হাতীবান্ধা উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''হাতীবান্ধা উপজেলা''' ([[লালমনিরহাট জেলা|লালমনিরহাট জেলা]])  আয়তন: ২৮৮.৪২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°৫৯´ থেকে ২৬°১৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°০১´ থেকে ৮৯°১৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে পাটগ্রাম উপজেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য, দক্ষিণে কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট) উপজেলা, পূর্বে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য, পশ্চিমে ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলা।
'''হাতীবান্ধা উপজেলা''' ([[লালমনিরহাট জেলা|লালমনিরহাট জেলা]])  আয়তন: ২৮৮.৪১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°৫৯´ থেকে ২৬°১৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°০১´ থেকে ৮৯°১৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে পাটগ্রাম উপজেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য, দক্ষিণে কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট) উপজেলা, পূর্বে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য, পশ্চিমে ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ২০৬২৭৬; পুরুষ ১০৪৯৬৪, মহিলা ১০১৩১২। মুসলিম ১৭৮১২৯, হিন্দু ২৭৯৯৯, বৌদ্ধ ৮ এবং অন্যান্য ১৪০। এ উপজেলায় সাঁওতাল, গারো প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
''জনসংখ্যা'' ২৩৩৯২৭; পুরুষ ১১৬৮৫৬, মহিলা ১১৭০৭১। মুসলিম ২০৪২৪৪, হিন্দু ২৯৬১৩, খ্রিস্টান ১৬ এবং অন্যান্য ৫৪।


''জলাশয়'' প্রধান নদী: তিস্তা।
''জলাশয়'' প্রধান নদী: তিস্তা।
১৫ নং লাইন: ১৫ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম  || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম  || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| - || ১০  || ৬৩ || ৬৫ || ২৩৯৭৫  || ১৮২৩০১  || ৭১৫  || ৪৫.৫  || ৩৮.
| - || ১২ || ৬৩ || ৬৫ || ৯৪৭৬ || ২২৪৪৫১ || ৮১১ || ৫১.|| ৪৫.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
২৩ নং লাইন: ২৩ নং লাইন:
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ১৮.২৯ || ৪  || ২৩৯৭৫  || ১৩১১  || ৪৫.
| .২৯ || || ৯৪৭৬ || ১৩০০ || ৫১.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
৩৩ নং লাইন: ৩৩ নং লাইন:
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-
|-
| গোদ্দিমারী ৩৮ || ৫৮০৫ || ৮২০২  || ৮০০৭  || ৩৮.৮৪
| গোদ্দিমারী ৩৮ || ৫৮০৫ || ৮৯৯১ || ৮৯৯২ || ৪২.
|-
|-
| গোতামারী ৪৭ || ৫২৩৪ || ৯৮১৮  || ৯৫৬৬  || ৪২.৮৬
| গোতামারী ৪৭ || ৫২৩৪ || ১০৬৪৮ || ১০৮২৯ || ৪৪.
|-
|-
| টংভাঙ্গা ৯৫ || ৬৫৫৭ || ১৩৭১৯  || ১২৭৯৪  || ৪২.৪০
| টংভাঙ্গা ৯৫ || ৬৫৫৭ || ১৪৮১১ || ১৪৫২২ || ৪৫.
|-
|-
| ডাউয়াবাড়ী ২৮ || ৯৪৭৪ || ৮৯৫৮  || ৮৫১৭  || ৩১.৩৮
| ডাউয়াবাড়ী ২৮ || ৯৪৭৪ || ৮৯৩৩ || ৮৯৪৯ || ৩৫.
|-
|-
| নওদাবাস ৫৭ || ৪৭১৮ || ৮৩৭৫  || ৮২৭৯  || ৩৮.৪৪
| নওদাবাস ৫৭ || ৪৭১৮ || ৯২৪০ || ৯৩০৮ || ৪৫.
|-
|-
| পাটিকাপাড়া ৬৬ || ৫৫৭৫ || ৫২৬৯  || ৫২৬৯  || ৩০.৭৯
| পাটিকাপাড়া ৬৬ || ৫৫৭৫ || ৬১২৫ || ৬০০০ || ৪২.
|-
|-
| বড়খাতা ০৯  || ১৬৫৭৯  || ২৩২৫৪  || ২২৬১৭  || ৪২.০৯
| ফকিরপাড়া ৩১ || ৫৪০৭ || ৮২১০ || ৮৫৪১ || ৪৭.
|-
|-
| ভেলাগুড়ি ১৯  || ৬৬৮৬  || ১০৬৫৯  || ১০২০৫  || ৩৬.৯৯
| বড়খাতা ১৫ || ৫৮৩৪ || ১১৫৩১ || ১১৬১২ || ৫১.
|-
|-
| শিংগীমারী ৭৬  || ৫৫৩৩  || ১০৮৫০  || ১০৪০৮  || ৪১.৮১
| ভেলাগুড়ি ১৯ || ৬৬৮৬ || ১২০৮৮ || ১২৩৩৯ || ৪৯.
|-
|-
| সিন্দুর্ণা ৮৫ || ৫১০৯ || ৫৮৬০  || ৫৬৬০  || ৩৬.৩৭
| শিংগীমারী ৭৬ || ৫৫৩৩ || ১১৬৮০ || ১১৪৬৬ || ৪৯.৫
|-
| সিন্দুর্ণা ৮৫ || ৫১০৯ || ৬৬৪৫ || ৬৫৬০ || ৪৮.২
|-
| সানিয়াজান ৭৪ || ৫৩৩৮ || ৭৯৫৪ || ৭৯৫৩ || ৩৫.
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:HatibandhaUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
[[Image:HatibandhaUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' পাঁচ গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ আদলের একটি বাড়ি (আঠারো শতক)।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' পাঁচ গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ আদলের একটি বাড়ি (আঠারো শতক)।


''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের ৯ মার্চ হাতীবান্ধা ডাকবাংলো মাঠে এক জনসমাবেশে বাংলাদেশের মানচিত্র অঙ্কিত পতাকা উত্তোলন করা হয়। ৮ এপ্রিল পাকবাহিনী হাতীবান্ধায় প্রবেশ করে বেশসংখ্যক নিরীহ লোককে ধরে নিয়ে বড়খাতা বাসস্টান্ডের পাশে নির্মমভাবে হত্যা করে। ১৯ নভেম্বর মুক্তিবাহিনী বড়খাতা আক্রমণ করে এবং ২৮ ও ২৯ নভেম্বর মুক্তিবাহিনীর প্রবল আক্রমণে পাকবাহিনী পরাজিত হয়। ৩০ নভেম্বর এ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালের ৯ মার্চ হাতীবান্ধা ডাকবাংলো মাঠে এক জনসমাবেশে বাংলাদেশের মানচিত্র অঙ্কিত পতাকা উত্তোলন করা হয়। ৮ এপ্রিল পাকবাহিনী হাতীবান্ধায় প্রবেশ করে বেশ সংখ্যক নিরীহ লোককে ধরে নিয়ে বড়খাতা বাসস্টান্ডের পাশে নির্মমভাবে হত্যা করে। ১৯ নভেম্বর মুক্তিবাহিনী বড়খাতা আক্রমণ করে এবং ২৮ ও ২৯ নভেম্বর মুক্তিবাহিনীর প্রবল আক্রমণে পাকবাহিনী পরাজিত হয়। ৩০ নভেম্বর এ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়। উপজেলার ৫টি স্থানে গণকবর রয়েছে এবং ৪টি স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' গণকবর ৫, শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ ৪।
''বিস্তারিত দেখুন'' হাতীবান্ধা উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১০।


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ৩৪৩, মন্দির ৫৭, গির্জা ২, তীর্থস্থান ১, মাযার ২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: গরিবুল্লাহ শাহের মাযার।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৩৪৩, মন্দির ৫৭, গির্জা ২, তীর্থস্থান ১, মাযার ২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: গরিবুল্লাহ শাহের মাযার।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩৯.৩%; পুরুষ ৪৫.%, মহিলা ৩৩.%। কলেজ ৪, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৬, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১০, মাদ্রাসা ৫৬। উলে­খযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: আলিমুদ্দিন ডিগ্রি কলেজ (১৯৭০), হাতীবান্ধা মহিলা কলেজ (১৯৯৫), বড়খাতা মহাবিদ্যালয় (১৯৯৯), হাতীবান্ধা এস এস উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৬), বড়খাতা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫২), গোদ্দিমারী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬১), নওদাবাস কে এম এস সি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭৩), হাতীবান্ধা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৯৪), এক নং প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯১২), ভবনীপুর ছেফাতিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৫৪), হাতীবান্ধা আলিম মাদ্রাসা (১৯৭৯)।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪৫.৩%; পুরুষ ৪৮.%, মহিলা ৪২.%। কলেজ ৪, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৬, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১০, মাদ্রাসা ৫৬। উলে­খযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: আলিমুদ্দিন ডিগ্রি কলেজ (১৯৭০), হাতীবান্ধা মহিলা কলেজ (১৯৯৫), বড়খাতা মহাবিদ্যালয় (১৯৯৯), হাতীবান্ধা এস এস উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৬), বড়খাতা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫২), গোদ্দিমারী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬১), নওদাবাস কে এম এস সি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭৩), হাতীবান্ধা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৯৪), এক নং প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯১২), ভবনীপুর ছেফাতিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৫৪), হাতীবান্ধা আলিম মাদ্রাসা (১৯৭৯)।


''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' লাইব্রেরি ২৪, নাট্যদল ৩, সিনেমা হল ৪, ক্লাব ১৫।
''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' লাইব্রেরি ২৪, নাট্যদল ৩, সিনেমা হল ৪, ক্লাব ১৫।
৭৯ নং লাইন: ৮৩ নং লাইন:


''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ৫১৪, গবাদিপশু ১২, হাঁস-মুরগি ৬০, হ্যাচারি ৮।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ৫১৪, গবাদিপশু ১২, হাঁস-মুরগি ৬০, হ্যাচারি ৮।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব''  পাকারাস্তা ১০২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২ কিমি, কাঁচারাস্তা ৫৭৫ কিমি; রেলপথ ১৮ কিমি; নৌপথ ৫ কিমি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি।
৯০ নং লাইন: ৯৬ নং লাইন:
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  তামাক, তেজপাতা, গোলপাতা, পিঁয়াজ, রসুন, কলা, ময়দা।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  তামাক, তেজপাতা, গোলপাতা, পিঁয়াজ, রসুন, কলা, ময়দা।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে .৬% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১১.৬% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''প্রাকৃতিক সম্পদ''  এ উপজেলায় উন্নতমানের সিলিকেট, ম্যাঙ্গানিজসমৃদ্ধ পাথর ও বালুর সন্ধান পাওয়া গেছে।
''প্রাকৃতিক সম্পদ'' এ উপজেলায় উন্নতমানের সিলিকেট, ম্যাঙ্গানিজসমৃদ্ধ পাথর ও বালুর সন্ধান পাওয়া গেছে।


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৮৯.৭৮%, ট্যাপ ০.৩৫%, পুকুর ০.৩৬ এবং অন্যান্য .%।
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৮.%, ট্যাপ ০.% এবং অন্যান্য .%।  


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ২০.৫১% (গ্রামে ১৭.১% এবং শহরে ৪৭.৩২%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৮.২১% (গ্রামে ৪১.০৩% এবং শহরে ১৬.০৬%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ৪১.২৮% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৫৫.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৮.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে .% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে­ক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ২।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে­ক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ২।
১০২ নং লাইন: ১০৮ নং লাইন:
''এনজিও'' ব্র্যাক, আর.ডি.আর.এস।  [এস.এম আলতাফ হোসাইন]
''এনজিও'' ব্র্যাক, আর.ডি.আর.এস।  [এস.এম আলতাফ হোসাইন]


'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; হাতীবান্ধা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; হাতীবান্ধা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Hatibandha Upazila]]
[[en:Hatibandha Upazila]]

১৯:৫৫, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

হাতীবান্ধা উপজেলা (লালমনিরহাট জেলা)  আয়তন: ২৮৮.৪১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°৫৯´ থেকে ২৬°১৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°০১´ থেকে ৮৯°১৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে পাটগ্রাম উপজেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য, দক্ষিণে কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট) উপজেলা, পূর্বে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য, পশ্চিমে ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলা।

জনসংখ্যা ২৩৩৯২৭; পুরুষ ১১৬৮৫৬, মহিলা ১১৭০৭১। মুসলিম ২০৪২৪৪, হিন্দু ২৯৬১৩, খ্রিস্টান ১৬ এবং অন্যান্য ৫৪।

জলাশয় প্রধান নদী: তিস্তা।

প্রশাসন হাতীবান্ধা থানা গঠিত হয় ১৯১৪ সালে। থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৫ এপ্রিল ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ১২ ৬৩ ৬৫ ৯৪৭৬ ২২৪৪৫১ ৮১১ ৫১.০ ৪৫.৩
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৭.২৯ ৯৪৭৬ ১৩০০ ৫১.০
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
গোদ্দিমারী ৩৮ ৫৮০৫ ৮৯৯১ ৮৯৯২ ৪২.৯
গোতামারী ৪৭ ৫২৩৪ ১০৬৪৮ ১০৮২৯ ৪৪.০
টংভাঙ্গা ৯৫ ৬৫৫৭ ১৪৮১১ ১৪৫২২ ৪৫.৭
ডাউয়াবাড়ী ২৮ ৯৪৭৪ ৮৯৩৩ ৮৯৪৯ ৩৫.৭
নওদাবাস ৫৭ ৪৭১৮ ৯২৪০ ৯৩০৮ ৪৫.৬
পাটিকাপাড়া ৬৬ ৫৫৭৫ ৬১২৫ ৬০০০ ৪২.২
ফকিরপাড়া ৩১ ৫৪০৭ ৮২১০ ৮৫৪১ ৪৭.৭
বড়খাতা ১৫ ৫৮৩৪ ১১৫৩১ ১১৬১২ ৫১.২
ভেলাগুড়ি ১৯ ৬৬৮৬ ১২০৮৮ ১২৩৩৯ ৪৯.৩
শিংগীমারী ৭৬ ৫৫৩৩ ১১৬৮০ ১১৪৬৬ ৪৯.৫
সিন্দুর্ণা ৮৫ ৫১০৯ ৬৬৪৫ ৬৫৬০ ৪৮.২
সানিয়াজান ৭৪ ৫৩৩৮ ৭৯৫৪ ৭৯৫৩ ৩৫.৫

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ পাঁচ গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ আদলের একটি বাড়ি (আঠারো শতক)।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ৯ মার্চ হাতীবান্ধা ডাকবাংলো মাঠে এক জনসমাবেশে বাংলাদেশের মানচিত্র অঙ্কিত পতাকা উত্তোলন করা হয়। ৮ এপ্রিল পাকবাহিনী হাতীবান্ধায় প্রবেশ করে বেশ সংখ্যক নিরীহ লোককে ধরে নিয়ে বড়খাতা বাসস্টান্ডের পাশে নির্মমভাবে হত্যা করে। ১৯ নভেম্বর মুক্তিবাহিনী বড়খাতা আক্রমণ করে এবং ২৮ ও ২৯ নভেম্বর মুক্তিবাহিনীর প্রবল আক্রমণে পাকবাহিনী পরাজিত হয়। ৩০ নভেম্বর এ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়। উপজেলার ৫টি স্থানে গণকবর রয়েছে এবং ৪টি স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন হাতীবান্ধা উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১০।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৪৩, মন্দির ৫৭, গির্জা ২, তীর্থস্থান ১, মাযার ২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: গরিবুল্লাহ শাহের মাযার।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৫.৩%; পুরুষ ৪৮.২%, মহিলা ৪২.৪%। কলেজ ৪, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৬, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১০, মাদ্রাসা ৫৬। উলে­খযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: আলিমুদ্দিন ডিগ্রি কলেজ (১৯৭০), হাতীবান্ধা মহিলা কলেজ (১৯৯৫), বড়খাতা মহাবিদ্যালয় (১৯৯৯), হাতীবান্ধা এস এস উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৬), বড়খাতা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫২), গোদ্দিমারী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬১), নওদাবাস কে এম এস সি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭৩), হাতীবান্ধা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৯৪), এক নং প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯১২), ভবনীপুর ছেফাতিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৫৪), হাতীবান্ধা আলিম মাদ্রাসা (১৯৭৯)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ২৪, নাট্যদল ৩, সিনেমা হল ৪, ক্লাব ১৫।

দর্শনীয় স্থান তিস্তা ব্যারেজ, শালবন।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭৮.০২%, অকৃষি শ্রমিক ২.৭১%, শিল্প ০.২৬%, ব্যবসা ৮.১৪%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৫%, চাকরি ৩.১৬%, নির্মাণ ০.৬২%, ধর্মীয় সেবা ০.১৮%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১% এবং অন্যান্য ৪.৩১%।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, তামাক, আলু, বাদাম, সুপারি, তেজপাতা, গোলপাতা, পিঁয়াজ, রসুন, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  সরিষা, কাউন, তিল, তিসি, আখ, অড়হর, যব, মিষ্টি আলু।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, পেয়ারা, পেঁপে, চালতা, নারিকেল, কুল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৫১৪, গবাদিপশু ১২, হাঁস-মুরগি ৬০, হ্যাচারি ৮।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১০২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২ কিমি, কাঁচারাস্তা ৫৭৫ কিমি; রেলপথ ১৮ কিমি; নৌপথ ৫ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা স’মিল, আইস ফ্যাক্টরি, বিড়ি ফ্যাক্টরি।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প,তাঁতশিল্প, বাঁশের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৩, মেলা ১০। হাতীবান্ধা হাট, বড়খাতা হাট, দই খাওয়া হাট, পারুলিয়া হাট, কেতকীবাড়ি হাট, কাজীর বাজার এবং নওদাবাস বদ্দনাথ মেলা, শিবরাত্রি মেলা, ধওলাই মেলা ও পারুলিয়া ত্রয়োদশী মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য তামাক, তেজপাতা, গোলপাতা, পিঁয়াজ, রসুন, কলা, ময়দা।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১১.৬% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

প্রাকৃতিক সম্পদ এ উপজেলায় উন্নতমানের সিলিকেট, ম্যাঙ্গানিজসমৃদ্ধ পাথর ও বালুর সন্ধান পাওয়া গেছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৮.৫%, ট্যাপ ০.২% এবং অন্যান্য ১.৩%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫৫.৬% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৮.৩% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ৬.১% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে­ক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ২।

এনজিও ব্র্যাক, আর.ডি.আর.এস।  [এস.এম আলতাফ হোসাইন]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; হাতীবান্ধা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।