নবাবগঞ্জ উপজেলা (দিনাজপুর): সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''নবাবগঞ্জ উপজেলা''' ([[দিনাজপুর জেলা|দিনাজপুর জেলা)]]  আয়তন: ৩১৪.৬৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°১৪´ থেকে ২৫°৩৪´ এবং উত্তর অক্ষাংশ ৮৮°৫৮´ থেকে ৮৯°১৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে পার্বতীপুর উপজেলা, দক্ষিণে ঘোড়াঘাট এবং হাকিমপুর উপজেলা, পূর্বে পীরগঞ্জ (রংপুর), মিঠাপুকুর ও বদরগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে বিরামপুর ও ফুলবাড়ী উপজেলা।
'''নবাবগঞ্জ উপজেলা''' ([[দিনাজপুর জেলা|দিনাজপুর জেলা)]]  আয়তন: ৩১৪.৬৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°১৪´ থেকে ২৫°৩৪´ এবং উত্তর অক্ষাংশ ৮৮°৫৮´ থেকে ৮৯°১৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে পার্বতীপুর উপজেলা, দক্ষিণে ঘোড়াঘাট এবং হাকিমপুর উপজেলা, পূর্বে পীরগঞ্জ (রংপুর), মিঠাপুকুর ও বদরগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে বিরামপুর ও ফুলবাড়ী উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ২০৪৩৫১; পুরুষ ১০৫২৫৯, মহিলা ৯৯০৯২। মুসলিম ১৭৯৯৭৩, হিন্দু ১৪৩৯৯, বৌদ্ধ ৩২০৮, খ্রিস্টান ৩১৫ এবং অন্যান্য ৬৪৫৬। এ উপজেলায় সাঁওতাল, ওরাওঁ, মুন্ডা প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
''জনসংখ্যা'' ২২৯৩৩৭; পুরুষ ১১৪৭৬৩, মহিলা ১১৪৫৭৪। মুসলিম ২০১৩৮৩, হিন্দু ১৬৫৪৬, বৌদ্ধ ৪২, খ্রিস্টান ৪৭২৯ এবং অন্যান্য ৬৬৩৭। এ উপজেলায় সাঁওতাল, ওরাওঁ, মুন্ডা প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।


''জলাশয়'' করতোয়া ও যমুনেশ্বরী নদী উল্লেখযোগ্য।  
''জলাশয়'' করতোয়া ও যমুনেশ্বরী নদী উল্লেখযোগ্য।  
১৫ নং লাইন: ১৫ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| - || ৯ || ২১২  || ২৮২  || ৫৮২৭  || ১৯৮৫২৪  || ৬৪৯  || ৫৮.১  || ৩৭.
| - || ৯ || ২০৪ || ২৭২ || ৭২২৫ || ২২২১১২ || ৭২৯ || ৬১.|| ৪২.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
২৩ নং লাইন: ২৩ নং লাইন:
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ৩.৪৮ || ৪ || ৫৮২৭  || ১৬৭৪  || ৫৮.
| ৩.৪৮ || ৪ || ৭২২৫ || ২০৭৬ || ৬১.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
৩০ নং লাইন: ৩০ নং লাইন:
|-
|-
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)  
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)  
|-
|-
| পুরুষ  || মহিলা  
| পুরুষ  || মহিলা  
|-
|-
| কুশদহ ৬৯ || ১১০০৮ || ১৩২০৮ || ১২১৫৫  || ৩৬.২২
| কুশদহ ৬৯ || ১১০০৮ || ১৪৯৬৬ || ১৪৮৫৯ || ৪২.
 
|-
|-
| গোলাপগঞ্জ ৪৩ || ১০৭৫২ || ১৩৫৪৫ || ১৩০৭৩  || ৩৩.৪৫
| গোলাপগঞ্জ ৪৩ || ১০৭৫২ || ১৫২০৪ || ১৫২০৪ || ৪৩.
 
|-
|-
| জয়পুর ৫১ || ৮৮৯৫ || ১০২১০ || ৯৫৩৫  || ৩৫.১১
| জয়পুর ৫১ || ৮৮৯৫ || ১১৪৩৩ || ১১৪৩১ || ৪৪.
 
|-
|-
| দাউদপুর ২৫ || ৮৮৪২ || ১৩৪৮৩ || ১২৭৯৮  || ৪২.৮৭
| দাউদপুর ২৫ || ৮৮৪২ || ১৪৯১৯ || ১৪৮৭৫ || ৪৩.
 
|-
|-
| পুঁটিমারা ৮৬ || ৫৫৫৬ || ৮৫৮৪ || ৭৮৮৬  || ৩৬.৫৭
| পুঁটিমারা ৮৬ || ৫৫৫৬ || ৮৭২৭ || ৮৭১৮ || ৪১.
 
|-
|-
| বিনোদনগর ১৭ || ১০০৩৪ || ১৬২৬০ || ১৪৮৯৮  || ৪০.৯২
| বিনোদনগর ১৭ || ১০০৩৪ || ১৭০৮৪ || ১৬৭০৭ || ৪৬.
 
|-
|-
| ভাদুরিয়া || ৯৪১৮ || ১১৮৭৮ || ১১২৭৫  || ৪১.৮২
| ভাদুরিয়া ১৩ || ৯৪১৮ || ১২৮১৭ || ১২৯৫৯ || ৪০.
 
|-
|-
| মাহমুদপুর ৭৭ || ৯৩৩০ || ১২৭৩৯ || ১১৯৫৮  || ৩৬.৫৯
| মাহমুদপুর ৭৭ || ৯৩৩০ || ১৩৮০৬ || ১৩৯১৩ || ৩৭.
 
|-
|-
| শালখুরিয়া ৯৪ || ৩৯২৪ || ৫৬৫২ || ৫৫১৪  || ৪৩.৩৯
| শালখুরিয়া ৯৪ || ৩৯২৪ || ৫৮০৭ || ৫৯০৮ || ৪৬.
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:NawabganjUpazilaDinajpur.jpg|thumb|400px|right]]
[[Image:NawabganjUpazilaDinajpur.jpg|thumb|400px|right]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' সীতাকোট বিহার, কানজির হাড়ি ও অরুণাধাপ, জিগাগড় ও হরিনাথপুর দুর্গ, হলাইজানা প্রাচীন মসজিদ।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' সীতাকোট বিহার, কানজির হাড়ি ও অরুণাধাপ, জিগাগড় ও হরিনাথপুর দুর্গ, হলাইজানা প্রাচীন মসজিদ।


''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের ২০ জুলাই পাকবাহিনী খয়েরগনি গ্রামের ২১ জন নিরীহ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে। এছাড়াও ১০ অক্টোবর পাকবাহিনী উপজেলার চড়ারহাটে ১৫৭ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে।
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালের ২০ জুলাই পাকবাহিনী খয়েরগনি গ্রামের ২১ জন নিরীহ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে। এছাড়াও ১০ অক্টোবর পাকবাহিনী উপজেলার চড়ারহাটে ১৫৭ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে। উপজেলার ভাদুরিয়া, বিজুলবাজার, গরিবপাড়া, কলাবাড়ি প্রভৃতি স্থানে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়। উপজেলার চড়াহাটে ১টি গণকবর রয়েছে।


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' গণকবর ১ (চড়াহাট)।
''বিস্তারিত দেখুন'' নবাবগঞ্জ উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৫।


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৩৫, মন্দির ১৭, গির্জা ৮, মঠ ৩। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: হলাইজানা প্রাচীন মসজিদ, তর্পনঘাট মন্দির, কালী মন্দির উল্লেখযোগ্য।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৩৫, মন্দির ১৭, গির্জা ৮, মঠ ৩। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: হলাইজানা প্রাচীন মসজিদ, তর্পনঘাট মন্দির, কালী মন্দির উল্লেখযোগ্য।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান''  গড় হার ৩৮.%; পুরুষ ৪৩.%, মহিলা ৩৩.%। কলেজ ১১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩৪, মাদ্রাসা ৩৯। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: দাউদপুর ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২), নবাবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৭), আফতাবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৪), পলাশবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১), দাউদপুর দ্বিমুখি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৯), বিনোদনগর হাইস্কুল (১৯৬০), আফতাবগঞ্জ হাইস্কুল (১৯৬৪), হাতিশাল দিশবন্দী ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৫৪), কাঁচদহ সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৫৬), দেওগাঁ সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৫৯)।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান''  গড় হার ৪২.%; পুরুষ ৪৪.%, মহিলা ৪০.%। কলেজ ১১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩৪, মাদ্রাসা ৩৯। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: দাউদপুর ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২), নবাবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৭), আফতাবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৪), পলাশবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১), দাউদপুর দ্বিমুখি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৯), বিনোদনগর হাইস্কুল (১৯৬০), আফতাবগঞ্জ হাইস্কুল (১৯৬৪), হাতিশাল দিশবন্দী ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৫৪), কাঁচদহ সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৫৬), দেওগাঁ সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৫৯)।


''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী''   অবলুপ্ত: দর্পণ, আয়না, তারুণ্য, স্বপ্নপুরী, নবচেতনা।  
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী''   অবলুপ্ত: দর্পণ, আয়না, তারুণ্য, স্বপ্নপুরী, নবচেতনা।  
৯২ নং লাইন: ৮২ নং লাইন:
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' হাঁস-মুরগি ৪।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' হাঁস-মুরগি ৪।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ১৪৯ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২০ কিমি, কাঁচারাস্তা ৫৩৫ কিমি।  
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকা রাস্তা ৮৬.২৪ কিমি, আধাপাকা রাস্তা ১৯.৮৪ কিমি, কাঁচা রাস্তা ৫৭৪.৯৮ কিমি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।
১০৪ নং লাইন: ৯৪ নং লাইন:
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  ধান, পাট, গুড়।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  ধান, পাট, গুড়।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৭.৫৩% পরিবারের  বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।  
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩১.% পরিবারের  বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।  


''প্রাকৃতিক সম্পদ''  এ উপজেলার দীঘিপাড়ায় উন্নতমানের কয়লা ও সোনার আকরিকের সন্ধান পাওয়া গেছে।  
''প্রাকৃতিক সম্পদ'' উপজেলার দীঘিপাড়ায় উন্নতমানের কয়লা ও সোনার আকরিকের সন্ধান পাওয়া গেছে।


''পানীয়জলের উৎস''  নলকূপ ৮৯.৯৫%,'' ''পুকুর ০.৬০%, ট্যাপ ০.৩৬% এবং অন্যান্য .০৯%।
''পানীয়জলের উৎস''  নলকূপ ৯৭.%, ট্যাপ ০.% এবং অন্যান্য .%।  


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা''  এ উপজেলার ১১.১০% (গ্রামে ১০.৬০% এবং শহরে ২৮.২১%) পরিবার স্বাস্থ্যকর  এবং ২৭.৩৩% (গ্রামে ২৬.৮৩% এবং শহরে ৪৪.৪২%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন  ব্যবহার করে। ৬১.৫৭% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নাই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা''  এ উপজেলার ৫২.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৭.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন  ব্যবহার করে। ২০.% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নাই।


''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষে খাদা্যভাবে এ উপজেলার অনেক লোক মারা যায়। ১৯৮৭ ও ১৯৯১ সালের বন্যায় উপজেলার করতোয়া নদীর তীরবর্তী ঘরবাড়ি ধ্বংসসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।  
''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষে খাদা্যভাবে এ উপজেলার অনেক লোক মারা যায়। ১৯৮৭ ও ১৯৯১ সালের বন্যায় উপজেলার করতোয়া নদীর তীরবর্তী ঘরবাড়ি ধ্বংসসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।  
১১৮ নং লাইন: ১০৮ নং লাইন:
''এনজিও'' ব্র্যাক, আশা, কারিতাস, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ।  [এস.এম মাহফুজুর রহমান]  
''এনজিও'' ব্র্যাক, আশা, কারিতাস, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ।  [এস.এম মাহফুজুর রহমান]  


'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নবাবগঞ্জ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নবাবগঞ্জ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Nawabganj Upazila (Dinajpur District)]]
[[en:Nawabganj Upazila (Dinajpur District)]]

১৭:০১, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

নবাবগঞ্জ উপজেলা (দিনাজপুর জেলা) আয়তন: ৩১৪.৬৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°১৪´ থেকে ২৫°৩৪´ এবং উত্তর অক্ষাংশ ৮৮°৫৮´ থেকে ৮৯°১৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে পার্বতীপুর উপজেলা, দক্ষিণে ঘোড়াঘাট এবং হাকিমপুর উপজেলা, পূর্বে পীরগঞ্জ (রংপুর), মিঠাপুকুর ও বদরগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে বিরামপুর ও ফুলবাড়ী উপজেলা।

জনসংখ্যা ২২৯৩৩৭; পুরুষ ১১৪৭৬৩, মহিলা ১১৪৫৭৪। মুসলিম ২০১৩৮৩, হিন্দু ১৬৫৪৬, বৌদ্ধ ৪২, খ্রিস্টান ৪৭২৯ এবং অন্যান্য ৬৬৩৭। এ উপজেলায় সাঁওতাল, ওরাওঁ, মুন্ডা প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

জলাশয় করতোয়া ও যমুনেশ্বরী নদী উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন নবাবগঞ্জ থানা গঠিত হয় ১৮৯৯ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ২০৪ ২৭২ ৭২২৫ ২২২১১২ ৭২৯ ৬১.৯ ৪২.২
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৩.৪৮ ৭২২৫ ২০৭৬ ৬১.৯
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কুশদহ ৬৯ ১১০০৮ ১৪৯৬৬ ১৪৮৫৯ ৪২.১
গোলাপগঞ্জ ৪৩ ১০৭৫২ ১৫২০৪ ১৫২০৪ ৪৩.৮
জয়পুর ৫১ ৮৮৯৫ ১১৪৩৩ ১১৪৩১ ৪৪.৩
দাউদপুর ২৫ ৮৮৪২ ১৪৯১৯ ১৪৮৭৫ ৪৩.২
পুঁটিমারা ৮৬ ৫৫৫৬ ৮৭২৭ ৮৭১৮ ৪১.৭
বিনোদনগর ১৭ ১০০৩৪ ১৭০৮৪ ১৬৭০৭ ৪৬.৫
ভাদুরিয়া ১৩ ৯৪১৮ ১২৮১৭ ১২৯৫৯ ৪০.৫
মাহমুদপুর ৭৭ ৯৩৩০ ১৩৮০৬ ১৩৯১৩ ৩৭.৭
শালখুরিয়া ৯৪ ৩৯২৪ ৫৮০৭ ৫৯০৮ ৪৬.৭

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ সীতাকোট বিহার, কানজির হাড়ি ও অরুণাধাপ, জিগাগড় ও হরিনাথপুর দুর্গ, হলাইজানা প্রাচীন মসজিদ।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ২০ জুলাই পাকবাহিনী খয়েরগনি গ্রামের ২১ জন নিরীহ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে। এছাড়াও ১০ অক্টোবর পাকবাহিনী উপজেলার চড়ারহাটে ১৫৭ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে। উপজেলার ভাদুরিয়া, বিজুলবাজার, গরিবপাড়া, কলাবাড়ি প্রভৃতি স্থানে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়। উপজেলার চড়াহাটে ১টি গণকবর রয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন নবাবগঞ্জ উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৫।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৫, মন্দির ১৭, গির্জা ৮, মঠ ৩। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: হলাইজানা প্রাচীন মসজিদ, তর্পনঘাট মন্দির, কালী মন্দির উল্লেখযোগ্য।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান  গড় হার ৪২.৮%; পুরুষ ৪৪.৯%, মহিলা ৪০.৭%। কলেজ ১১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩৪, মাদ্রাসা ৩৯। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: দাউদপুর ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২), নবাবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৭), আফতাবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৪), পলাশবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১), দাউদপুর দ্বিমুখি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৯), বিনোদনগর হাইস্কুল (১৯৬০), আফতাবগঞ্জ হাইস্কুল (১৯৬৪), হাতিশাল দিশবন্দী ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৫৪), কাঁচদহ সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৫৬), দেওগাঁ সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৫৯)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী   অবলুপ্ত: দর্পণ, আয়না, তারুণ্য, স্বপ্নপুরী, নবচেতনা।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ৪৬, সিনেমা হল ৩।

বিনোদন কেন্দ্র স্বপ্নপুরী।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭৫.২৮%, অকৃষি শ্রমিক ২.৯২%, শিল্প ০.৪৪%, ব্যবসা ৯.৫১%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.১৫%, চাকরি ৪.০৩%, নির্মাণ ০.৫৩%, ধর্মীয় সেবা ০.১৫%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.০৭% এবং অন্যান্য ৪.৯২%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৯.৭৩%, ভূমিহীন ৪০.২৭%। শহরে ৪৯.০১% এবং গ্রামে ৬০.০৪% পরিবারের  কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসলাদি  ধান, গম, পাট, ভূট্টা, ডাল, তৈলবীজ, আখ, আলু, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসল  তিল, তিসি, কাউন।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, কলা, কাঁঠাল, লিচু।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার হাঁস-মুরগি ৪।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকা রাস্তা ৮৬.২৪ কিমি, আধাপাকা রাস্তা ১৯.৮৪ কিমি, কাঁচা রাস্তা ৫৭৪.৯৮ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা রাইস মিল, অটোরাইস মিল, স‘মিল, লেদমেশিন, আইস ফ্যাক্টরি, বিস্কুট ফ্যাক্টরি।

কুটিরশিল্প মৃৎশিল্প, লৌহশিল্প, স্বর্ণশিল্প।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৬, মেলা ৫। দাউদপুর হাট, নবাবগঞ্জ হাট, ভাদুরিয়া হাট, বিনোদনগর হাট, দারিয়া হাট, আফতাবগঞ্জের হাট এবং তর্পণঘাট মেলা, বুড়া শিবের মেলা ও কালীর মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  ধান, পাট, গুড়।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩১.৪% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

প্রাকৃতিক সম্পদ উপজেলার দীঘিপাড়ায় উন্নতমানের কয়লা ও সোনার আকরিকের সন্ধান পাওয়া গেছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৭.১%, ট্যাপ ০.৫% এবং অন্যান্য ২.৪%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫২.৪% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৭.২% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২০.৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নাই।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষে খাদা্যভাবে এ উপজেলার অনেক লোক মারা যায়। ১৯৮৭ ও ১৯৯১ সালের বন্যায় উপজেলার করতোয়া নদীর তীরবর্তী ঘরবাড়ি ধ্বংসসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৯।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, কারিতাস, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ।  [এস.এম মাহফুজুর রহমান]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নবাবগঞ্জ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।