আশা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''আশা''' একটি বেসরকারি | '''আশা''' একটি [[বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা|বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা]]। পুরো নাম অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট। সমাজের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সহায়তার লক্ষ্যে মোঃ সফিকুল হক চৌধুরী কর্তৃক ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত। আশা দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে সমাজের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণে উৎসাহ যোগায় এবং এ লক্ষ্যে তাদের সংগঠিত করে। ১৯৭৮-১৯৮৫ সালে আশা দরিদ্র মানুষের জন্য বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড সম্পাদন করে, আইনি সহায়তা প্রদান করে ও সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করে, সাংবাদিক প্রশিক্ষণের আয়োজন করে এবং দারিদ্র্য বিমোচনে কাজ করে। ১৯৮৫-১৯৯১ সালে সংস্থাটি শিক্ষা, ঋণদান, ক্ষুদ্র কৃষি, নারী উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা ও প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করে। আশা গৃহীত কর্মসূচির সুফল ভোগ করছে বাংলাদেশের প্রায় ৭০ লাখ মানুষ। পাশাপাশি বিশ্বের ১৩টি দেশের ২৫ লাখ মানুষকে [[দারিদ্র্য|দারিদ্র্য]] নিরসনে আশা কারিগরি ও জ্ঞানগত সহায়তা দিচ্ছে। ২০২০-২১ করবর্ষে ব্যক্তি-সংঘ খাতে আশা ১ম (সর্বোচ্চ) করদাতা নির্বাচিত হয়েছে। | ||
বর্তমানে আশা [[ক্ষুদ্রঋণ|ক্ষুদ্রঋণ]] কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রাম ও শহরের দরিদ্র নারীদের উন্নয়নে কাজ করে। এছাড়া আশা সদস্যদের ছোপ ছোট সঞ্চয়, ইন্সিওরেন্স এবং চিকিৎসা অনুদান কার্যক্রম পরিচালনা করে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের উদ্যোক্তাদের সহায়তা প্রদানের জন্য আশা ২০১৭ সালে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ইঞ্জিন হিসেবে বিবেচনা করে এমএসএমই নামে একটি প্রোগ্রাম চালু করেছিল। | |||
আশা’র ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিলের উৎস হচ্ছে সংস্থার নিজস্ব অর্থ, সদস্যদের সঞ্চয় এবং পল্লী কর্মসংস্থান ফাউন্ডেশনের ঋণ। বর্তমানে বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় আশা’র ব্রাঞ্চ অফিস | সংস্থাটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকায় অবস্থিত এবং দেশব্যাপী এর শাখা বিস্তৃত। কেন্দ্র ও মাঠ পর্যায়ের মধ্যে সংযোগ রক্ষার জন্য দুজন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা হলেন ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার ও রিজিওনাল ম্যানেজার। ব্রাঞ্চ অফিসেই চলে দলগঠন, সদস্যদের সঞ্চয় গ্রহণ ও ঋণ বিতরণ কার্যক্রম। প্রতিটি ব্রাঞ্চ অফিসে একজন ব্রাঞ্চ অফিসার ও গড়ে চারজন লোন অফিসার কাজ করেন। একজন লোন অফিসার সাধারণত ১৮টি দলের দায়িত্বে থাকেন। প্রতিটি দলে গড়ে ২০ জন সদস্য থাকেন। আশা’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ২৫৬ জন কর্মী কাজ করেন। সংস্থাটির সর্বোচ্চ কর্মকর্তা হচ্ছেন প্রেসিডেন্ট। তাঁকে সহায়তা করার জন্য রয়েছেন চারজন এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং বেশ কয়েকজন ডাইরেক্টর। | ||
আশা’র ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিলের উৎস হচ্ছে সংস্থার নিজস্ব অর্থ, সদস্যদের সঞ্চয় এবং পল্লী কর্মসংস্থান ফাউন্ডেশনের ঋণ। বর্তমানে বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় আশা’র ব্রাঞ্চ অফিস ৩০৭৩টি, কর্মী ২৪ হাজার এবং গ্রাহক সংখ্যা ৬.৩ মিলিয়ন। আশা ২০০৯ সালে হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাটে একটি প্রবীণ নিবাস প্রতিষ্ঠা করেছে এবং সর্বস্তরের মানুষকে চিকিৎসা সেবা, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও রেমিট্যান্স সেবা প্রদান করার জন্য একটি কমপ্লেক্স গড়ে তুলেছে। | |||
আশা ২০০৭ সালে বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও বাস্তবায়নে ‘আশা ইন্টারন্যাশনাল’ নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করে। ‘আশা ইন্টারন্যাশনাল’ মরিশাসে রেজিস্ট্রিকৃত। সিএমআই নামে নেদারল্যান্ডভিত্তিক ইক্যুইটি সংস্থা আশা ইন্টারন্যাশনালকে তহবিল সরবরাহ করছে। বর্তমানে আশা ইন্টারন্যাশনাল ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, আফগানিস্তান, ফিলিপাইন, নাইজেরিয়া, ঘানা ও কম্বোডিয়ায় ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আশা ২০০৭ সালে দরিদ্র ও নিম্নআয়ের পরিবারের ছেলেমেয়েদের স্বল্পখরচে উচ্চশিক্ষার সুযোগদানের জন্য আশা ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে। বর্তমানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে চার হাজারেরও বেশি ছাত্রছাত্রী আশা ইউনিভার্সিটিতে পড়াশুনা করছে। [শামসুল হুদা] | আশা ২০০৭ সালে বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও বাস্তবায়নে ‘আশা ইন্টারন্যাশনাল’ নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করে। ‘আশা ইন্টারন্যাশনাল’ মরিশাসে রেজিস্ট্রিকৃত। সিএমআই নামে নেদারল্যান্ডভিত্তিক ইক্যুইটি সংস্থা আশা ইন্টারন্যাশনালকে তহবিল সরবরাহ করছে। বর্তমানে আশা ইন্টারন্যাশনাল ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, আফগানিস্তান, ফিলিপাইন, নাইজেরিয়া, ঘানা ও কম্বোডিয়ায় ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আশা ২০০৭ সালে দরিদ্র ও নিম্নআয়ের পরিবারের ছেলেমেয়েদের স্বল্পখরচে উচ্চশিক্ষার সুযোগদানের জন্য আশা ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে। বর্তমানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে চার হাজারেরও বেশি ছাত্রছাত্রী আশা ইউনিভার্সিটিতে পড়াশুনা করছে। [শামসুল হুদা] | ||
[[en:ASA]] | [[en:ASA]] |
০৬:২২, ৭ জুন ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
আশা একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। পুরো নাম অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট। সমাজের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সহায়তার লক্ষ্যে মোঃ সফিকুল হক চৌধুরী কর্তৃক ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত। আশা দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে সমাজের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণে উৎসাহ যোগায় এবং এ লক্ষ্যে তাদের সংগঠিত করে। ১৯৭৮-১৯৮৫ সালে আশা দরিদ্র মানুষের জন্য বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড সম্পাদন করে, আইনি সহায়তা প্রদান করে ও সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করে, সাংবাদিক প্রশিক্ষণের আয়োজন করে এবং দারিদ্র্য বিমোচনে কাজ করে। ১৯৮৫-১৯৯১ সালে সংস্থাটি শিক্ষা, ঋণদান, ক্ষুদ্র কৃষি, নারী উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা ও প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করে। আশা গৃহীত কর্মসূচির সুফল ভোগ করছে বাংলাদেশের প্রায় ৭০ লাখ মানুষ। পাশাপাশি বিশ্বের ১৩টি দেশের ২৫ লাখ মানুষকে দারিদ্র্য নিরসনে আশা কারিগরি ও জ্ঞানগত সহায়তা দিচ্ছে। ২০২০-২১ করবর্ষে ব্যক্তি-সংঘ খাতে আশা ১ম (সর্বোচ্চ) করদাতা নির্বাচিত হয়েছে।
বর্তমানে আশা ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রাম ও শহরের দরিদ্র নারীদের উন্নয়নে কাজ করে। এছাড়া আশা সদস্যদের ছোপ ছোট সঞ্চয়, ইন্সিওরেন্স এবং চিকিৎসা অনুদান কার্যক্রম পরিচালনা করে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের উদ্যোক্তাদের সহায়তা প্রদানের জন্য আশা ২০১৭ সালে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ইঞ্জিন হিসেবে বিবেচনা করে এমএসএমই নামে একটি প্রোগ্রাম চালু করেছিল।
সংস্থাটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকায় অবস্থিত এবং দেশব্যাপী এর শাখা বিস্তৃত। কেন্দ্র ও মাঠ পর্যায়ের মধ্যে সংযোগ রক্ষার জন্য দুজন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা হলেন ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার ও রিজিওনাল ম্যানেজার। ব্রাঞ্চ অফিসেই চলে দলগঠন, সদস্যদের সঞ্চয় গ্রহণ ও ঋণ বিতরণ কার্যক্রম। প্রতিটি ব্রাঞ্চ অফিসে একজন ব্রাঞ্চ অফিসার ও গড়ে চারজন লোন অফিসার কাজ করেন। একজন লোন অফিসার সাধারণত ১৮টি দলের দায়িত্বে থাকেন। প্রতিটি দলে গড়ে ২০ জন সদস্য থাকেন। আশা’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ২৫৬ জন কর্মী কাজ করেন। সংস্থাটির সর্বোচ্চ কর্মকর্তা হচ্ছেন প্রেসিডেন্ট। তাঁকে সহায়তা করার জন্য রয়েছেন চারজন এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং বেশ কয়েকজন ডাইরেক্টর।
আশা’র ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিলের উৎস হচ্ছে সংস্থার নিজস্ব অর্থ, সদস্যদের সঞ্চয় এবং পল্লী কর্মসংস্থান ফাউন্ডেশনের ঋণ। বর্তমানে বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় আশা’র ব্রাঞ্চ অফিস ৩০৭৩টি, কর্মী ২৪ হাজার এবং গ্রাহক সংখ্যা ৬.৩ মিলিয়ন। আশা ২০০৯ সালে হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাটে একটি প্রবীণ নিবাস প্রতিষ্ঠা করেছে এবং সর্বস্তরের মানুষকে চিকিৎসা সেবা, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও রেমিট্যান্স সেবা প্রদান করার জন্য একটি কমপ্লেক্স গড়ে তুলেছে।
আশা ২০০৭ সালে বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও বাস্তবায়নে ‘আশা ইন্টারন্যাশনাল’ নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করে। ‘আশা ইন্টারন্যাশনাল’ মরিশাসে রেজিস্ট্রিকৃত। সিএমআই নামে নেদারল্যান্ডভিত্তিক ইক্যুইটি সংস্থা আশা ইন্টারন্যাশনালকে তহবিল সরবরাহ করছে। বর্তমানে আশা ইন্টারন্যাশনাল ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, আফগানিস্তান, ফিলিপাইন, নাইজেরিয়া, ঘানা ও কম্বোডিয়ায় ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আশা ২০০৭ সালে দরিদ্র ও নিম্নআয়ের পরিবারের ছেলেমেয়েদের স্বল্পখরচে উচ্চশিক্ষার সুযোগদানের জন্য আশা ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে। বর্তমানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে চার হাজারেরও বেশি ছাত্রছাত্রী আশা ইউনিভার্সিটিতে পড়াশুনা করছে। [শামসুল হুদা]