারণে ঘটে। ভাইরাস যেমন হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস, এইচআইভি, মাম্পস ভাইরাস, ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস এবং অন্যান্য ভাইরাসও মেনিনজাইটিস তৈরি করতে পারে। [মাহমুদ হোসেন]