ডিপথেরিয়া টক্সিন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
("'''ডিপথেরিয়া টক্সিন''' (Diphtheria Toxin) ডিপথেরিয়া নাক ও কণ্ঠনালীর..." দিয়ে পাতা তৈরি) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
'''ডিপথেরিয়া টক্সিন''' (Diphtheria Toxin) ডিপথেরিয়া নাক ও কণ্ঠনালীর মারাত্মক সংক্রমণ, যা বেশিরভাগই বিষাক্ত ''Corynebacterium diphtheriae'' ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়। অনুরূপ অসুস্থতা মাঝে মাঝে ''Corynebacterium ulcerans'' দ্বারা এবং খুব কমই ''Corynebacterium pseudotuberculosis'' ব্যাকটেরিয়া দ্বারা হতে পারে। ''C. diphtheriae'' সাধারণত শুধুমাত্র মানুষ, গবাদিপশু এবং ঘোড়ার উর্ধ্ব শ্বাসতন্ত্রে পাওয়া যায়। ১৬১৩ সালে স্পেনে ডিপথেরিয়ার প্রথম মহামারী দেখা দেয় এবং পিঁয়েরে ব্রিতোনেউ (Pierre Bretonneau) ১৮২৬ সালে রোগটির নামকরণ করেন ডিপথেরিয়া। এডউইন ক্লেবস ১৮৮৩ সালে রোগ সৃষ্টিকারী এই ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করেন এবং ১৮৮৪ সালে ফ্রেডরিখ লোফলার প্রথম এই ব্যাকটেরিয়া কালচার (আবাদ) করেন এবং বিষাক্ত পদার্থ (এক্সোটক্সিন) উৎপাদনের প্রমাণ দেন। ১৯১৮ সালে ঘোড়ার মল থেকে বিজ্ঞানী d'Herelle প্রথম ডিপথেরিয়া এক্সোটক্সিনের জিন 'tox' আলাদা করেন, ব্যাকটেরিয়ার অযৌন প্রজননের সময়ে ‘corynephage’ থেকে এই 'tox' জিন ব্যাকটেরিয়ার জিনোমে প্রবেশ করে। ডিপথেরিয়া সাধারণত একটি তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ, যা গলায় শক্তভাবে লেগে থাকা সিউডোমেমব্রেন দ্বারা চিহ্নিত করা হয়, তবে ত্বকের সংক্রমণও হতে পারে। শরীরের কোনো তন্ত্রের ক্ষতিসাধন, যেমন- মায়োকার্ডাইটিস (হৃদযন্ত্রের সমস্যা) এবং নিউরোপ্যাথি (স্নায়ুতন্ত্রে সমস্যা) ডিপথেরিয়া টক্সিনের কারণে হয়। এই এক্সোটক্সিনটি ৬২ কিলো ডাল্টনের একক পলিপেপটাইড হিসাবে সংশ্লেষিত হয়। এই এক্সোটক্সিন প্রোটিন সংশ্লেষণকে বাধা দেয় এবং কোষের মৃত্যু ঘটায়। সাধারণত ''Corynebacterium'' spp. এর ব্যাকটেরিয়া কালচার করে রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুকে আলাদা করে ক্লিনিক্যালি রোগ নির্ণয় করা হয়। এই রোগ নির্ণয় এনজাইমেটিক এবং টক্সিন সনাক্তকরণ পরীক্ষা দ্বারাও করা যেতে পারে। সময় মত ডিপথেরিয়া অ্যান্টিটক্সিন শরীরে প্রবেশ করানো এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল থেরাপির মাধ্যমে ডিপথেরিয়ার চিকিৎসা করা যেতে পারে। এশিয়া এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে এখনও হাজার হাজার ডিপথেরিয়া আক্রান্তের ঘটনা বার্ষিক রিপোর্ট করা হয়। এই রোগের বিস্তার প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। [এ.কে.এম মাহবুব হাসান] | '''ডিপথেরিয়া টক্সিন''' (Diphtheria Toxin) ডিপথেরিয়া নাক ও কণ্ঠনালীর মারাত্মক সংক্রমণ, যা বেশিরভাগই বিষাক্ত ''Corynebacterium diphtheriae'' ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়। অনুরূপ অসুস্থতা মাঝে মাঝে ''Corynebacterium ulcerans'' দ্বারা এবং খুব কমই ''Corynebacterium pseudotuberculosis'' ব্যাকটেরিয়া দ্বারা হতে পারে। ''C. diphtheriae'' সাধারণত শুধুমাত্র মানুষ, গবাদিপশু এবং ঘোড়ার উর্ধ্ব শ্বাসতন্ত্রে পাওয়া যায়। ১৬১৩ সালে স্পেনে ডিপথেরিয়ার প্রথম মহামারী দেখা দেয় এবং পিঁয়েরে ব্রিতোনেউ (Pierre Bretonneau) ১৮২৬ সালে রোগটির নামকরণ করেন ডিপথেরিয়া। এডউইন ক্লেবস ১৮৮৩ সালে রোগ সৃষ্টিকারী এই ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করেন এবং ১৮৮৪ সালে ফ্রেডরিখ লোফলার প্রথম এই ব্যাকটেরিয়া কালচার (আবাদ) করেন এবং বিষাক্ত পদার্থ (এক্সোটক্সিন) উৎপাদনের প্রমাণ দেন। ১৯১৮ সালে ঘোড়ার মল থেকে বিজ্ঞানী d'Herelle প্রথম ডিপথেরিয়া এক্সোটক্সিনের জিন 'tox' আলাদা করেন, ব্যাকটেরিয়ার অযৌন প্রজননের সময়ে ‘corynephage’ থেকে এই 'tox' জিন ব্যাকটেরিয়ার জিনোমে প্রবেশ করে। ডিপথেরিয়া সাধারণত একটি তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ, যা গলায় শক্তভাবে লেগে থাকা সিউডোমেমব্রেন দ্বারা চিহ্নিত করা হয়, তবে ত্বকের সংক্রমণও হতে পারে। শরীরের কোনো তন্ত্রের ক্ষতিসাধন, যেমন- মায়োকার্ডাইটিস (হৃদযন্ত্রের সমস্যা) এবং নিউরোপ্যাথি (স্নায়ুতন্ত্রে সমস্যা) ডিপথেরিয়া টক্সিনের কারণে হয়। এই এক্সোটক্সিনটি ৬২ কিলো ডাল্টনের একক পলিপেপটাইড হিসাবে সংশ্লেষিত হয়। এই এক্সোটক্সিন প্রোটিন সংশ্লেষণকে বাধা দেয় এবং কোষের মৃত্যু ঘটায়। সাধারণত ''Corynebacterium'' spp. এর ব্যাকটেরিয়া কালচার করে রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুকে আলাদা করে ক্লিনিক্যালি রোগ নির্ণয় করা হয়। এই রোগ নির্ণয় এনজাইমেটিক এবং টক্সিন সনাক্তকরণ পরীক্ষা দ্বারাও করা যেতে পারে। সময় মত ডিপথেরিয়া অ্যান্টিটক্সিন শরীরে প্রবেশ করানো এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল থেরাপির মাধ্যমে ডিপথেরিয়ার চিকিৎসা করা যেতে পারে। এশিয়া এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে এখনও হাজার হাজার ডিপথেরিয়া আক্রান্তের ঘটনা বার্ষিক রিপোর্ট করা হয়। এই রোগের বিস্তার প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। [এ.কে.এম মাহবুব হাসান] | ||
[[ | [[en: Diphtheria Toxin]] |
০৫:৪১, ১৭ জুলাই ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
ডিপথেরিয়া টক্সিন (Diphtheria Toxin) ডিপথেরিয়া নাক ও কণ্ঠনালীর মারাত্মক সংক্রমণ, যা বেশিরভাগই বিষাক্ত Corynebacterium diphtheriae ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়। অনুরূপ অসুস্থতা মাঝে মাঝে Corynebacterium ulcerans দ্বারা এবং খুব কমই Corynebacterium pseudotuberculosis ব্যাকটেরিয়া দ্বারা হতে পারে। C. diphtheriae সাধারণত শুধুমাত্র মানুষ, গবাদিপশু এবং ঘোড়ার উর্ধ্ব শ্বাসতন্ত্রে পাওয়া যায়। ১৬১৩ সালে স্পেনে ডিপথেরিয়ার প্রথম মহামারী দেখা দেয় এবং পিঁয়েরে ব্রিতোনেউ (Pierre Bretonneau) ১৮২৬ সালে রোগটির নামকরণ করেন ডিপথেরিয়া। এডউইন ক্লেবস ১৮৮৩ সালে রোগ সৃষ্টিকারী এই ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করেন এবং ১৮৮৪ সালে ফ্রেডরিখ লোফলার প্রথম এই ব্যাকটেরিয়া কালচার (আবাদ) করেন এবং বিষাক্ত পদার্থ (এক্সোটক্সিন) উৎপাদনের প্রমাণ দেন। ১৯১৮ সালে ঘোড়ার মল থেকে বিজ্ঞানী d'Herelle প্রথম ডিপথেরিয়া এক্সোটক্সিনের জিন 'tox' আলাদা করেন, ব্যাকটেরিয়ার অযৌন প্রজননের সময়ে ‘corynephage’ থেকে এই 'tox' জিন ব্যাকটেরিয়ার জিনোমে প্রবেশ করে। ডিপথেরিয়া সাধারণত একটি তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ, যা গলায় শক্তভাবে লেগে থাকা সিউডোমেমব্রেন দ্বারা চিহ্নিত করা হয়, তবে ত্বকের সংক্রমণও হতে পারে। শরীরের কোনো তন্ত্রের ক্ষতিসাধন, যেমন- মায়োকার্ডাইটিস (হৃদযন্ত্রের সমস্যা) এবং নিউরোপ্যাথি (স্নায়ুতন্ত্রে সমস্যা) ডিপথেরিয়া টক্সিনের কারণে হয়। এই এক্সোটক্সিনটি ৬২ কিলো ডাল্টনের একক পলিপেপটাইড হিসাবে সংশ্লেষিত হয়। এই এক্সোটক্সিন প্রোটিন সংশ্লেষণকে বাধা দেয় এবং কোষের মৃত্যু ঘটায়। সাধারণত Corynebacterium spp. এর ব্যাকটেরিয়া কালচার করে রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুকে আলাদা করে ক্লিনিক্যালি রোগ নির্ণয় করা হয়। এই রোগ নির্ণয় এনজাইমেটিক এবং টক্সিন সনাক্তকরণ পরীক্ষা দ্বারাও করা যেতে পারে। সময় মত ডিপথেরিয়া অ্যান্টিটক্সিন শরীরে প্রবেশ করানো এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল থেরাপির মাধ্যমে ডিপথেরিয়ার চিকিৎসা করা যেতে পারে। এশিয়া এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে এখনও হাজার হাজার ডিপথেরিয়া আক্রান্তের ঘটনা বার্ষিক রিপোর্ট করা হয়। এই রোগের বিস্তার প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। [এ.কে.এম মাহবুব হাসান]