সাতক্ষীরা সদর উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''সাতক্ষীরা সদর উপজেলা''' ([[সাতক্ষীরা জেলা|সাতক্ষীরা জেলা]]) আয়তন: | '''সাতক্ষীরা সদর উপজেলা''' ([[সাতক্ষীরা জেলা|সাতক্ষীরা জেলা]]) আয়তন: ৩৯৮.৫৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৩৭´ থেকে ২২°৫০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫৫´ থেকে ৮৯°১০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কলারোয়া উপজেলা, দক্ষিণে দেবহাটা ও আশাশুনি উপজেলা, পূর্বে তালা উপজেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য। | ||
''জনসংখ্যা'' | ''জনসংখ্যা'' ৪৬০৮৯২; পুরুষ ২৩০৬২৮, মহিলা ২৩০২৬৪। মুসলিম ৪০০১২৬, হিন্দু ৫৯৪১৯, বৌদ্ধ ১০, খ্রিস্টান ৮৮৫ এবং অন্যান্য ৪৫২। | ||
''জলাশয়'' প্রধান নদী: বেতনা, ইছামতি, খোলপেটুয়া। নাওখালী খাল ও লাবণ্যবতী খাল উল্লেখযোগ্য। | ''জলাশয়'' প্রধান নদী: বেতনা, ইছামতি, খোলপেটুয়া। নাওখালী খাল ও লাবণ্যবতী খাল উল্লেখযোগ্য। | ||
১৬ নং লাইন: | ১৬ নং লাইন: | ||
| শহর || গ্রাম || শহর || গ্রাম | | শহর || গ্রাম || শহর || গ্রাম | ||
|- | |- | ||
| ১ | | ১ || ১৪ || ১১৯ || ২৩৮ || ১১৩৩২২ || ৩৪৭৫৭০ || ১১৫৬ || ৬৬.৩৯ || ৫০.৪৮ | ||
|} | |} | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
২৪ নং লাইন: | ২৪ নং লাইন: | ||
| আয়তন (বর্গ কিমি) || ওয়ার্ড || মহল্লা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | | আয়তন (বর্গ কিমি) || ওয়ার্ড || মহল্লা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | ||
|- | |- | ||
| | | ৩২.৩৯ || ৯ || ৩৩ || ১১৩৩২২ || ৩৪৯৯ || ৬৬.৩৯ | ||
|} | |} | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
৩৪ নং লাইন: | ৩৪ নং লাইন: | ||
| পুরুষ || মহিলা | | পুরুষ || মহিলা | ||
|- | |- | ||
| আগরদাঁড়ী ১৩ | | আগরদাঁড়ী ১৩ || ৭৯৮৯ || ১৮৮০৪ || ১৮৮৫০ || ৪৮.৯ | ||
|- | |- | ||
| আলীপুর ১৬ | | আলীপুর ১৬ || ৭৭৫৫ || ১৪৪৪৩ || ১৪৫০৩ || ৫১.৩ | ||
|- | |- | ||
| কুশখালী ৭৪ | | কুশখালী ৭৪ || ৬১৪৫ || ১০৫৫০ || ১১৫১১ || ৪৬.৭ | ||
|- | |- | ||
| ঘোনা ৬১ | | ঘোনা ৬১ || ৪২৬৪ || ৭৭৬৬ || ৭৯৩৫ || ৫০.০ | ||
|- | |- | ||
| ঝাউডাঙ্গা ৬৭ | | ঝাউডাঙ্গা ৬৭ || ৬৬২০ || ১৬৬১৫ || ১৬৮৫৬ || ৫৮.০ | ||
|- | |- | ||
| ধুলিহর ৫৪ | | ধুলিহর ৫৪ || ৯৩৪৭ || ১২৪২৭ || ১২২১৭ || ৪৭.৯ | ||
|- | |- | ||
| ফিংড়ী ৫১ | | ফিংড়ী ৫১ || ৮৯৭৭ || ১৫৭৬৭ || ১৫৬৫১ || ৫০.৩ | ||
|- | |- | ||
| বল্লী ২৭ | | বল্লী ২৭ || ৪১৬৫ || ৭৯০৬ || ৭৯৫৩ || ৪৫.৩ | ||
|- | |- | ||
| বাঁশদহা ৩৩ | | বাঁশদহা ৩৩ || ৫৪২৪ || ৯৯৬৪ || ১০৪৭১ || ৫৫.৮ | ||
|- | |- | ||
| বৈকারী ২০ | | বৈকারী ২০ || ৬২৫৪ || ৯০৮৮ || ৯৩৯৯ || ৪৬.৩ | ||
|- | |- | ||
| ব্রহ্ম রাজপুর ৪৭ | | ব্রহ্ম রাজপুর ৪৭ || ৫৭১২ || ১০৯৪৫ || ১০৯৯১ || ৫১.১ | ||
|- | |- | ||
| ভোমরা ৪০ | | ভোমরা ৪০ || ৭২৪৮ || ১৩১০৫ || ১২৯১৫ || ৫১.৪ | ||
|- | |- | ||
| লাবসা ৮১ | | লাবসা ৮১ || ৫৫৬৩ || ১৬১৮৯ || ১৬০৫৪ || ৬৬.৩ | ||
|- | |- | ||
| শিবপুর ৯৪ | | শিবপুর ৯৪ || ৬১১৪ || ৯৪৫৩ || ৯২৫২ || ৫৪.১ | ||
|} | |} | ||
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট | ''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। | ||
[[Image:SatkhiraSadarUpazila.jpg|thumb|right|400px]] | [[Image:SatkhiraSadarUpazila.jpg|thumb|right|400px]] | ||
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' সুলতানপুর শাহী মসজিদ, জমিদার বাড়ি জামে মসজিদ (লাবসা) ও চম্পা মায়ের মাযার, বৈকারী শাহী মসজিদ ও হোজরাখানা (১৫৯৪ খ্রি.), ঝাউডাঙ্গা তহসীল অফিস ও শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের মন্দির, ছয়ঘরিয়া জোড়া শিব মন্দির, সাতক্ষীরা পঞ্চমন্দির (অন্নণপূর্ণা মন্দির, কালীমন্দির, শিবমন্দির, কালভৈরব মন্দির ও রাধা-গোবিন্দ মন্দির)। | ''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' সুলতানপুর শাহী মসজিদ, জমিদার বাড়ি জামে মসজিদ (লাবসা) ও চম্পা মায়ের মাযার, বৈকারী শাহী মসজিদ ও হোজরাখানা (১৫৯৪ খ্রি.), ঝাউডাঙ্গা তহসীল অফিস ও শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের মন্দির, ছয়ঘরিয়া জোড়া শিব মন্দির, সাতক্ষীরা পঞ্চমন্দির (অন্নণপূর্ণা মন্দির, কালীমন্দির, শিবমন্দির, কালভৈরব মন্দির ও রাধা-গোবিন্দ মন্দির)। | ||
'' | ''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ পাকসেনাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ১৮ এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধারা ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান থেকে অর্থ লুট করে বাংলাদেশ সরকারের নামে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকে জমা রাখে। ২০ এপ্রিল পাকবাহিনী সাতক্ষীরায় প্রবেশ করার সময় ঝাউডাঙ্গাতে গণহত্যা চালায়। ২১ এপ্রিল পাকবাহিনী সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শরণার্থী শিবিরে ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় গণহত্যা চালালে প্রায় দুই শতাধিক লোক নিহত হয়। ২৯ এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধা ও পাকসেনাদের মধ্যে উপজেলার ভোমরায় সংগঠিত এক লড়াইয়ে চারজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং বহু সংখ্যক পাকসেনা নিহত হয়। ১৭ জুলাই মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলার বৈকারী ক্যাম্পে আক্রমণ চালিয়ে সাতজন পাকসেনাকে হত্যা করে। উপজেলায় সাতক্ষীরা সরকারি স্কুলের পেছনে দীনেশ কর্মকারের বাড়ি ও সংলগ্ন পুকুর, বাঁকাল এবং গাঙ্গনী ব্রিজ এলাকায় ৩টি বধ্যভূমি রয়েছে; সাতক্ষীরা সদরে ১টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে। | ||
'' | ''বিস্তারিত দেখুন'' সাতক্ষীরা সদর উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১০। | ||
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৩৯৬, মন্দির ১৭, গির্জা ২, মাযার ৩। উলেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: সুলতানপুর শাহী মসজিদ, চম্পা মায়ের মাযার, পুরাতন সাতক্ষীরা কালীমন্দির, ব্রহ্মরাজপুর কাল ভৈরব মন্দির। | ''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৩৯৬, মন্দির ১৭, গির্জা ২, মাযার ৩। উলেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: সুলতানপুর শাহী মসজিদ, চম্পা মায়ের মাযার, পুরাতন সাতক্ষীরা কালীমন্দির, ব্রহ্মরাজপুর কাল ভৈরব মন্দির। | ||
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার | ''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৫৬.৫%; পুরুষ ৫৯.৮%, মহিলা ৫৩.২%। হোমিওপ্যাথিক কলেজ ১, ল’কলেজ ১, কলেজ ১১, পিটিআই ১, ভোকেশনাল ট্রে্নিং ইনস্টিটিউট ১, বেসরকারি কারিগরি বিদ্যালয় ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৭২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ২৮৮, কিন্ডার গার্টেন ১১, মাদ্রা্সা ৪৮। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ, সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজ, সাতক্ষীরা ডে-নাইট কলেজ, সাতক্ষীরা সিটি কলেজ, পল্লীমঙ্গল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সাতক্ষীরা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, সাতক্ষীরা প্রাণনাথ মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৮৪৬), সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়, সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নাবরুণ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৯), পলাশপোল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, পিএনপি কলেজিয়েট স্কুল (১৮৪৬), জিএন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮১৮), সাতক্ষীরা আলিয়া কামিল মাদ্রাসা (১৯২৮), আহছানিয়া আলিম মাদ্রাসা, ঝাউডাঙ্গা ফাজিল মাদ্রাসা। | ||
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' দৈনিক: কাফেলা, পত্রদূত, সাতক্ষীরা চিত্র; সাপ্তাহিক: দখিনায়ন, সাতক্ষীরা ডাইজেষ্ট, সহযাত্রী, আজকের সাতক্ষীরা; পাক্ষিক: অন্বেষণ (অবলুপ্ত); মাসিক: ছড়ার ডাক; ত্রৈমাসিক: ঈক্ষণ, দখিনের জানালা, সৌম্য; অবলুপ্ত সাময়িকী: মসজিদ (১৯১৭), আনন্দময়ী (১৯২৬), কোরক (১৯৬২)। এ ছাড়া ১৯৬৫ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত সময়কালে প্রায় তিন শতাধিক সাহিত্য সংকলন (লিটল ম্যাগ) প্রকাশিত হয়েছে। | ''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' দৈনিক: কাফেলা, পত্রদূত, সাতক্ষীরা চিত্র; সাপ্তাহিক: দখিনায়ন, সাতক্ষীরা ডাইজেষ্ট, সহযাত্রী, আজকের সাতক্ষীরা; পাক্ষিক: অন্বেষণ (অবলুপ্ত); মাসিক: ছড়ার ডাক; ত্রৈমাসিক: ঈক্ষণ, দখিনের জানালা, সৌম্য; অবলুপ্ত সাময়িকী: মসজিদ (১৯১৭), আনন্দময়ী (১৯২৬), কোরক (১৯৬২)। এ ছাড়া ১৯৬৫ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত সময়কালে প্রায় তিন শতাধিক সাহিত্য সংকলন (লিটল ম্যাগ) প্রকাশিত হয়েছে। | ||
৯১ নং লাইন: | ৯১ নং লাইন: | ||
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ১০৬৮, গবাদিপশু ২০, হাঁস-মুরগি ১৫০। | ''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ১০৬৮, গবাদিপশু ২০, হাঁস-মুরগি ১৫০। | ||
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা | ''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৩৭২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৬২, কাঁচারাস্তা ৪২০ কিমি। | ||
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, মহিষ ও গরুর গাড়ি। | ''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, মহিষ ও গরুর গাড়ি। | ||
১০৩ নং লাইন: | ১০৩ নং লাইন: | ||
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য'' চিংড়ি, সুতা, হস্তশিল্পজাত দ্রব্যসামগ্রী, কুল, ধান, চাল। | ''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য'' চিংড়ি, সুতা, হস্তশিল্পজাত দ্রব্যসামগ্রী, কুল, ধান, চাল। | ||
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে | ''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫৮.৩% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। | ||
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ | ''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৮৩.১%, ট্যাপ ১৪.৩% এবং অন্যান্য ২.৬%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে। | ||
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার | ''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৫৪.৫% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪১.৮% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে । ৩.৭% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই। | ||
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' জেলা সদর হাসপাতাল ১, শিশু হাসপাতাল ১, ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতাল ১, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১৪, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ১, ক্লিনিক ২৫। | ''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' জেলা সদর হাসপাতাল ১, শিশু হাসপাতাল ১, ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতাল ১, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১৪, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ১, ক্লিনিক ২৫। | ||
১১৩ নং লাইন: | ১১৩ নং লাইন: | ||
''এনজিও'' ব্র্যাক, কেয়ার, বাংলাদেশ ভিশন, কারিতাস, আশা, ওয়ার্ল্ড ভিশন। [তৃপ্তি মোহন মল্লিক] | ''এনজিও'' ব্র্যাক, কেয়ার, বাংলাদেশ ভিশন, কারিতাস, আশা, ওয়ার্ল্ড ভিশন। [তৃপ্তি মোহন মল্লিক] | ||
'''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; সাতক্ষীরা সদর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | '''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; সাতক্ষীরা সদর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | ||
[[en:Satkhira Sadar Upazila]] | [[en:Satkhira Sadar Upazila]] |
১৪:২৪, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা (সাতক্ষীরা জেলা) আয়তন: ৩৯৮.৫৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৩৭´ থেকে ২২°৫০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫৫´ থেকে ৮৯°১০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কলারোয়া উপজেলা, দক্ষিণে দেবহাটা ও আশাশুনি উপজেলা, পূর্বে তালা উপজেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য।
জনসংখ্যা ৪৬০৮৯২; পুরুষ ২৩০৬২৮, মহিলা ২৩০২৬৪। মুসলিম ৪০০১২৬, হিন্দু ৫৯৪১৯, বৌদ্ধ ১০, খ্রিস্টান ৮৮৫ এবং অন্যান্য ৪৫২।
জলাশয় প্রধান নদী: বেতনা, ইছামতি, খোলপেটুয়া। নাওখালী খাল ও লাবণ্যবতী খাল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন সাতক্ষীরা সদর থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে। পৌরসভা গঠন করা হয় ১৮৬৯ সালে। উপজেলা শহরের প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র সুলতানপুর বাজার (প্রাচীন নাম প্রাণসায়র বাজার)।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ১৪ | ১১৯ | ২৩৮ | ১১৩৩২২ | ৩৪৭৫৭০ | ১১৫৬ | ৬৬.৩৯ | ৫০.৪৮ |
পৌরসভা | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |||
৩২.৩৯ | ৯ | ৩৩ | ১১৩৩২২ | ৩৪৯৯ | ৬৬.৩৯ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
আগরদাঁড়ী ১৩ | ৭৯৮৯ | ১৮৮০৪ | ১৮৮৫০ | ৪৮.৯ | ||||
আলীপুর ১৬ | ৭৭৫৫ | ১৪৪৪৩ | ১৪৫০৩ | ৫১.৩ | ||||
কুশখালী ৭৪ | ৬১৪৫ | ১০৫৫০ | ১১৫১১ | ৪৬.৭ | ||||
ঘোনা ৬১ | ৪২৬৪ | ৭৭৬৬ | ৭৯৩৫ | ৫০.০ | ||||
ঝাউডাঙ্গা ৬৭ | ৬৬২০ | ১৬৬১৫ | ১৬৮৫৬ | ৫৮.০ | ||||
ধুলিহর ৫৪ | ৯৩৪৭ | ১২৪২৭ | ১২২১৭ | ৪৭.৯ | ||||
ফিংড়ী ৫১ | ৮৯৭৭ | ১৫৭৬৭ | ১৫৬৫১ | ৫০.৩ | ||||
বল্লী ২৭ | ৪১৬৫ | ৭৯০৬ | ৭৯৫৩ | ৪৫.৩ | ||||
বাঁশদহা ৩৩ | ৫৪২৪ | ৯৯৬৪ | ১০৪৭১ | ৫৫.৮ | ||||
বৈকারী ২০ | ৬২৫৪ | ৯০৮৮ | ৯৩৯৯ | ৪৬.৩ | ||||
ব্রহ্ম রাজপুর ৪৭ | ৫৭১২ | ১০৯৪৫ | ১০৯৯১ | ৫১.১ | ||||
ভোমরা ৪০ | ৭২৪৮ | ১৩১০৫ | ১২৯১৫ | ৫১.৪ | ||||
লাবসা ৮১ | ৫৫৬৩ | ১৬১৮৯ | ১৬০৫৪ | ৬৬.৩ | ||||
শিবপুর ৯৪ | ৬১১৪ | ৯৪৫৩ | ৯২৫২ | ৫৪.১ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ সুলতানপুর শাহী মসজিদ, জমিদার বাড়ি জামে মসজিদ (লাবসা) ও চম্পা মায়ের মাযার, বৈকারী শাহী মসজিদ ও হোজরাখানা (১৫৯৪ খ্রি.), ঝাউডাঙ্গা তহসীল অফিস ও শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের মন্দির, ছয়ঘরিয়া জোড়া শিব মন্দির, সাতক্ষীরা পঞ্চমন্দির (অন্নণপূর্ণা মন্দির, কালীমন্দির, শিবমন্দির, কালভৈরব মন্দির ও রাধা-গোবিন্দ মন্দির)।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ পাকসেনাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ১৮ এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধারা ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান থেকে অর্থ লুট করে বাংলাদেশ সরকারের নামে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকে জমা রাখে। ২০ এপ্রিল পাকবাহিনী সাতক্ষীরায় প্রবেশ করার সময় ঝাউডাঙ্গাতে গণহত্যা চালায়। ২১ এপ্রিল পাকবাহিনী সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শরণার্থী শিবিরে ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় গণহত্যা চালালে প্রায় দুই শতাধিক লোক নিহত হয়। ২৯ এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধা ও পাকসেনাদের মধ্যে উপজেলার ভোমরায় সংগঠিত এক লড়াইয়ে চারজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং বহু সংখ্যক পাকসেনা নিহত হয়। ১৭ জুলাই মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলার বৈকারী ক্যাম্পে আক্রমণ চালিয়ে সাতজন পাকসেনাকে হত্যা করে। উপজেলায় সাতক্ষীরা সরকারি স্কুলের পেছনে দীনেশ কর্মকারের বাড়ি ও সংলগ্ন পুকুর, বাঁকাল এবং গাঙ্গনী ব্রিজ এলাকায় ৩টি বধ্যভূমি রয়েছে; সাতক্ষীরা সদরে ১টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।
বিস্তারিত দেখুন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১০।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৯৬, মন্দির ১৭, গির্জা ২, মাযার ৩। উলেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: সুলতানপুর শাহী মসজিদ, চম্পা মায়ের মাযার, পুরাতন সাতক্ষীরা কালীমন্দির, ব্রহ্মরাজপুর কাল ভৈরব মন্দির।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৬.৫%; পুরুষ ৫৯.৮%, মহিলা ৫৩.২%। হোমিওপ্যাথিক কলেজ ১, ল’কলেজ ১, কলেজ ১১, পিটিআই ১, ভোকেশনাল ট্রে্নিং ইনস্টিটিউট ১, বেসরকারি কারিগরি বিদ্যালয় ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৭২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ২৮৮, কিন্ডার গার্টেন ১১, মাদ্রা্সা ৪৮। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ, সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজ, সাতক্ষীরা ডে-নাইট কলেজ, সাতক্ষীরা সিটি কলেজ, পল্লীমঙ্গল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সাতক্ষীরা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, সাতক্ষীরা প্রাণনাথ মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৮৪৬), সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়, সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নাবরুণ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৯), পলাশপোল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, পিএনপি কলেজিয়েট স্কুল (১৮৪৬), জিএন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮১৮), সাতক্ষীরা আলিয়া কামিল মাদ্রাসা (১৯২৮), আহছানিয়া আলিম মাদ্রাসা, ঝাউডাঙ্গা ফাজিল মাদ্রাসা।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক: কাফেলা, পত্রদূত, সাতক্ষীরা চিত্র; সাপ্তাহিক: দখিনায়ন, সাতক্ষীরা ডাইজেষ্ট, সহযাত্রী, আজকের সাতক্ষীরা; পাক্ষিক: অন্বেষণ (অবলুপ্ত); মাসিক: ছড়ার ডাক; ত্রৈমাসিক: ঈক্ষণ, দখিনের জানালা, সৌম্য; অবলুপ্ত সাময়িকী: মসজিদ (১৯১৭), আনন্দময়ী (১৯২৬), কোরক (১৯৬২)। এ ছাড়া ১৯৬৫ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত সময়কালে প্রায় তিন শতাধিক সাহিত্য সংকলন (লিটল ম্যাগ) প্রকাশিত হয়েছে।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৫, ক্লাব ৩১, মহিলা সংগঠন ৫, শিল্পকলা একাডেমী ১, নাট্যমঞ্চ ১, নাট্যদল ২১, যাত্রাপার্টি ৩, সার্কাস দল ১, সিনেমা হল ৩।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৬.৮৯%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৫৫%, শিল্প ১.০৮%, ব্যবসা ১৫.৫৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৪.৫৬%, চাকরি ৭.৮৫%, নির্মাণ ১.৩৯%, ধর্মীয় সেবা ০.২২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৪৬% এবং অন্যান্য ৮.৪৩%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৪৯.৯৪%, ভূমিহীন ৫০.০৬%। শহরে ৩৪.৭৪% এবং গ্রামে ৫৪.২৪% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, আখ, সরিষা, আলু, ডাল, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি আউশ, বোরো ধান।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, জাম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, নারিকেল, কুল, লিচু, জামরুল, পেয়ারা, সফেদা, তাল, লেবু।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ১০৬৮, গবাদিপশু ২০, হাঁস-মুরগি ১৫০।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৩৭২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৬২, কাঁচারাস্তা ৪২০ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, মহিষ ও গরুর গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা বস্ত্রকল, বরফকল, ময়দাকল, বিস্কুট কারখানা, মৎস্য প্রক্রিয়াজাত কারখানা, চামড়াজাত শিল্প, হিমাগার।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, তাতঁশিল্প, মৃৎশিল্প, দারুশিল্প, মাদুর শিল্প, বাঁশের কাজ, পাটের কাজ, সেলাই কাজ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৬৭, মেলা ৭। আবাদের হাট, ব্যাংদহা হাট, ঝাউডাঙ্গা বাজার, সুলতানপুর বাজার এবং পলাশপোলের গুড়পুকুরের মেলা, ভৈরব মেলা, রাখাল মেলা, চৈত্র সংক্রান্তির মেলা ও রথের মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য চিংড়ি, সুতা, হস্তশিল্পজাত দ্রব্যসামগ্রী, কুল, ধান, চাল।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫৮.৩% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৮৩.১%, ট্যাপ ১৪.৩% এবং অন্যান্য ২.৬%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫৪.৫% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪১.৮% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে । ৩.৭% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র জেলা সদর হাসপাতাল ১, শিশু হাসপাতাল ১, ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতাল ১, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১৪, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ১, ক্লিনিক ২৫।
এনজিও ব্র্যাক, কেয়ার, বাংলাদেশ ভিশন, কারিতাস, আশা, ওয়ার্ল্ড ভিশন। [তৃপ্তি মোহন মল্লিক]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; সাতক্ষীরা সদর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।